প্রতীকী ছবি।
আসা-যাওয়ার পথে খিদে পেলে যে মানুষগুলি ছিলেন মুশকিলআসান, ট্রেন বন্ধ হওয়ার পর থেকে থমকে রয়েছে তাঁদের সংসারের চাকা। পুজোর আগে, বুধবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের যমুনাবাঁধ কলোনিতে গিয়ে ট্রেনের হকারদের খাবার পৌঁছে দিয়ে এলেন কিছু নিত্যযাত্রী।
পঞ্চমীর সকালে যমুনাবাঁধ কলোনিতে গিয়েছিলেন পঙ্কজ দাস,অতনু চৌধুরী-সহ প্রায় কুড়ি জন। তাঁরা প্রত্যেকেই বিভিন্ন বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। রোজ সাতসকালে অফিস যাওয়ার জন্য ট্রেন ধরতেন বিষ্ণুপুর স্টেশন থেকে। স্টেশনের পাশের যমুনাবাঁধ কলোনি থেকে সেই সময়ে এসে ট্রেনের অপেক্ষায় দাঁড়াতেন হকারেরাও। কেউ ফেরি করতেন ডিম সেদ্ধ, কেউ চা, কেউ জলখাবার। চেনাশোনা থেকে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে সম্পর্ক। পঙ্কজ বলেন, ‘‘লকডাউনের পরে আমরা কাজে ফিরেছি। কিন্তু পায়ের তলার মাটিটা নড়বড় করছে। তাই হকারেরা কী ভাবে দিন কাটাচ্ছেন, সেটা আরও ভাল করে বুঝতে পারি।’’
পুজোর সময়ে চেনা সেই হকারদের নতুন কাপড় দেবেন বলে ঠিক করেছিলেন ওই নিত্যযাত্রীরা। খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন তাঁদের বাড়িতে। তখন জানতে পারেন, কাপড়ের থেকে রান্নাঘরের রসদের দরকারটা বেশি। এ দিন কলোনির কুড়িটি পরিবারকে দেওয়া হয়েছে চাল, আলু, সোয়াবিন, ভোজ্য তেল আর বিস্কুট। হকারদের মধ্যে হাবলু অধিকারী ও রতন দাস বলেন,‘‘সংসার টানতে এখন দিনমজুরি করি। দিন-আনি দিন খাই। পুজো সময় তো কেউ কাজ করাতে চাইবে না। সে জন্য এই সময়ে কাপড়ের থেকে খাবারের দরকার বেশি ছিল।’’
হাবুল জানান, রেশন কার্ডে সমস্যা রয়েছে তাঁদের কারও কারও। তা ছাড়া, রেশনে যা চাল মেলে, অনেকেরই পুরো পরিবারের কুলোয় না। আর রান্নার অন্য জিনিসপত্রও দরকার হয়। কবে আবার লাইনে ট্রেন ছুটতে শুরু করবে, সেই দিনটির অপেক্ষায় তাঁরা। নিত্যযাত্রী অতনু বলেন, ‘‘এখন কেউ মোটরবাইকে অফিসে যাচ্ছি, কেউ বাসে। কিন্তু রেলের হকারদের সঙ্গে আমাদের জীবনের চলাটা একই খাতে গড়িয়ে চলেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy