Advertisement
E-Paper

বাম নিশানায় পুলিশ

বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছিল আস্ত একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। চলতি মাসের ১ তারিখ গভীর রাতে খয়রাশোলের লোকপুর থানার নওপাড়া গ্রামের ওই বিস্ফোরণস্থলেই মঙ্গলবার বিকালে ঘুরে গেলেন বাম প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। সেখানে দাঁড়িয়েই মহম্মদ সেলিম, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, সুজন চক্রবর্তীর মতো সিপিএম নেতারা প্রশ্ন তুললেন পুলিশের ও সরকারের ভূমিকা নিয়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৬ ০৮:০৩
পাশে আছি। সিউড়িতে অবস্থান বিক্ষোভে বাম নেতাদের সঙ্গে কংগ্রেস বিধায়ক মিল্টন রশিদ। (ডান দিকে) নওয়াপাড়ায় বাসিন্দাদের মাঝে।—নিজস্ব চিত্র।

পাশে আছি। সিউড়িতে অবস্থান বিক্ষোভে বাম নেতাদের সঙ্গে কংগ্রেস বিধায়ক মিল্টন রশিদ। (ডান দিকে) নওয়াপাড়ায় বাসিন্দাদের মাঝে।—নিজস্ব চিত্র।

বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছিল আস্ত একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। চলতি মাসের ১ তারিখ গভীর রাতে খয়রাশোলের লোকপুর থানার নওপাড়া গ্রামের ওই বিস্ফোরণস্থলেই মঙ্গলবার বিকালে ঘুরে গেলেন বাম প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। সেখানে দাঁড়িয়েই মহম্মদ সেলিম, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, সুজন চক্রবর্তীর মতো সিপিএম নেতারা প্রশ্ন তুললেন পুলিশের ও সরকারের ভূমিকা নিয়ে।

প্রতিনিধি দলের সদস্যদের অভিযোগ, একটি সরকারি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বিস্ফোরণে মাটিতে মিশে গেল। অথচ কারা এর পিছনে, কী তার উদ্দেশ্য, কেনই বা বিস্ফোরক মজুত রাখা হল— সে সব প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর পাওয়া গেল না! ‘‘পাছে বিস্ফোরণের সঙ্গে শাসকদলের যোগ বেরিয়ে পড়ে, তাই অত্যন্ত দায়িত্ব নিয়ে দ্রুততার সঙ্গে বিস্ফোরণস্থল পরিষ্কার করে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করছে পুলিশ’’— এমন অভিযোগও তুললেন সেলিমরা।

রাজ্যে নির্বাচন-উত্তর সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মঙ্গলবার সিউড়ি প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে যোগ দেয় প্রতিনিধি দলটি। বেলা ১১টার কিছু পরে শুরু হয় কর্মসূচি। বাম গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলিকে নিয়ে আয়োজিত ওই কর্মসূচিতে সেলিম, ঋতব্রত, সুজন, জেলা বাম নেতৃত্ব ছাড়াও ছিলেন হাঁসন বিধানসভা থেকে জয়ী কংগ্রেস প্রার্থী মিল্টন রসিদও।

মঞ্চ থেকে সেলিমরা ভোট পরবর্তী হিংসার জন্য রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেন। সেলিমের কথায়, ‘‘নির্বাচনে জিতলেই বিরোধীদের উপরে আক্রমণ করতে হবে, এটা কেমন সংস্কৃতি?’’ বাকি বক্তাদেরও সুর ছিল একই সুরে বাঁধা। বেলা একটা নাগাদ সিউড়ির কর্মসূচি শেষে প্রতিনিধি দলটি নওপাড়ায় পৌঁছয়। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেন। সিপিএম নেতাদের দাবি, স্থানীয় বাসিন্দাদের বড় অংশ তাঁদের কাছে দাবি করেছেন প্রকৃত অপরাধীদের না ধরে নিরীহদের ধরছে পুলিশ।

পুলিশ ওই বিস্ফোরণ-কাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে। সেই তালিকায় সিপিএমের এক পোলিং এজেন্ট ও বিস্ফোরণ স্থলের ঠিক পাশের বাড়ির এক প্রৌঢ় রয়েছেন। বাকিরা সকলেই এলাকার তৃণমূল কর্মী হিসাবে পরিচিত। সিপিএমের পোলিং এজেন্ট-এর গ্রেফতার হওয়া প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, ‘‘ওটা সংখ্যা বাড়ানোর কৌশল ছাড়া কিছু নয়। খয়রাশোলে গত ছ’মাসে তিনটি বিস্ফোরণ হয়েছে। কিন্তু একটি ঘটনারও সঠিক তদন্ত হয়নি।’’ সিপিএম দাবি তুলেছে, কোনও কিছু আড়াল না করে ঘটনার পেছনে থাকা প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করার। যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়ানো যায়।

ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় আবার এক ধাপ এগিয়ে যোগ করেন, ‘‘খাগড়াগড় থেকে দেখে আসছি এক ট্রেন্ড। সর্বত্র শুধু ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা। চেষ্টা প্রমাণ লোপাটের। যেখানে বাংলাদেশ সরকার বারবার বলছে, রাজশাহী, মুর্শিদাবাদের রেজিনগর, বর্ধমানের মঙ্গলকোট ও বীরভূমের সঙ্গে একটা যোগসূত্র গড়ে উঠেছে। ওই করিডর দিয়েই সন্ত্রাসবাদীদের অবাধ যাতায়াত। সেখানে কেন সঠিক তদন্ত হবে না?’’ সিপিএমের এই সাংসদের প্রশ্ন, ‘‘শাসকদলের মদত রয়েছে বলেই কী প্রতিটি বিস্ফোরণ কাণ্ডের পর ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে?’’ বিষয়টি সংসদে তুলবেন বলেও জানিয়েছেন ঋতব্রত।

এ দিন বিস্ফোরণ স্থল ঘুরে প্রতিনিধি দলটি দেখা করেন ধৃত পোলিং এজেন্ট শেখ সাদেক আলির স্ত্রী-র সঙ্গে। দলের তরফে আইনি পরামর্শের আশ্বাসও দেন নেতারা। পুলিশ আধিকারিকদের একাংশ অবশ্য জানাচ্ছেন, ধৃতদের কেউই ধোওয়া তুলসী পাতা নন! বিস্ফোরণের সঙ্গে তাঁদের যোগসূত্র রয়েছে, সে ব্যাপারে নিঃসংশয় হয়েই গ্রেফতার করা হয়েছে।

তবে শাসকদলের নেতাদের আড়াল করার বিষয়টি মানতে চায়নি পুলিশ। একই ভাবে সিপিএমের অভিযোগকে ‘পাগলের প্রলাপ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতারাও। দলের এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘যে দলের জনভিত্তিই নেই, তাদের এ সব কথা আবার মানায় নাকি?’’

CPM Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy