Advertisement
E-Paper

ভাঙন নলহাটিতে, নজরে রামপুরহাট

সাত বাম সদস্যকে দলে টেনে এ বার নলহাটি ১ পঞ্চায়েত সমিতি দখলেও একধাপ এগোল শাসকদল তৃণমূল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৬ ০১:০৯

সাত বাম সদস্যকে দলে টেনে এ বার নলহাটি ১ পঞ্চায়েত সমিতি দখলেও একধাপ এগোল শাসকদল তৃণমূল।

দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে সম্প্রতি ওই পঞ্চায়েত সমিতির আলি মোর্তাজা নামে এক সদস্যকে দল থেকে বহিষ্কার করেছিল সিপিএম। সোমবার বিকেলে সেই আলি মোর্তাজা এবং সমিতির সাত বাম সদস্য সিউড়িতে জেলা তৃণমূলের কার্যালয়ে গিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে শাসকদলে যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। সংবাদমাধ্যমের কাছে মোর্তাজারা দাবি করেন, ‘‘দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে যোগসাজশে পঞ্চায়েত সমিতিতে সীমাহীন দুর্নীতি চলছে। তারই প্রতিবাদে আমরা তৃণমূলে যোগ দিলাম।’’ তাঁদের এমন দাবিকে যদিও ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএম সভাপতি তপন মাল। তাঁর পল্টা দাবি, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতিতে নিয়ম মাফিক কাজ চলছে। কোনও প্রমাণ ছাড়াই দুর্নীতির অভিযোগ ভিত্তিহীন করছে। আসলে ওঁরা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করতেই দলত্যাগ করেছে।’’

ঘটনা হল, বিধানসভা ভোট মেটার পরে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনকে লক্ষ্য করে এই জেলায় তৃণমূল তাদের জমি আরও শক্ত করতে উঠে পড়ে লেগেছে। শাসকদলের কার্যত লক্ষ্যই হয়ে উঠেছে, এলাকার রাজনীতিকে বিরোধী-শূন্য করে তোলা। বিধানসভা ভোটের পর থেকেই তাই জেলার পঞ্চায়েত থেকে পঞ্চায়েত সমিতি— একের পর এক বিরোধী শিবিরে থাবা বসিয়েছে তৃণমূল। তুলনায় বিরোধীদের শক্তঘাটি বলে পরিচিত রামপুরহাট মহকুমাও তার ব্যতিক্রম নয়। গত পঞ্চায়েত ভোটেও রামপুরহাট মহকুমার আটটির মধ্যে তিনটি পঞ্চায়েত সমিতি (নলহাটি ১, ২ ও মুরারই ২) বামেরা দখল করেছিল। সেই মহকুমাতেই এ বার নজর পড়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের। দিন কয়েক আগেই মুরারই এলাকার জেলা পরিষদের এক সিপিএম সদস্যকে দলে টেনেছে তৃণমূল। তারা দখলে আনতে শুরু করেছে বিরোধীদের হাতে থাকা সেই এলাকার বেশ কিছু পঞ্চায়েতও। এ বার তৃণমূলের হাত পড়ল নলহাটিতেও।

২৬ আসনের নলহাটি ১ পঞ্চায়েত সমিতিতে গত পঞ্চায়েত ভোটের ফলে ১৯টি বাম, ছ’টি কংগ্রেস এবং মাত্র একটি আসন তৃণমূলের খাতায় আসে। ভোটের পরপরই অবশ্য কংগ্রেসের তিন সদস্যকে দলে টানতে সক্ষম হয় শাসকদল। বিধানসভা ভোটের পরে তাদের শিবিরে চলে আসেন সিপিএমের প্রাক্তন বাউটিয়া লোকাল সম্পাদক তথা বাউটিয়া পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান আলি মোর্তাজা। তাঁর নেতৃত্বে দুই কর্মাধ্যক্ষ-সহ পঞ্চায়েত সমিতির আরও সাত সদস্য এ দিন তৃণমূলে যোগ দিলেন। এই দলবদলের পরে সমিতির আসনবিন্যাস দাঁড়িয়েছে— তৃণমূল ১২, বাম ১১ এবং কংগ্রেস ৩। তৃণমূল শীঘ্রই ওই পঞ্চায়েত সমিতিতে অনাস্থা আনতে চলেছে বলে মোর্তাজা জানিয়েছেন। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য তৃণমূলের আর এক জন সদস্যকে প্রয়োজন। মোর্তাজাদের তৃণমূলে যোগদানের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলছেন, ‘‘ওঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে যোগ দিতে চান বলে সিপিএম ছেড়েছেন। ওঁদের যোগদানে ওই এলাকায় আমাদের শক্তিবৃদ্ধি হল।’’

ওই দল বদল নিয়ে যোগাযোগ করা হলে সিপিএমের নলহাটি জোনাল সম্পাদক সনৎ প্রামাণিক বলেন, ‘‘বিরোধীরা কোথাও থাকলে উন্নয়ন হবে না— এমন একটা বিপজ্জনক ধারণা তৈরি করতে চাইছে তৃণমূল। এই নীতি নিয়ে ওরা আসলে দেশের গণতন্ত্রের সঙ্গেই দ্বিচারিতা করছে, এলাকার মানুষের ভোটাধিকারের ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করছে। এ ভাবে সারা রাজ্য বিরোধী শূন্য করার খেলায় মেতেছে তৃণমূল। সে ক্ষেত্রে চোরেদের নিয়ে দল করার চেয়ে শূন্য থেকে শুরু করা ভাল।’’

CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy