ফাইল চিত্র
মাসের সাম্মানিকের একটা অংশ মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দিলেন পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি সদস্যেরা। শুক্রবার তাঁরা দশ জন মোট ৩০,১০০ টাকার চেক তুলে দিয়েছেন বিডিও (রঘুনাথপুর ২) মৃণ্ময় মণ্ডলের হাতে।
নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে এ বার ওই পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। সমিতির সভাপতি রবীন ঘোষ গোপের বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা অত্যন্ত ইতিবাচক, তা নিয়ে কোনও দ্বিধা নেই। আমরা মনে করছি, এই সময়ে সাধ্যমতো রাজ্য সরকারের পাশে থাকা প্রয়োজন।” তাঁর সংযোজন, ‘‘এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। মুখ্যমন্ত্রী কোনও একটা দলের নন, পুরো রাজ্যেরই মুখ্যমন্ত্রী।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও বলছেন, ‘‘এটা ভাল কথা। এই সময়ে সকলেরই সহযোগিতা করা উচিত। সেটা কেন্দ্র বা রাজ্য— যাকেই হোক না কেন।’’
তৃণমূলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ ভাবেই দলমত নির্বিশেষে সমস্ত মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর লড়াইয়ে পাশে দাঁড়াচ্ছেন। বিজেপির নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও মুখ্যমন্ত্রীর কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে আর্থিক সাহায্য করেছেন, এটা অত্যন্ত ইতিবাচক একটি বিষয়।’’
জেলার রাজনীতির ওঠাপড়ার নিয়মিত পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, বিজেপির জনপ্রতিনিধিদের সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলেই টাকা দিতে দেখা গিয়েছে। দলের একটি সূত্রের দাবি, রাজ্য নেতৃত্বের তরফেও প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে করোনার জন্য সাহায্য পাঠানোর আহ্বান করা হয়েছে। রঘুনাথপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপির সদস্যেরা সে দিক থেকে দেখলে, কিছুটা অন্য পথেই হেঁটেছেন।
বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সবাই মিলে শামিল হওয়াটাই মূল কর্তব্য। এতে কেন্দ্র বা রাজ্যের মধ্যে তফাত করার কোনও যুক্তি নেই। রঘুনাথপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যেরা রাজ্যের সাধারণ নাগরিক হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে আর্থিক সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”
গত পঞ্চায়েত ভোটে রঘুনাথপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির ১৬টি আসনের মধ্যে ১২টিতে জিতেছিল বিজেপি। পরে দু’জন তৃণমূলে চলে যাওয়ায় এখন সেখানে বিজেপির সদস্য সংখ্যা ১০ জন। সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, সভাপতি সাম্মানিক পান মাসে ছ’হাজার টাকা। অন্য সদস্যেরা পান সাড়ে তিন হাজার টাকা করে। রবীনবাবু বলেন, ‘‘সম্প্রতি আমরা আলোচনায় বসে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছই। আমার সাম্মানিকের পুরোটাই ত্রাণ তহবিলে দিয়েছি। অন্যেরা সাম্মানিকের বেশির ভাগটাই দিয়েছেন।’’
এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে প্রশাসন। বিডিও (রঘুনাথপুর ২) মৃণ্ময় মণ্ডল বলেন, ‘‘জেলার মধ্য এই প্রথম কোনও সমিতির সদস্যেরা মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে সাহায্য করলেন। জেলা প্রশাসনের শীর্ষমহলও আমাদের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের এই কাজকে স্বাগত জানিয়েছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy