ফাইল চিত্র
কর্মবিরতির পথে না গিয়ে বিচারকের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আইনজীবীদের সমস্যা মেটানোর নিদান দিয়ে গেলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য। শনিবার বাঁকুড়ায় ন’তলার নতুন আদালত ভবনের শিলান্যাস করতে এসে এই পরামর্শ দেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, “কোনও সমস্যা হলে কর্মবিরতিতে না গিয়ে বিচারকের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই সমাধানের চেষ্টা করা উচিত। কর্মবিরতিতে কারও লাভ হয় না, সমস্যা মেটে আলোচনার মাধ্যমেই।”
বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর ও খাতড়া— জেলার তিনটি আদালতেই নানা বিষয় নিয়ে বছরে দু’-এক বার আইনজীবীদের কর্মবিরতি করতে দেখা যায়। সেই কর্মবিরতি কখনও কয়েক সপ্তাহ, কখনও আবার মাসব্যাপী চলে। চলতি বছরেই গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষ হওয়ার পরেই বাঁকুড়া ও খাতড়া আদালতে সপ্তাহ খানেকের কর্মবিরতি শুরু করেন আইনজীবীরা। আবার বিষ্ণুপুরের নতুন আদালত ভবনে বসতে দেওয়া-সহ কিছু দাবিদাওয়া নিয়ে মাস দুয়েক আগে এক মাসের কর্মবিরতি করেছিল সেখানকার বার অ্যাসোসিয়েশন। টানা কর্মবিরতিতে সমস্যায় পড়েন বিচারপ্রার্থীরা। মামলাগুলিও দীর্ঘায়িত হতে থাকে। এ নিয়ে বিচারপ্রার্থীরা নানা সময়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কিন্তু, তাঁদের অভিযোগ, বছরের পর বছর নানা কারণ দেখিয়ে মূলত গরম কালে আইনজীবীরা জোট বেঁধে টানা কর্মবিরতিতে যান।
এ দিন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কর্মবিরতিতে না যাওয়ার পরামর্শের পরে আইনজীবীরা কী বলছেন? বাঁকুড়া জেলা অ্যাডভোকেট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তাপস চৌধুরী দাবি করেন, “কোনও সমস্যা চরম পর্যায়ে না পৌঁছনো পর্যন্ত আমরা কর্মবিরতির পথে যাই না। তবে প্রধান বিচারপতি যখন সমস্যা মেটাতে আলোচনাকে গুরুত্ব দিয়েছেন, তখন নিশ্চই আমরা এ বার আরও যত্নশীল হব।” বিষ্ণুপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য মহাদেব দে আগের অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সম্পাদক ছিলেন। তিনি অবশ্য বলছেন, ‘‘বিচারপ্রার্থীরা কোনও কারণে সমস্যায় পড়লে আমাদের আন্দোলন করতে হয়। তবে ভবিষ্যতে সেই রকম আন্দোলন করলে, তার পথ কী হবে, এখনই বলতে পারছি না।’’
এ দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন, সৌমেন সেন, বাঁকুড়া জেলা বিচারক আনন্দকুমার মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া আদালতের জেলা জজ কোর্টের পাশেই ফাঁকা জমিতে গড়ে তোলা হবে নতুন ন’তলা ভবন। বরাদ্দ প্রায় ৬৭ কোটি টাকার একটি চেক এ দিন বাঁকুড়া জেলা বিচারকের হাতে তুলে দেন প্রধান বিচারপতি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, “কর্মজীবনের শুরু থেকেই আমি বাঁকুড়ার সঙ্গে পরিচিত। তাই এই জেলার উন্নতি হলে আমি খুবই আনন্দিত হই। বাঁকুড়া আদালত চত্বর খুব বড়। আদালতগুলিও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এ গুলি সব এক ছাদের তলায় এলে সবাই উপকৃত হবেন।” ভবন নির্মাণের কাজে দ্রুততা আনার নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন তিনি। গত বছরই পুজোর আগে বিষ্ণুপুরের তিন তলার নতুন আদালত ভবনের দ্বারদ্ঘাটন হয়েছে। একে একে জেলার আদালত ভবনগুলির উন্নতি হওয়ায় খুশি মানুষজন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy