নিষেধ না মেনে সিপিএম প্রার্থীর মিছিলে হেঁটেছিলেন ওঁরা। ‘অপরাধ’ এটকুই।
তার জেরে এক সিপিএম সমর্থকের মাটি ও বিচালির ছাউনি দেওয়া ছোট্ট মুদির দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, বেধড়ক মারধরেরও অভিযোগ তুলছেন দোকানটির মালিক তপন মাঝি। তিনি বলছেন, ‘‘রুটি-রুজির জন্যে দোকানটিই ছিল একমাত্র সম্বল। সব মালপত্র পুড়ে গিয়েছে। জানি না এরপরে কী করে আমাদের সংসার চলবে!’’
সোমবার রাত ৯টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে নানুরের বেড়ুগ্রামে। ওই ঘটনায় পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম সুজিত দাস এবং প্রশান্ত দাস। বাড়ি নানুরে। এলাকায় তাঁরা তৃণমূল কর্মী হিসাবেই পরিচিত। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব
অবশ্য অভিযোগ মানতে চায়নি। নেতৃত্বের পাল্টা অভিযোগ, সিপিএমের লোকেরাই ওই গ্রামে প্রচারে যাওয়া তৃণমূল কর্মীদের মারধর করে অভিযোগের তির ঘুরিয়ে দিতে নিজেরাই আগুন লাগিয়ে নাটক করছে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বিকালে বেড়ুগ্রাম-সহ লাগোয়া রানীপুর, পাকুড়হাঁসে ‘রোড শো’ ছিল জোট প্রার্থী সিপিএমের শ্যামলী প্রধানের। তাতে অন্যদের সঙ্গে যোগ দেন সিপিএমের নানুর লোকাল কমিটির সদস্য বেড়ুগ্রামের তপন ওরফে বাদল মাঝি এবং গৌরাঙ্গ মাঝিরা। মঙ্গলবার তপনবাবু জানান, কয়েক দিন ধরেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা দলের মিটিং মিছিলে যোগ না দেওয়ার জন্য নানা রকম হুমকি দিচ্ছিল। তা অগ্রাহ্য করায় ওরা কাল রাতে ৮/১০ টি মোটরবাইকে এসে বেধড়ক মারধরের পরে দোকানে আগুন লাগিয়ে দেয়।
একই অভিযোগ গৌরাঙ্গবাবুর। তিনি বলেন, ‘‘প্রচার সেরে স্নান করছিলাম। সেই সময় মোটরবাইক বাহিনী এসে শাসায়। বলে, ‘দাঁড়া তোদের সিপিএম করা ঘুঁচিয়ে দিচ্ছি।’ তারপরই আচমকা মারধর শুরু করে। পায়ে রডের বাড়ি মারে। আমরা চিৎকার করে ওঠতেই গ্রামের লোকেরা ছুটে এসে দু’জনকে ধরে ফেলে। তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।’’ ঘটনার পরেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়।
এ দিন সকালে গিয়ে দেখা যায় জটলা করছেন গ্রামের মানুষ। কখন কী হয়, এই আশঙ্কায় অধিকাংশের চোখে-মুখে চাপা আতঙ্ক। মুদির দোকান ঘরটি চাপা পড়েছে রয়েছে আধপোড়া চাল। গ্রামে রয়েছে পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী। এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত সিপিএম নেতা তথা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আনন্দ ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ‘‘পায়ের তলায় মাটি হারিয়ে তৃণমূল এখন গ্রামে গ্রামে সন্ত্রাস চালাচ্ছে।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘সিপিএমের দুষ্কৃতীরাই ওই গ্রামে প্রচারে যাওয়া কর্মীদের মারধর করেছে। দু’জনকে আটকেও রাখে। সেই অভিযোগ থেকে অব্যহতি পেতে নিজেরাই আগুন লাগিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।’’
পুলিশ জানায়, দু’পক্ষ মোট ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। তার মধ্যে একপক্ষের দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। অন্য দিকে, নলহাটি থানার নওয়াপাড়া এলাকার মঙ্গলবার ভস্মীভূত হল দুটি বাড়ি। রামপুরহাট থেকে দমকলের একটা ইঞ্জিন গিয়ে আগুন নেভায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy