E-Paper

জেলায় রেশনে দুর্নীতি হয়েছে, দাবি সিপিএমের 

রামপুরহাটের অবস্থান বিক্ষোভ আগে বামফ্রন্টের কর্মীরা ডাকবাংলা মোড়ে জমায়েত হন। সেখান থেকে মিছিল করে রামপুরহাট পাঁচমাথা মোড় হয়ে পুরসভা ভবন সংলগ্ন মহকুমা খাদ্য দফতরের সামনে আসে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:২০
খাদ্য দফতরে বিক্ষোভ। রামপুরহাটে।

খাদ্য দফতরে বিক্ষোভ। রামপুরহাটে। —নিজস্ব চিত্র।

জেলায়ও রেশনে দুর্নীতি হয়েছে। বুধবার রামপুরহাটে রেশনে দুর্নীতি নিয়ে বিক্ষোভ অবস্থানে এমনই দাবি তুলল সিপিএম। যদিও তৃণমূল এই দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছে।

রেশনে দুর্নীতির অভিযোগে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করেছে ইডি। ঘটনায় শাসকদল তৃণমূলকে লাগাতার আক্রমণ করছে বিরোধীরা। এই আবহে সিপিএমের বীরভূম জেলা কমিটিও রেশন দুর্নীতির ঠিকমতো তদন্তের দাবিতে জেলার মহকুমা খাদ্য দফতরগুলির সামনে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেয়। বুধবারের এই কর্মসূচিতে জেলাও রেশনে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন সিপিএম নেতৃত্ব।

এ দিন বোলপুর মহকুমা খাদ্য দফতরের সামনে বামফ্রন্ট অবস্থান বিক্ষোভ করে। এই কর্মসূচিতে সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক শ্যামলী প্রধান বক্তৃতা করেন। আরএসপি-র পক্ষ থেকে তুষার বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য রাখেন। অবস্থান বিক্ষোভে সিপিএম নেতা বকুল ঘড়ুই-সহ বামফ্রন্টের বিভিন্ন গণ সংগঠনের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

অন্য দিকে, রামপুরহাটের অবস্থান বিক্ষোভ আগে বামফ্রন্টের কর্মীরা ডাকবাংলা মোড়ে জমায়েত হন। সেখান থেকে মিছিল করে রামপুরহাট পাঁচমাথা মোড় হয়ে পুরসভা ভবন সংলগ্ন মহকুমা খাদ্য দফতরের সামনে আসে। এখানেই অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়।

রামপুরহাটের অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে রেশন দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হন বীরভূম জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সঞ্জীব বর্মণ। সঞ্জীবের অভিযোগ, ‘‘মাস দুয়েক আগে রামপুরহাট ধূলাডাঙা রোডের উপরের একটি কোঅপারেটিভ সোসাইটি থেকে রেশনের সামগ্রী বণ্টন না করে রামপুরহাট শহরের এক জন ডিস্ট্রিবিউটরের থেকে রেশন ডিলারদের রেশনের সামগ্রী দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে খাদ্য দফতর। কারণ, ওই কোঅপারেটিভ সোসাইটিতে দু’কোটি টাকারও বেশি দুর্নীতি হয়েছে। আমরা চাই এই দুর্নীতিরও প্রকৃত তদন্ত হোক।’’

রামপুরহাটের ওই কোঅপারেটিভ সোসাইটির সম্পাদক নবগৌরাঙ্গ দাস বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে যা বলার খাদ্য দফতরের আধিকারিকেরা বলবেন। তবে আমাদের সোসাইটি থেকে রেশন ডিলারদের সামগ্রী বণ্টন আপাতত বন্ধ আছে।’’

যদিও খাদ্য দফতরের রামপুরহাট মহকুমা নিয়ামক সিদ্ধার্থ বোমজান বলেন, ‘‘রেশন সামগ্রী বণ্টন নিয়ে ওই সোসাইটির কিছু অস্বচ্ছতা ধরা পড়ে। সেই কারণে মাস দুয়েক ধরে ওই সোসাইটি থেকে রেশন ডিলারদের রেশন সামগ্রী বণ্টন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরিবর্তে রামপুরহাটের এক জন ডিস্ট্রিবিউটরের মাধ্যমে রেশন সামগ্রী বিলি করা হচ্ছে।’’ খাদ্য দফতরের মহকুমা নিয়ামকের দাবি, রেশন সামগ্রী বণ্টন না হওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়।

পুরনো আটা দুর্নীতি নিয়েও এ দিন সিপিএম নেতৃত্ব সরব হন। সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, রেশনে এক সময়ে আটার প্যাকেট দেওয়া হয়েছিল। ওই আটার প্যাকেটে তৈরি এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ ছিল না। অথচ ওই আটা গরিব মানুষদের এক মাসের ধরে বণ্টন করা হয়েছিল।

সঞ্জীবের অভিযোগ, ‘‘এর সঙ্গে তৎকালীন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক থেকে নবান্নের ছোট-বড় আমলা এবং শাসকদলের সর্বোচ্চ নেত্রী জড়িত।’’ সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, গরিবদের বঞ্চিত করে শাসকদলের নেতা, নেত্রীরা পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতি করেছেন। ওই সমস্ত নেতাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান সিপিএম নেতারা।

তৃণমূলের মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সিপিএম রেশন কাণ্ড নিয়ে নাটক করছে। সিপিএমের আমলে রেশন দুর্নীতিতে তাদের ল্যাজে-গোবরে অবস্থা হয়েছিল। এখনও কেউ রেশন পাননি বা কারও রেশন অন্য কেউ তুলে নিয়েছেন এমন কোনও কাণ্ড ঘটেনি। তদন্ত চলছে। তাতে যদি কেউ দোষী প্রমাণিত হন, দল তাঁর পাশে থাকবে না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

CPIM Birbhum

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy