E-Paper

দুই জমি কারবারির বাড়িতে সিবিআই

এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ সিবিআইয়ের ৮-১০ জনের একটি দল আসে নিতুড়িয়ার সড়বড়ি গ্রামে। প্রথমে সৈকত দে-র বাড়িতে তারা যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:৪৫
সিউড়ির কালীপুরের এই বাড়িতে আসে সিবিআই।

সিউড়ির কালীপুরের এই বাড়িতে আসে সিবিআই। —নিজস্ব চিত্র।

কয়লা পাচারের টাকা কি জমি কেনাবেচাতেও ব্যবহার করা হয়েছে? পুরুলিয়ার নিতুড়িয়ার দুই জমি কারবারির বাড়িতে বৃহস্পতিবার সিবিআই-এর তল্লাশি সেই জল্পনা উস্কে দিয়েছে।

রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার সঙ্গে একযোগে এ দিন পুরুলিয়ার নিতুড়িয়া থানার সড়বড়ি গ্রামে সৈকত দে ও সুপ্রদীপ মণ্ডল নামে দুই জমি কারবারির বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই। সৈকত সে বাড়িতে ছিলেন না, তাঁর ঘর সিল করে দেওয়া হয়। তল্লাশি চালানো হয় বীরভূমের সিউড়ি শহর লাগোয়া কড়িধ্যার কালীপুরে সৈকতের আর একটি বাড়িতে। সেখানে সৈকতকে না পেয়ে তার মায়ের হাতে নোটিস ধরান কেন্দ্রীয় সংস্থার গোয়েন্দারা। তবে সড়বড়ি থেকে সুপ্রদীপকে জেরা করার পরে সিবিআই আটক করে নিয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছে তাঁর পরিবার। সুপ্রদীপের বাবা ভোলানাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘ছেলে জমির ছোটখাটো কারবার করত। কেন ওকে সিবিআই আটক করল বুঝতে পারছি না। ওরাও কিছু জানাল না।’’

এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ সিবিআইয়ের ৮-১০ জনের একটি দল আসে নিতুড়িয়ার সড়বড়ি গ্রামে। প্রথমে সৈকত দে-র বাড়িতে তারা যায়। তাঁর কাকিমা পুতুল দে বলেন, ‘‘সৈকত বেশ কয়েকদিন ধরেই বাড়িতে নেই। ওঁরা নিজেদের সিবিআই অফিসার বলে পরিচয় দিয়ে ঘরে তল্লাশি শুরু করে। পৈতৃক বাড়ি ভাগাভাগির পরে যে ঘরটি সৈকতের ভাগে পড়েছিল, সেখানে খানাতল্লাশি চালিয়ে পরে ‘সিল’ করে দেয়।’’

সূত্রের দাবি, এ দিন সৈকত ছিলেন বীরভূমের কড়িধ্যার কালীপুরে। কিন্তু সিবিআই পৌঁছনোর আগেই তিনি সেখান থেকে সরে পড়েন। কালীপুরে কয়েক মাস আগে মেসোমশাইয়ের বাড়ির পাশেই নতুন বাড়ি বানান সৈকত। তবে তাঁরা কেউ সেখানে থাকতেন না। আজ, শুক্রবার সৈকতের মাসতুতো বোনের বিয়ে। সেই উপলক্ষে বুধবার রাতে কালীপুরের বাড়িতে আসেন সৈকত ও তাঁর মা। এ দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে সেই বাড়ি ঘিরে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে প্রায় সাড়ে চারটে পর্যন্ত তল্লাশি চালান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা।

সূত্রের দাবি, সড়বড়িতে সিবিআই হানা দিয়েছে জেনে আগেভাগে কেটে পড়েন সৈকত। তাঁর মা সুনন্দা দে-র হাতে নোটিস ধরিয়ে বিকেলে রাজনগর হয়ে বেরিয়ে যান সিবিআই অফিসারেরা। সুনন্দা বলেন, ‘‘আমার ছেলে জমি কেনাবেচার কাজ করে। সিবিআই তাঁকে খুঁজতে এসেছিল। না পেয়ে আমাকে নোটিস ধরিয়ে ছেলেকে দেখা করতে বলেছে।’’

সড়বড়িতে সৈকতের বাড়ি থেকে দু’শো মিটার দূরে সুপ্রদীপের বাড়িতে যায় সিবিআই। ওই যুবকের বাবা ভোলানাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘সিবিআই অফিসারের পরিচয় দিয়ে এক-দেড় ঘণ্টা ধরে বাড়িতে তল্লাশি চালান ওঁরা। ছেলেকে জেরা করেন। তারপরে ওকে আটক করে নিয়ে গেলেন।’’

সড়বড়ির বাসিন্দাদের দাবি, সৈকতের জমির কারবারের লেনদেনের হিসেব সুপ্রদীপ রাখতেন। কিন্তু এলাকায় সৈকত ও সুপ্রদীপের জীবনযাত্রা খুবই সাদামাটা। তাই সিবিআই-এর তল্লাশিতে কিছুটা অবাক অনেকে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সৈকতের বাড়ির অবস্থা খারাপ। ছাদ থেকে চাঙড় খসে পড়ছে। সুপ্রদীপের বাড়ির অবস্থাও মাঝারি মানের। এলাকায় দু’জনেই স্কুটার করেই ঘোরাঘুরি করেন। এলাকায় অবৈধ কয়লা কারবারিদের সঙ্গেও ওই দু’জনের ঘনিষ্ঠতা প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। তবে অনেকেই মনে করছেন, নিতুড়িয়া, আসানসোল এলাকার অবৈধ কয়লা কারবারীদের অবৈধ টাকা এলাকার জমি ব্যবসাতে বিনিয়োগ হয়ে থাকতে পারে। সেই কাজ এই দু’জনের মাধ্যমে হয়েছে কি না, হয়তো সেটাই যাচাই করতে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Coal Scam Suri

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy