বীরভূমের ডেউচা-পাঁচামি খনি প্রকল্পের নামে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিতে সরব হল সিপিএম। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য সিপিএমের তোলা একগুচ্ছ প্রশ্নকে ‘অবান্তর’ বলে খারিজ করেছে।
তথ্য, পরিসংখ্যান দেখিয়ে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বৃহস্পতিবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘‘গত ২০২৩-এর নভেম্বর মাসে রাজ্য মন্ত্রিসভা বিদ্যুৎ দফতরের প্রস্তাব অনুযায়ী ডব্লিউবিপিডিসিএল-কে বেসরকারি সংস্থা বাছাই করে ডেউচা-পাঁচামিতে ৪৩১.৪৭ একর জমিতে ব্যাসল্ট খনন করে সেটা বাজারে বিক্রি করার অনুমতি দেয়। বিদ্যুৎ উৎপাদনের সরকারি সংস্থার মাধ্যমে ব্যাসল্ট খনন ও বিক্রি করার অনুমতি প্রদানের কোন যুক্তিপূর্ণ ভিত্তি নেই! তার পরে ২০২৪-এর মার্চ মাসে ডব্লিউবিপিডিসিএল-এর মাধ্যমে ব্যাসল্ট খননের জন্য খনি নির্মাণ ও পরিচালনা করার জন্য যে বেসরকারি সংস্থাকে বাছাই করা হয়, তার টেন্ডার প্রক্রিয়ায় গরমিল ছিল। সেই ২০২৪-এর অক্টোবর মাসেই দেউচা-পাঁচামিতে ১২ একর জমিতে ব্যাসল্ট খনি প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক যে পরিবেশগত ছাড়পত্র দেয়, তাতে ব্যাসল্ট খনির আয়তন ইচ্ছাকৃত ভাবে কম করে দেখানো হয়।’’ সেলিমের অভিযোগ, বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী এই প্রকল্পের বিষয়ে যা যা বলেছিলেন, তার সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের দাবি, ডব্লিউবিপিডিসিএল হাই কোর্টে যা বলেছে, তাতেই দুর্নীতি বোঝা যাচ্ছে। পরিবেশের সমীক্ষার ছাড়পত্র দরকার প্রকল্পের জন্য। সেখানেও দুর্নীতি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ১২ একর দিয়ে শুরু হবে, তার পরে ধীরে ধীরে ৪৪১ একর হবে। আইন অনুযায়ী ৫০ একরের বেশি হলে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে করাতে হবে সমীক্ষা। টেন্ডার যা ডাকা হয়েছে, সেখানেও দর দেওয়া নেই। যাদের দেওয়া হয়েছে, তারা ‘লজিস্টিকস’-এর কাজ করে। এই কাজে তাদের কোনও অভিজ্ঞতা নেই।
এই প্রেক্ষিতেই সেলিমের বক্তব্য, ‘‘ডেউচা-পাঁচামির কয়লা খনি প্রকল্প আসলে একটা দুর্নীতি। এই দুর্নীতির বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’’ তৃণমূল অবশ্য সিপিএমের তোলা প্রশ্নগুলিকেই ‘হতাশার বহিঃপ্রকাশ’ বলে মন্তব্য করেছে। দলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেছেন, ‘‘ডেউচা-পাঁচামির সম্ভাবনা বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত। মাটির নীচে যে সম্পদ আছে, তা কেন্দ্রীয় সরকারের স্বীকৃত। আর তার উত্তোলন ও ব্যবহারে রাজ্য সরকারের ভূমিকাও নির্দিষ্ট। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী এ ব্যাপারে আন্তরিক প্রয়াস চালাচ্ছেন। সিপিএমের এই প্রশ্ন অবান্তর ও ভিত্তিহীন!’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)