Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বাবা-মায়ের কাছে মেয়েকে রাখার নির্দেশ

বাঁকুড়ার সানবাঁধা এলাকার প্রিয়া পরামাণিক ২০১৭ সালে এক সঙ্গে তিন শিশুকন্যার জন্ম দেন। জন্মের পরেই একটি শিশুর মৃত্যু হয়। একটি শিশুর তালু কাটা ছিল। তাঁর দাবি, বিনামূল্যে অস্ত্রোপচারের কথা বলে বারাসাতের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে এক দম্পতি শিশুটিকে নিয়ে যান।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২০ ০৩:১৯
Share: Save:

শিশুকন্যাকে প্রকৃত মা-বাবার কাছে পাঠানোর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
বাঁকুড়ার সানবাঁধা এলাকার প্রিয়া পরামাণিক ২০১৭ সালে এক সঙ্গে তিন শিশুকন্যার জন্ম দেন। জন্মের পরেই একটি শিশুর মৃত্যু হয়। একটি শিশুর তালু কাটা ছিল। তাঁর দাবি, বিনামূল্যে অস্ত্রোপচারের কথা বলে বারাসাতের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে এক দম্পতি শিশুটিকে নিয়ে যান। অভিযোগ, তার পরে শিশুটিকে আর ফেরানো হয়নি। দেখা করতে দেওয়া হয়নি মা-বাবার সঙ্গে।
২০১৯ সালের জুলাইয়ে প্রিয়াদেবী মেয়েকে ফিরে পেতে চেয়ে জেলা শিশুকল্যাণ কমিটির দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু কমিটির তরফে শিশুটিকে তার বাবা-মায়ের বদলে অস্ত্রোপচারের জন্য নিয়ে যাওয়া ওই দম্পতির কাছেই রাখার নির্দেশ
দেওয়া হয়।
ওই নির্দেশে বিতর্ক বাড়ে। প্রিয়াদেবী মেয়েকে ফিরে পেতে চেয়ে বাঁকুড়ার জেলাশাসকের দ্বারস্থ হন। তৎকালীন জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস শিশুটিকে তার বাবা-মায়ের কাছে দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
সেই নির্দেশের বেশ কয়েকমাস পরে বাচ্চাটিকে প্রিয়াদেবীদের হাতে তুলে দিলেও ফিরে পেতে চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই দম্পতি। সেই মামলার বিচার চলছিল। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বেঞ্চ রায় দেয়। প্রিয়াদেবীদের পক্ষের আইনজীবী সায়ন্তী সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আদালত ওই শিশুকে তার বাবা-মায়ের কাছেই রাখার নির্দেশ দিয়েছে। শিশুটির উপরে বারাসতের ওই দম্পতির সমস্ত ধরনের অধিকারের দাবি খারিজ করা হয়েছে।’’ শিশুর বাবা-মায়ের তরফে আইনি সহায়তা দেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘ওই দুঃস্থ পরিবারের দুর্বলতার সুযোগে শিশুটিকে হেফাজতে রেখে দেওয়া হয়েছিল। তাই ওই পরিবারকে যত দূর সম্ভব আইনি সহায়তা দিয়েছি।’’
পক্ষান্তরে, বারাসতের ওই দম্পতির পক্ষের আইনজীবী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার মক্কেল এবং তাঁদের সংস্থার বিরুদ্ধে শিশু পাচারের যে অভিযোগ তোলা হয়েছিল তা নস্যাৎ করা হয়েছে। তবে আইন অনুযায়ীই বিচারপতি শিশুটিকে তার বাবা-মায়ের কাছে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাব কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।’’
প্রিয়াদেবী বলেন, ‘‘মেয়েকে ফিরে পাওয়ার যে লড়াই শুরু করেছিলাম, আজ তার বৃত্ত সম্পূর্ণ হল। আদালতের রায়ে আমরা খুশি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

surgery calcutta highcourt
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE