Advertisement
E-Paper

সিপিএম কর্মীকে পিটিয়ে খুন

এক সিপিএম কর্মীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম দোলন দাস (৪০)। বাড়ি নানুরের থুপসড়া দাসপাড়ায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:৩৯
ইনসেটে, দোলন দাস। তখনও পড়ে রক্ত।— নিজস্ব চিত্র

ইনসেটে, দোলন দাস। তখনও পড়ে রক্ত।— নিজস্ব চিত্র

এক সিপিএম কর্মীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম দোলন দাস (৪০)। বাড়ি নানুরের থুপসড়া দাসপাড়ায়।

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ মোটরবাইকে সম্পর্কিত দুই ভাগ্নে উত্তম এবং স্বপন দাসকে নিয়ে বোলপুর হাসপাতালে মাকে দেখতে যাচ্ছিলেন দোলন। গ্রামেরই মুসলিম পাড়ার কাছে কিছু দুষ্কৃতী তাঁদের আটকায়। তারপরেই লাঠি রড নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে দোলনের উপরে। উত্তম বলেন, ‘‘মামাকে বাঁচানোর জন্য আমরা বাড়িতে খবর দিতে ছুটে পালিয়ে যাই।’’

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা রাস্তায় পড়ে রয়েছে চাপ চাপ রক্ত। পুলিশ সেই রক্তের নমুনা সংগ্রহ করছে। রাস্তার পাশেই দাঁড় করানো রয়েছে মোটরবাইকটি। কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না নিহতের স্ত্রী চন্দনাদেবী। মেয়ে প্রতিমা এবং ছেলে শান্তনুকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেই চলেছেন তিনি। নিজেদের সিপিএম কর্মী হিসাবে দাবি করে নিহতের ভাই প্রশান্ত দাস বলেন, ‘‘খবর পেয়ে গিয়ে দেখি রাস্তায় পড়ে রয়েছে দাদার রক্তাক্ত নিথর দেহ। ১০০ দিন কাজের টাকা তুলে মুসলিম পাড়ায় তৃণমূলের একটি পার্টি অফিস তৈরি হচ্ছে। তার জন্য দাদা এবং এক ভাগ্নের পাশ বইয়ে ১১,৬০০ টাকা ওরা ঢুকিয়ে দিয়েছিল। সেই টাকা তুলে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। দাদা রাজি হননি। সেই আক্রোশেই দাদাকে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা খুন করল।’’

কে এই দোলন দাস?

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময় থুপসড়া পঞ্চায়েত তথা নানুর ব্লক এলাকায় তৃণমূলের দাপুটে নেতা হিসাবে পরিচিত ছিলেন দোলন দাস। ২০০৩ সালে থুপসড়া পঞ্চায়েতের টিকিট পাওয়ার কথা ছিল তাঁর। নাম শোনা গিয়েছিল বিধানসভার প্রার্থী হিসাবেও। কিন্তু দুটি ক্ষেত্রেই বাস্তবে তা ঘটেনি। তার জেরেই দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়। ২০০৫ সালে নাম লেখান সিপিএমে। ২০০৮ সালে সিপিএমের টিকিটে জিতে নানুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নির্বাচিত হন দোলন। ২০১০ সালে এলাকার আর এক দাপুটে তৃণমূল নেতা মুন্সী নুরুল ইসলাম ওরফে সোনা চৌধুরী খুন-সহ একাধিক তৃণমূল নেতা কর্মী খুন কিংবা খুনের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে।

ঘটনা হল, সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনের আগে স্থানীয় বাসাপাড়া পার্টি অফিসে গিয়ে ফের তিনি তৃণমূলে নাম লেখান বলে তৃণমূলেরই একটি সূত্র জানাচ্ছে।

গোপনে যুব নেতা কাজল শেখের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সিপিএম প্রার্থীর হয়ে ভোট করার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূলেরই ওই সূত্রটি। সেই হিসাবে ওই খুনের পিছনে একদিকে ভোটে অর্ন্তঘাত অন্যদিকে পাল্টা খুনের তত্ত্ব উড়িয়ে দিতে পারছে না পুলিশ। কারণ ইতিপূর্বে নানুরে সিপিএম-তৃণমূল উভয় পক্ষের বিরুদ্ধেই বহু বার খুন পাল্টা খুন কিংবা খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ দিন সিপিএমের স্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আনন্দ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দোলন দাস প্রথম দিকে তৃণমূল করলেও পরে আমাদের দলে যোগ দিয়ে সক্রিয় কর্মী হন। এলাকায় সংগঠন বৃদ্ধিতে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন। সেই আক্রোশেই
তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ওকে পিটিয়ে খুন করেছে।’’

তৃণমূলের জেলা যুব সভাপতি গদাধর হাজরা অবশ্য ওই অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ওই ঘটনায় আমাদের কেউ জড়িত নয়। এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে দু’দল দুষ্কৃতীর বিবাদের জেরেই ওই খুন বলে শুনেছি। ওই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।’’

পুলিশ জানিয়েছে, কোনও অভিযোগ জানায়নি কেউ। একটি খুনের মামলা করা হয়েছে। শুরু হয়েছে তদন্ত।

CPM worker Murder TMC Accused
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy