Advertisement
E-Paper

আতঙ্কে রাজধানী ছাড়ছেন হবিবুরেরা

প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, মুরারই ২ ব্লকের বিভিন্ন গ্রামের কয়েক’শো মানুষ দিল্লিতে থাকেন। কেউ মহুরি গেট, কেউ কাশ্মীরি গেটের কাছে থাকেন।

তন্ময় দত্ত 

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:১৯
দুই মেয়েকে নিয়ে বিড়ি বাঁধছেন কনকপুর গ্রামের হাসিনা বিবি। নিজস্ব চিত্র

দুই মেয়েকে নিয়ে বিড়ি বাঁধছেন কনকপুর গ্রামের হাসিনা বিবি। নিজস্ব চিত্র

সোমবার থেকে তেতে রয়েছে উত্তর-পূর্ব দিল্লি। তাতে বন্ধ হয়ে রয়েছে রোজের কাজ। বরং রয়েছে গোলমালের আশঙ্কা, আর বাড়ি ফেরার জন্য পরিজনদের আর্তি। মুরারই থেকে রাজধানী শহরে কাজে যাওয়া শ্রমিকেরা এখন তাই ঘরে ফিরতে মরিয়া। ইতিমধ্যেই ফেরার ট্রেন ধরেছেন, সেই সংখ্যাও নেহাত কম নয়।

দিল্লি থেকে ট্রেনে বাড়ি ফিরছেন হবিবুর রহমান। বৃহস্পতিবার ফোনে জানালেন, তাঁরা যেখানে থাকছিলেন, সেখানে তেমন অশান্তি হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘বরং যে সব জায়গায় হিংসা হয়েছে, সেখানকার বহু মানুষ আমাদের কাছে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তবু পাছে কোনও গোলমাল হয়, সেই ভয়ে ক’দিন আমরা বাড়ি থেকেই বেরোয়নি। তা ছাড়া দোকান-বাজার বন্ধ। রাস্তায় লোক চলাচল খুব কম। এ দিকে বাড়ি থেকে ফোন আসছিল। তাই বাড়ি আসছি।’’ ফিরছেন এমন অনেকেই জানালেন, মুরারইয়ে শিল্প নেই। দিনভর খেটে দুশো টাকাও রোজগার হয় না। তাই সংসার চালাতে দিল্লি এসেছেন। ঠিক যেমন এই এলাকার অনেকে আপেল বাগান বা পশুপালনের কাজ নিয়ে গিয়েছিলেন কাশ্মীরে।

প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, মুরারই ২ ব্লকের বিভিন্ন গ্রামের কয়েক’শো মানুষ দিল্লিতে থাকেন। কেউ মহুরি গেট, কেউ কাশ্মীরি গেটের কাছে থাকেন। গ্যারাজে কাজ করে কিংবা টোটো চালিয়ে রোজগার করেন। আমডোল পঞ্চায়েতের প্রধান আব্দুল ওয়াদুদ মন্টুর কথায়, ‘‘এই পঞ্চায়েতের প্রায় তিনশো মানুষ দিল্লি আছেন। এলাকায় কাজ না থাকায় ভিন্ রাজ্যে কাজে যেতে হয়। দিল্লিতে যাঁরা আছেন, তাঁদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি।’’ বিডিও (মুরারই ২) অমিতাভ বিশ্বাস বলেন, ‘‘কেউ যদি আটকে থাকেন বা টাকার অভাবে বাড়ি ফিরতে না পারেন তা হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

এ দিন গ্রাম ঘুরে দেখা গেল পরিজনদের অনেকেই অজানা আশঙ্কায় রয়েছেন। আমডোল পঞ্চায়েতের কনকপুর গ্রামের এক মহিলা যেমন তাঁর স্বামীকে ফোনে বলছিলেন, ‘‘বাড়ি চলে এসো। এখানেই কাজ করে যেমন ভাবে হোক সংসার চালিয়ে নেব।’’ এই এলাকার একই পরিবারের তিন জন তাজমল শেখ, জাকিরুল শেখ, হাসিবুল শেখেরা যেমন বাড়ি ফেরার ট্রেন ধরেছেন। তাঁদের বাবা গোলাম রুসুল বলেন, ‘‘ছেলেরা বাড়ি ফিরুক। টাকার দরকার নেই।’’ কনকপুর গ্রামের হাসিনা বিবির কথায়, ‘‘জমিতে কাজ করে যেটুকু উপার্জন হয়, তাতে সংসার চলছিল না। তাই দিল্লি গিয়েছিল। টোটো চালিয়ে দিনে চারশো টাকা রোজগার করত। বাড়িতে টাকা পাঠাত। অশান্তির পরে ট্রেন ধরে বাড়ি ফিরছে। এ বার সংসার কী করে চলবে জানি না।’’

Delhi Violence CAA Protest Murarai
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy