ডিএফও-র (পুরুলিয়া) চেম্বারের ভিতরে। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।
বন সহায়ক পদে কীসের ভিত্তিতে প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়েছে, সে প্রশ্ন তুলে মঙ্গলবার পুরুলিয়া শহর তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশন মোড়ে বন বিভাগের ডিএফওর দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন। নিয়োগে স্বজনপোষণেরও অভিযোগ তুলে স্লোগানও ওঠে। দলের শহর সভাপতি বিভাসরঞ্জন দাস, জেলা কমিটির দুই সাধারণ সম্পাদক সমীরণ রায় ও সৈয়দ শাহি এবং যুব তৃণমূলের শহর সভাপতি গৌরব সিংহ প্রমুখ সেখানে ছিলেন। শাসক দলের তরফে এ ভাবে সরকারি অফিসে ঢুকে বিক্ষোভ দেখানো কতটা সঙ্গত, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরা।
বন দফতর সূত্রের দাবি, এ দিন ডিএফও কয়েকজন প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলতে চাইলে কয়েকজন নেতা-কর্মী তাঁর চেম্বারে ঢুকে মেঝেতে বসে পড়েন। ততক্ষণে পুলিশ এসে পৌঁছয়। এক সঙ্গে এত জনকে ঢুকতে দেখে অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন দফতরের কর্মী-আধিকারিকেরা। শাসক দলের নেতা-কর্মীরা সেখানে দাবি করেন, কী ভাবে এই নিয়োগ হয়েছে, তা জানাতে হবে। ডিএফও রামপ্রসাদ বাদানা তাঁদের চার জনকে থাকতে বলেন। কর্মীরা দশ জন থাকবেন বলে দাবি করেন। এ ভাবে কথা বলা সম্ভব নয় বলে ডিএফও ফের তাঁদের জানান।
এর পরে শহর নেতৃত্বের তরফে এক প্রতিনিধিদল বেশ কিছুক্ষণ ডিএফও-র সঙ্গে আলোচনা করেন। পরে শহর তৃণমূলের সভাপতি বিভাসরঞ্জন দাস বলেন, ‘‘বন সহায়ক পদে নিয়োগ নিয়ে আমাদের কাছে বিভিন্ন ভাবে স্বজনপোষণের অভিযোগ আসছে। সে কারণেই কী ভাবে এই নিয়োগ হয়েছে, যাঁরা বিবেচিত হয়েছেন, তাঁদের তালিকা কোথায় দেওয়া হয়েছে— এ রকম কিছু প্রশ্ন নিয়েই আমরা ডিএফও-র কাছে এসেছিলাম। কথা হয়েছে। ফের সোমবার যাব। বিভ্রান্তির নিরসন না হলে আমরা আন্দোলনে নামব।’’ পরে ডিএফও বলেন, ‘‘বন সহায়ক পদে কী ভাবে নিয়োগ করা হয়েছে, তা জানতে এসেছিলেন ওঁরা। নিয়োগের পদ্ধতি, কাদের নিয়োগ করা হয়েছে,— সবই বন দফতরের ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে বলে জানানো হয়েছে।’’
বিভাসবাবুর দাবি, ‘‘বিভিন্ন জায়গায় ওই নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ডিএফও-র কাছে গিয়েছিলাম। কারণ, মানুষকে আমাদের জবাবদিহি করতে হয়। কোনও অশান্তি হয়নি।’’ তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র নবেন্দু মাহালির দাবি, ‘‘নিয়োগ নিয়ে বিভিন্ন সূত্রে আমাদের কাছেও স্বজনপোষণের অভিযোগ এসেছে। দলের শহর সভাপতির সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। এ ভাবে হয়তো প্রতিবাদে সরব হওয়াটা আমাদের উচিত নয়। তবে তিনি শান্তিপূর্ণ কথা বলতেই ওখানে গিয়েছিলেন। কী ঘটেছে, খোঁজ নেব।’’
বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘‘এত দিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ আমরা তুলতাম। এখন ঘুরিয়ে সেটাই মানছে রাজ্যের শাসকদল।’’ নবেন্দুবাবুর দাবি, ‘‘এখনও সরকার-বিরোধী কিছু কর্মী প্রশাসনে রয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে বলেই স্বচ্ছতার দায়বদ্ধতা থেকে কর্মীরা খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy