Advertisement
E-Paper

ছাতনায় স্তন ক্যানসারের অস্ত্রোপচার

হাসপাতালের সুপার বিশ্বজিৎ দে বলেন, “সাফল্যের সঙ্গে দু’ঘণ্টার চেষ্টায় ওই মহিলার স্তন থেকে টিউমার বাদ দেওয়া গিয়েছে। ঝুঁকি ছিল। তবে অনেক ভেবেচিন্তে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।”

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২০ ০৩:৪৬
সহায়: আরতিদেবীর সঙ্গে চিকিৎসক অলিদেবী। নিজস্ব চিত্র

সহায়: আরতিদেবীর সঙ্গে চিকিৎসক অলিদেবী। নিজস্ব চিত্র

তেমন বড় মাপের অস্ত্রোপচার আগে হয়নি বাঁকুড়ার ছাতনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। তবে মঙ্গলবার সেখানে ক্যানসারে আক্রান্ত এক মহিলার স্তন থেকে বাদ দেওয়া হল টিউমার। সীমিত পরিকাঠামো নিয়ে অস্ত্রোপচার ‘সফল’ হওয়ায় খুশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতালের সুপার বিশ্বজিৎ দে বলেন, “সাফল্যের সঙ্গে দু’ঘণ্টার চেষ্টায় ওই মহিলার স্তন থেকে টিউমার বাদ দেওয়া গিয়েছে। ঝুঁকি ছিল। তবে অনেক ভেবেচিন্তে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।” অস্ত্রোপচারটি করেছেন শল্য চিকিৎসক অলি দাস অধিকারী। তাঁকে সাহায্য করেছেন হাসপাতালের অ্যানাস্থেটিস্ট মিতালি দত্ত ও কয়েকজন নার্স। ডাক্তারি পরিভাষায় ওই অস্ত্রোপচারের নাম ‘মডিফায়েড র্যাডিক্যাল ম্যাস্টেকটমি’।

অলিদেবী জানান, সপ্তাহ তিনেক আগে ছাতনার ঘোড়ামৌলির বাসিন্দা বছর পঁয়তাল্লিশের আরতি বাউরি বুকে যন্ত্রণা ও টিউমার নিয়ে ছাতনা সুপার স্পেশালিটিতে আসেন। নানা পরীক্ষার পরে জানা যায়, তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত। অলিদেবীর কথায়, ‘‘দ্রুত অস্ত্রোপচার করে ফেলা জরুরি ছিল। মহিলার পরিবার খুবই দুঃস্থ। লকডাউন-এ রোগীকে বাইরে নিয়ে যেতে, সমস্যা হত। অস্ত্রোপচারেও দেরি হত। আরতিদেবীর ছেলে সেটা চাননি। সফল ভাবে অস্ত্রোপচার করা গিয়েছে। আরতিদেবী এখন

ভাল আছেন।”

আরতিদেবীর ছেলে হারু বাউরি বলেন, “বাড়ি থেকে সাইকেলে মিনিট ১৫ গেলেই ছাতনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। লকডাউন-এ বাইরে যেতে হলে, মা সময়মতো চিকিৎসা পেতেন কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। বড় জায়গায় নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর ক্ষমতা নেই আমাদের। ডাক্তারদের উপরে ভরসা ছিল বলেই এখানে অস্ত্রোপচারের অনুরোধ করেছিলাম।’’

ছাতনা সুপার স্পেশালিটিতে ‘গলস্টোন’, ‘কিডনি স্টোন’, ‘হার্নিয়া’ বা ‘অ্যাপেন্ডিক্স’-এর অস্ত্রোপচার হয়ে থাকে। থাইরয়েড গ্রন্থি ও খাদ্যনালীর ছিদ্র ভরানোর মতো কিছু অস্ত্রোপচারও আগে হয়েছে। তবে ‘স্তন ক্যানসার’-এর মতো অস্ত্রোপচার এই প্রথম বলে সুপারের দাবি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এ ধরনের অস্ত্রোপচারে বিশেষ কিছু যন্ত্রপাতি প্রয়োজন। সেগুলি হাসপাতালে ছিল না। বিষয়টি সুপারকে জানানো হয়। প্রয়োজনীয় যন্ত্র কেনা হয়। অস্ত্রোপচার যাতে নিখুঁত ভাবে হয়, সে জন্য বাঁকুড়া মেডিক্যালের ডাক্তারদের সঙ্গেও আলোচনা করা হয়। দু’সপ্তাহের লাগাতার প্রস্তুতির পরে, সোমবার আরতিদেবীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতালে ‘আইসিইউ’ (ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট) ও ব্লাডব্যাঙ্ক রয়েছে বলে অস্ত্রোপচারের সম্মতি দেওয়ায় সুবিধা হয়েছে বলে সুপার জানান।

গত কয়েক বছরে সীমিত পরিকাঠামো নিয়ে একের পরে এক জটিল অস্ত্রোপচার করেছেন বাঁকুড়া মেডিক্যালের শল্য চিকিৎসকেরা। মেডিক্যালের শল্যচিকিৎসা বিভাগের প্রধান উৎপল দে বলেন, “পরিকাঠামো সীমিত হলেও, দায়িত্ব নিয়ে অস্ত্রোপচার সফল করেছে ছাতনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। এই সাফল্য অন্য হাসপাতালগুলিকে অনুপ্রেরণা জোগাবে।” তাঁর সংযোজন: “লকডাউন চলাকালীন রোগীদের নিজের এলাকাতেই এ ধরনের পরিষেবা দেওয়া গেলে, তার চেয়ে ভাল আর কিছু হতে পারে না।”

Chhatna Breast Cancer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy