এ বারও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট নয়, বরং আসন নিয়ে বোঝাপড়ার পথেই হাঁটতে চাইছে সিপিএম। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল বা বিরোধী বিজেপি লোকসভা নির্বাচনের আগে সংগঠন মজবুত করায় জোর দিয়েছে। ভোটের দিন ঘোষণা হওয়ার প্রাক্কালে একই পথে হাঁটল সিপিএম। শুক্রবার বীরভূমের তিনটি মহকুমার দলীয় কর্মীদের নিয়ে রামপুরহাট ও সিউড়িতে দু’টি নির্বাচনী কর্মিসভা করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।
এ দিন সকালে কর্মিসভায় যোগদানের আগে নারী দিবস উপলক্ষে জাতীয় সড়কে মানব বন্ধন কর্মসূচীতে যোগ দেন সূর্যকান্ত। লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে এই বর্ষীয়ান নেতা বলেন, ‘‘কংগ্রেসের সঙ্গে আমরা কখনও জোট করিনি। ভবিষ্যতেও করব না।’’ জোটের বার্তা না দিলেও আসন সমঝোতা বা ভাগাভাগির স্পষ্ট ইঙ্গিত দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘‘নিজেদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যাতে তৃণমূলের হাতে আসন না চলে যায় তাই ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে আমরা কয়েকটা আসন ভাগাভাগি করেছিলাম। যদিও সেটায় শেষ পর্যন্ত কিছু গণ্ডগোল থেকে গিয়েছিল।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এ বার অনেক আগেই থেকেই বলেছি ৬টি আসন আছে। যেখানে ২০১৪ সালে ৪টিতে কংগ্রেস জিতেছে, ২টি বামপন্থীরা জিতেছে। এই ৬টি আসনে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা চাই না।’’
কেন এ কথা বলছেন, তাঁর ব্যাখ্যাও দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। তাঁর মতে, ওই ছ’টি আসে যদি কংগ্রেস এবং সিপিএম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তা হলে তৃণমূল এবং বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগ হবে। তাতে ওই দুই দলের সুবিধা হবে। কংগ্রেস নেতৃত্বের প্রতি সূর্যকান্তের আহ্বান, ‘‘তার জন্যে আসুন এই ৬টি আসনে আমরা ঘোষণা করি, আপনারা যেখানে জিতেছেন, সেখানে আমরা প্রার্থী দেব না। আর যেখানে আমরা জিতেছি, সেখানে আপনারা প্রার্থী দেবেন না। এর উপরেই নির্ভর করছে বোঝাপড়া কতটা হবে।’’
এ দিন রামপুরহাটের কর্মিসভায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোম, জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা-সহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সূর্যকান্ত বলেন, ‘‘বামফ্রন্টের প্রার্থী নিয়ে বৈঠক হচ্ছে। নির্বাচনের দিন ঘোষণা হলে বামফ্রন্টের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে।’’ এখানে সভা সেরে সিউড়িতে যান সূর্যকান্ত। সেখানে প্রথমেই তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে নাম না করে কটাক্ষ করলেন ‘খুচরো’ বলে। অনুব্রত বলেছিলেন, এ বার নির্বাচনে বিরোধীরা ওয়াকওভার দেবেন। সেই প্রসঙ্গে সূর্যকান্তের বক্তব্য, ‘‘খুচরো বা পেটি লোক নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না। এখানে যা বলার আমার জেলার নেতারা রয়েছেন, তাঁরা বলবেন।’’
যদি পঞ্চায়েত নির্বাচনের মতো পরিস্থিতি হয়? সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘‘এটা মোটেই পঞ্চায়েত নির্বাচন নয়। লোকসভা নির্বাচন করানোর দায়িত্ব কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সব তথ্যই কমিশনকে দেওয়া হয়েছে। কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার সেটা বলা হয়েছে। আর এটা তো দেশ জুড়ে নির্বাচন। এই লড়াইয়ের জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। আমরাও সর্বশক্তি নিয়ে মানুষের পাশে থাকব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy