Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
অনলাইনেই চলছে পড়াশোনা। জেলার কলেজে ভর্তি কী পরিস্থিতিতে?
Portal

খালি আসনে ভর্তির জন্য চালু পোর্টাল

বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষরা জানাচ্ছেন, ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেলেও প্রায় প্রতিটি কলেজেই পাশ কোর্স ও অনার্সের বেশ কিছু আসন ফাঁকা রয়েছে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

দয়াল সেনগুপ্ত 
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:৩৪
Share: Save:

কোভিড পরিস্থিতিতে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাওয়ার পরও আরেকবার কলেজে স্নাতক স্তরে ভর্তি হওয়ার এবং পছন্দমাফিক বিষয়ে অনার্স পড়ার সুযোগ পেতে চলেছেন পড়ুয়ারা। কলেজে ভর্তির জন্য অনলাইন পোর্টাল খুলে দেওয়া হয়েছে বীরভূমের কলেজগুলিতে।

করোনা আবহে এই মুহূর্তে কলেজ খোলার ঝুঁকি নিতে চাইছে না সরকার। সম্প্রতি উপাচার্যদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ভার্চুয়াল বৈঠকে সে কথা স্পষ্ট করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। কী ভাবে পঠনপাঠন চলবে, পাঠ্যসূচি কমাতে হবে কি না ইত্যাদি একাধিক বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি কলেজগুলির শূন্য আসন পূরণে ফের চালু পোর্টাল চালুর সিদ্ধান্ত হয় ওই বৈঠকে।

জেলার কলেজের অধ্যক্ষরা জানাচ্ছেন, সরকারের উচ্চশিক্ষা দফতর ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নির্দেশিকা পাওয়ার পরই কলেজে স্নাতক স্তরে পাস ও অনার্সের খালি আসনের জন্য ইচ্ছুক পড়ুয়াদের কাছে অবেদন আহ্বান করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশিকা অনুযায়ী কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করার সময় দেওয়া হয়েছিল ৪ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত। তবে ৪ তারিখ থেকেই সেই ব্যবস্থা শুরু করতে পারেনি অধিকাংশ কলেজই। বোলপুর পূর্ণিদেবী মহিলা মহাবিদ্যালয়, হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজে, বীরভূম মহাবিদ্যালয়-সহ বীরভূমের বেশিরভাগ কলেজে ভর্তির পোর্টাল খোলা হয়েছে সোমবার থেকেই। ১২ তারিখে নির্দিষ্ট ভর্তির জন্য। পুরো প্রক্রিয়াটাই হচ্ছে অনলাইনে। ১৬ তারিখ থেকে বীরভূমের কলেজগুলিতে স্নাতকস্তরে প্রথম সিমেস্টারের অনলাইন ক্লাস শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়।

বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষরা জানাচ্ছেন, ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেলেও প্রায় প্রতিটি কলেজেই পাশ কোর্স ও অনার্সের বেশ কিছু আসন ফাঁকা রয়েছে। ফের পোর্টাল চালু হলে সেই ফাঁকা আসন পূরণের একটা সম্ভাবনা থাকেই। খয়রাশোলের শৈলজানন্দ ফাল্গুনী স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নির্মল কুমার সাউ বলছেন, ‘‘আমাদের কলেজে পাস কোর্সে প্রায় ৪০০ আসন ফাঁকা। অনার্সে বিভিন্ন বিষয়ে খালি রয়েছে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ আসন। সরকারি নির্দেশ এলে কিছু সংখ্যক আসন ভর্তি হবে বলেই মনে হচ্ছে।’’

প্রায় একই কথা বলছেন বীরভূম মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়। তিনি বলছেন, ‘‘আমার কলেজে অনার্সের সামান্য সংখ্যাক আসন ফাঁকা। কিন্তু পাস কোর্সে বহু আসন পূরণ হয় নি। ফের চালু পোর্টাল চালুর সিদ্ধান্ত হলে ভাল হবে।’’ আসন খালি রয়েছে সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজ-সহ জেলার নানা কলেজে। কম সংখ্যক হলেও পড়ুয়াদের জন্য বেশ কিছু আসন পূরণ হওয়া বাকি হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজেও।

তবে, শেষ পর্যন্ত পোর্টালের মাধ্যমে কত শতাংশ আসন পূরণ হবে সেটা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে কলেজ শিক্ষকদের মধ্যে। অধ্যক্ষদের একাংশ বলছেন, ‘‘যে সব পড়ুয়া স্নাতক স্তরে ভর্তি হতে চায় এতদিনে তাদের সকলেই প্রায় কলেজে ভর্তি হয়েছেন। হতে পারে হাতে গোনা কিছু পড়ুয়া হয়তো সেই সুযোগ নিতে পারেনি। তাই পোর্টাল খুললেই প্রচুর সংখ্যায় ভর্তির আবেদন জমা পড়বে এমন না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তবে একটা ইতিবাচক দিক আছে। কিছু সুবিধা পড়ুয়ারা পাবেন।’’

হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘ধরা যাক রামপুরহাট মহকুমার কোনও পড়ুয়া চেয়েছিলেন পদার্থবিদ্যায় অনার্স পড়তে। কিন্তু সামান্য দু-তিন নম্বরের জন্য সুযোগ পাননি। বা বাড়ি থেকে অনকেটা দূরে কোনও কলেজে সুযোগ পয়েছেন। সেই পড়ুয়ার সুযোগ থাকছে অন্য কলেজে ওই বিষয় নিয়ে ফের আবেদন করার।’’ এতে সহমত প্রকাশ করেছেন সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের অধ্যক্ষ তপনকুমার পরিচ্ছা। তবে তাঁর আশঙ্কা, ‘‘ভর্তির থেকে এক কলেজ থেকে অন্য কলেজে স্থানান্তরিত হওয়ার ঘটনাই বেশি ঘটবে। ফলে শূন্যস্থান পূরণ হবেই এ কথা জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না।’’

বীরভূম মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ পার্থসারথি মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘যখন কলেজে পড়ুয়ারা ভর্তি হয়েছিলেন তাঁদের কাছে এই মর্মে একটি অঙ্গীকারপত্র নেওয়া হয়েছে, যে সেই পড়ুয়া কলেজ ছাড়বে না। ফলে কলেজ থেকে বিদায় নিয়ে অন্য কলেজে ভর্তি হওয়া কঠিন। তবে একটি কলেজে ভর্তি থাকাকালীন ফের অন্য কলেজে ভর্তি হলে কারও কিছু বলার নেই।’’ (চলবে)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE