Advertisement
E-Paper

ডাকে অভিযোগ দায়ের

সোমবার জয়পুরের ঘাঘরা পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিরোধী দলগুলির তরফে প্রধান পদের যিনি দাবিদার ছিলেন, তাঁর জাতিগত শংসাপত্রের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রশাসনের প্রতিনিধি। চাপানউতোরের খবর বাইরে যেতেই উত্তেজনা ছড়ায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় দু’জনের। কিন্তু পুলিশ সুপার ঘটনার পরে দাবি করেছিলেন, পুলিশ শুধু শূন্যে গুলি চালিয়েছিল। 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৮ ০১:২৩
ঘটনার দিন। —নিজস্ব চিত্র।

ঘটনার দিন। —নিজস্ব চিত্র।

গুলি ছুড়ল কে, সেই প্রশ্নের উত্তর মেলেনি ঘটনার দু’দিন পার করেও। পুরুলিয়ার জয়পুরের ঘাঘরা পঞ্চায়েতে গোলমালে মৃত দু’জনের পরিবার দাবি তুলল সিবিআই তদন্তের। বিজেপি আরও অভিযোগ তুলেছে, জয়পুর থানায় মৃতদের পরিজনেরা গেলে তাঁদের অভিযোগ নিতে গড়িমসি করে পুলিশ। বুধবার দুই পরিবারই ডাক মারফত থানায় অভিযোগ পাঠিয়েছে বলে দাবি। এ দিন পুলিশ সুপারের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তিনি ফোন ধরেননি। অফিসে গিয়েও সাক্ষাৎ পাওয়া যায়নি। অফিস থেকে জানানো হয়েছে, পুলিশ সুপার কথা বলবেন না। তবে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, জয়পুরের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে।

সোমবার জয়পুরের ঘাঘরা পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিরোধী দলগুলির তরফে প্রধান পদের যিনি দাবিদার ছিলেন, তাঁর জাতিগত শংসাপত্রের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রশাসনের প্রতিনিধি। চাপানউতোরের খবর বাইরে যেতেই উত্তেজনা ছড়ায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় দু’জনের। কিন্তু পুলিশ সুপার ঘটনার পরে দাবি করেছিলেন, পুলিশ শুধু শূন্যে গুলি চালিয়েছিল।

বিজেপির জেলা সম্পাদক তথা জয়পুরের বাসিন্দা রবীন সিংহদেওয়ের অভিযোগ, সোমবার রাতে জয়পুর থানায় মৃতদের পরিবারের লোকজন অভিযোগ জানানোর জন্য গেলেও পুলিশ সে দিন অভিযোগ নিতে চায়নি। তাই বাধ্য হয়ে বুধবার ডাক মারফত জয়পুর থানার আইসির কাছে অভিযোগ পাঠানো হয়েছে। মৃত দামোদর মণ্ডলের ছেলে সুবাস মণ্ডল এবং নিরঞ্জন গোপের আত্মীয় পিরু গোপ ওই অভিযোগ দায়ের করেছেন।

সূত্রের খবর, ওই ঘটনায় পুলিশ যে মামলা দায়ের করেছে তাতে অভিযোগকারী পিরু গোপের নামও রয়েছে। পুলিশের দায়ের করা মামলায় রয়েছে অঘোরী গোপ এবং শঙ্করনারায়ণ সিংহদেওয়ের নাম। রবীন জানান, অঘোরী ঘাঘরা পঞ্চায়েতে বিজেপির উপপ্রধান। জয়পুরের বাসিন্দা শঙ্করনারায়ণ বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র জমায়েত, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, আঘাত করা, ইট-পাটকেল ছোড়া, ১৪৪ ধারা অমান্য করে জমায়েত, হত্যার চেষ্টা ও আগ্নেয়াস্ত্র আইনে মামলা রুজু হয়েছে। রবিন বলেন, ‘‘মোট আটশো জনের নামে মামলা রুজু করা হয়েছে। বেছে বেছে আমাদের সদস্যদেরই ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে।’’

বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী এ দিনও প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘১৪৪ ধারা তো জারি ছিল। ঘটনার সময়ে কী করছিল পুলিশ?’’ বিজেপির প্রার্থী অদীপ মণ্ডলের জাতিগত শংসাপত্র অবৈধ বলে বাতিল হয়ে যাওয়া ওই পঞ্চায়েতের প্রধান হয়েছেন তৃণমূলের তফসিলি জাতির একমাত্র সদস্য। বিদ্যাসাগরের অভিযোগ, তৃণমূলকে ক্ষমতা পাইয়ে দিতে এই ঘটনা ঘটিয়েছে পুলিশ ও প্রশাসন। যদিও সেই অভিযোগ মানতে নারাজ জেলা তৃণমূল সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো। তিনি বলেন, ‘‘বৈধ শংসাপত্র রয়েছে এমন কোনও সদস্যই ওই পঞ্চায়েতে বিজেপির ছিল না। ওরা ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছেন।’’ তাঁর পাল্টা অভিযোগ, গন্ডোগোল পাকানোর জন্য ওই দিন জয়পুরে বিজেপিই ঝাড়খণ্ড থেকে লোক নিয়ে এসেছিল।

রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘কী ঘটেছে সবাই দেখেছে। আমাদের ঠেকাতে পুলিশ ও শাসকদল এক হয়ে গিয়েছে। সিবিআই তদন্ত হলে সত্য বেরিয়ে আসবে।’’

Firing bombing Complaint Post BJP TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy