Advertisement
E-Paper

মন্দিরের কাছে মাটিতে ‘কোপ’

এ দিকে, পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের কলকাতা সার্কলের সুপারিনটেন্ডেন্ট শুভ মজুমদারের অভিযোগ, ‘‘অবৈধ নির্মাণ হলে আমরা অভিযোগ করি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২০ ০৩:৪০
ইতিহাসে আঁচড়: কালাচাঁদ মন্দিরের অদূরে। ছবি: শুভ্র মিত্র

ইতিহাসে আঁচড়: কালাচাঁদ মন্দিরের অদূরে। ছবি: শুভ্র মিত্র

ঢিবির ভিতর থেকে বেরিয়ে এল প্রাচীন ইটের কাঠামো। দেখা গেল মাটি কাটার যন্ত্রের টাটকা আঁচড়ের দাগ। শুক্রবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর শহরের ঘটনা। জায়গাটি কালাচাঁদ মন্দির থেকে তিনশো মিটার মতো দূরে। রাধামাধব মন্দির থেকে দূরত্ব কম-বেশি দুশো মিটার। দিন কুড়ি আগে একই জায়গায় অবৈধ ভাবে মাটি কাটার অভিযোগ উঠেছিল। ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক (বিষ্ণুপুর) বিপ্লব দাস বলেন, ‘‘ওখানে কোনও কাজ করা যাবে না। মাটি কাটার অনুমতি দেওয়া হয়নি। দুর্বৃত্তদের কাজ।’’ পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের কলকাতা সার্কলের সুপারিনটেন্ডেন্ট শুভ মজুমদার বলেন, ‘‘আমাদের সংরক্ষণ এলাকার বাইরের ঘটনা।’’

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গিয়েছে, যত্রতত্র ছড়িয়ে দেশি মদের বোতল। কাটা মাটির ঢিবি। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ অভিযোগ করেন, মাটি কেটে পাশেরই একটি নিচু জমিতে ফেলা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতে যন্ত্রের আওয়াজ পেয়েছেন বলে দাবি বেশ কয়েক জনের। তবে মাটি মাফিয়াদের ভয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি কেউই। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ অভিযোগ করেছেন, শ্যামরাই মন্দিরের পিছনে, লালজিউ মন্দিরের পিছনে, গুমঘরের পাশে আর পাথর দরজার পাশে লাল মোরামের টিলা যথেচ্ছ ভাবে কাটা হয়েছে। এখন কালাচাঁদ এলাকায় শুরু হয়েছে মাফিয়াদের উপদ্রব। বিষ্ণুপুর যোগেশচন্দ্র পুরাকৃতী ভবনের কিউরেটর তুষার সরকার বলেন, ‘‘যে ইটগুলি বেরিয়ে এসেছে, সেগুলি মল্ল আমলের। কিন্তু সময়কাল এবং বিশদ তথ্য জানতে হলে প্রত্নতাত্ত্বিক উৎখনন করতে হবে।’’

নভেম্বরের গোড়াতেও রাধামাধব মন্দিরের কাছের ওই জায়গা থেকে মাটি পাচারের অভিযোগ উঠেছিল। তার প্রেক্ষিতে পদক্ষেপও করেছে প্রশাসন। ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক (বিষ্ণুপুর) বিপ্লব দাস জানান, জমির মালিকদের নোটিস পাঠানো হয়েছে। তিন জন জবাব দিয়েছেন। বাকিরা যোগাযোগ করেননি। বিপ্লববাবু বলেন, ‘‘তাঁদের খোঁজ করতে হবে। ছুটি চলছিল। তবে জায়গাটা আমাদের নজরেই রয়েছে।’’ বিপ্লববাবু জানান, রেকর্ড অনুযায়ী জায়গাটি টিলা নয়। বাস্তু জমি।

এ দিকে, পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের কলকাতা সার্কলের সুপারিনটেন্ডেন্ট শুভ মজুমদারের অভিযোগ, ‘‘অবৈধ নির্মাণ হলে আমরা অভিযোগ করি। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, থানায় গেলে অভিযোগ নেয় না। বিষ্ণুপুরের প্রশাসনও এক সময়ে জোড় শ্রেণির মন্দিরের কাছে ভূমির চরিত্র বদল করেছে।’’ এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) প্রিয়ব্রত বক্সী বলেন, ‘‘আইনগত যে সব ব্যবস্থা নেওয়ার, তা থানা নেয়। এই নিয়ে অভিযোগ উঠলে খতিয়ে দেখা হবে।’’ বর্তমান মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) অনুপকুমার দত্ত এই অভিযোগ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘টিলা কাটার অভিযোগের ব্যাপারে ভূমি দফতরকে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। আমি দেখছি।’’

Ancient brick structure Bishnupur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy