টাকা রোজগার করতে ভিন্ রাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন পুরুলিয়ার বান্দোয়ান ও মানবাজার ২ ব্লকের ২০ জন যুবক। মহারাষ্ট্রের পাতালগঙ্গাতে ‘লকডাউন’-এ আটকে পড়েছিলেন তাঁরা। ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের দাবি, বারবার স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাঁদের বাড়ি ফেরানোর কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। অগত্যা জমানো টাকায় গাড়ি ভাড়া করে বাড়ি ফিরলেন ওই শ্রমিকেরা। তাতে খরচ পড়েছে এক লক্ষ পাঁচ হাজার টাকা, দাবি ওই যুবকদের। জেলায় ফেরা ওই ২০ জন শ্রমিকে মধ্যে বান্দোয়ানের বাসিন্দা ১১ জন। মানবাজার ২ ব্লক এলাকায় বাড়ি বাকি নয় জনের।
সোমবার বান্দোয়ানের ধ্বনি ‘নাকা-পয়েন্ট’এর কাছে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। সেখান থেকে তাঁদের সংশ্লিষ্ট ব্লকে পাঠানো হয় বলে প্রশাসন সুত্রে জানা গিয়েছে। ব্লক হাসপাতালে ওই যুবকদের লালারস সংগ্রহ হয়। এরপর তাঁদের ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকার নির্দেশ দেন হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ। যদিও ঘরে ফেরা হয়নি তাঁদের। ওই যুবকদের জন্য গ্রামের বাইরে একটি জায়গায় থাকার ব্যবস্থা করেছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। সেখানেই তাঁরা আপাতত ‘কোয়রান্টিন’-এ রয়েছেন। তবে তাতে আক্ষেপ নেই ওই যুবকদের। তাঁদের কথায়, ‘‘গ্রামে তো ফিরেছি। গ্রামের বাইরে ১৪ দিন কাটাব। গ্রামের লোকজনকে দেখতে পাব। এটাই বা কম কী?’’
২০১৭-১৮ সালে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর পাশ করা বান্দোয়ানের ঝোরবাইদ গ্রামের বাসিন্দা জগবন্ধু হেমব্রম রয়েছেন গ্রামে ফেরা ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের দলে। তাঁর বাবা ২০১১ সালে মারা যান। বাড়িতে থাকেন মা। দিনমজুর মায়ের সামান্য রোজগারে কোনও রকমে এম এ পাশ করেন জগবন্ধু। তার পরে এ-দিক সে-দিক ছুটেও কাজ জোটাতে পারেননি বলে জানালেন তিনি। তাই বন্ধুদের পরামর্শে চার মাস আগে মহারাষ্ট্রের রায়গড় জেলার পাতালগঙ্গা এলাকায় গিয়ে রঙের মিস্ত্রি হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন।