Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Murder

Dead Body: পাওনা নিয়ে বিবাদ, মাদক খাইয়ে গলা টিপে খুন বন্ধুকে! বাঁকুড়ায় প্যাকেটবন্দি দেহ

শুক্রবার শালতোড়া থানার পুলিশের কাছে খবর আসে, ঝগড়াডিহি গ্রামের কাছে জঙ্গলে একটি প্যাকেটবন্দি দেহ পড়ে। সেই রহস্যের কিনারা হল।

জঙ্গলের ধারে প্যাকেটবন্দি মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ধৃত দুই।

জঙ্গলের ধারে প্যাকেটবন্দি মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ধৃত দুই। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শালতোড়া শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২২ ১৮:২১
Share: Save:

জঙ্গল থেকে মিলেছিল ব্যবসায়ীর প্যাকেটবন্দি মৃতদেহ। সেই রহস্যের কিনারা করল বাঁকুড়ার শালতোড়া থানার পুলিশ। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় শালতোড়া থানার ঝগড়াডিহি এলাকা থেকে উদ্ধার হয় পশ্চিম বর্ধমান জেলার জামুড়িয়ার বাসিন্দা সঈদ মহম্মদ তৌফিক নামে এক ব্যবসায়ীর প্যাকেটবন্দি মৃতদেহ। ঘটনার তদন্তে নেমে শালতোড়া থানার পুলিশ পশ্চিম বর্ধমান জেলার হীরাপুর থেকে গোলাম জিলামি ওরফে গোল্ডি এবং তাঁর সহযোগী কাদের খান নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় শালতোড়া থানার পুলিশের কাছে খবর আসে, ঝগড়াডিহি গ্রামের কাছে জঙ্গলের ধারে একটি প্যাকেটবন্দি মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দ্রুত প্যাকেট খুলে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মৃতদেহটি উদ্ধার করে। তা পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য। পাশাপাশি মৃতের পরিচয় জানতে খোঁজখবরও শুরু করে পুলিশ। শালতোড়া থানার পুলিশ জানতে পারে, দিন কয়েক ধরে নিখোঁজ রয়েছেন জামুড়িয়ার বাসিন্দা তৌফিক। এ নিয়ে হীরাপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করে তাঁর পরিবার। পুলিশের কাছে খবর পেয়ে শুক্রবার রাতেই মৃতদেহটি শনাক্ত করেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। ওই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশের সন্দেহ গিয়ে পড়ে তৌফিকের ব্যবসার অংশীদার হীরাপুরের বাসিন্দা গোল্ডির উপর। তদন্তকারীরা শুক্রবার রাতেই গোল্ডিকে হীরাপুর থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের মুখে গোল্ডি জানায় যে তিনিই তৌফিককে খুন করেছেন। এর পর গোল্ডিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকে শনিবার আদালতে তোলা হয়। বিচারক গোল্ডিকে সাত দিন পুলিশ হেফাজত রাখার নির্দেশ দেন। পুলিশের দাবি, গোল্ডিকে এই কাজে সহায়তা করেন তাঁর বন্ধু কাদের খান ওরফে ভুট্টু। শনিবার রাতে শালতোড়া থানার পুলিশ ভুট্টুকে গ্রেফতার করে। রবিবার কাদের খানকে বাঁকুড়া জেলা আদালতে তোলা হয়। তাঁকে ছ’দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

তদন্তকারীদের মতে, তৌফিক এবং গোল্ডির মধ্যে আর্থিক লেনদেন ছিল। পুলিশের দাবি, জেরায় গোল্ডি জানিয়েছেন, তিনি তৌফিককে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা ধার দিয়েছিলেন। কিন্তু বার বার তৌফিককে সেই টাকা শোধ করার জন্য বললেও তিনি তা দিচ্ছিলেন না বলে পুলিশকে জানিয়েছেন গোল্ডি। তদন্তকারীরা আরও জানতে পেরেছেন, টাকা না পেয়ে ক্ষিপ্ত গোল্ডি শুক্রবার রাতে তৌফিককে হীরাপুরের একটি অ্যাপার্টমেন্টে ডেকে পাঠান। সেখানে খাবারের সঙ্গে মাদক জাতীয় কিছু খাইয়ে তৌফিককে বেহুঁশ করে দেন তিনি। পুলিশের দাবি, এর পর তাঁর গলা টিপে খুন করেন গোল্ডি। মৃতদেহটি সরাতে বন্ধু ভুট্টুর সাহায্য নেন গোল্ডি। তাঁরা তৌফিকের দেহ প্যাকিং বাক্সে মুড়ে বাইকে চাপিয়ে দামোদর নদ পেরিয়ে বাঁকুড়ার শালতোড়া থানা এলাকায় ফেলে দেন।

বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, ‘‘ব্যবসায়ী খুনের পিছনে শুধু টাকাপয়সার লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় ছিল, না কি এর পিছনে আরও কোনও রহস্য রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই খুনের সঙ্গে আর কেউ যুক্ত ছিল কি না, তা-ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder businessman murder Asansol saltora
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE