Advertisement
২৮ এপ্রিল ২০২৪
Pradhan Mantri Awas Yojana

সরবরাহকারী, মিস্ত্রিদের সঙ্গে বসবে প্রশাসন

উপভোক্তাদের উপযুক্ততা যাচাই সমীক্ষার পরে ‘পার্মানেন্ট ওয়েটিং লিস্টে’ ১ লক্ষ ৬৫ হাজারের কিছু বেশি সংখ্যক উপভোক্তার নাম রয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৩৩
Share: Save:

গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের নির্দেশ ছিল গত বছরের শেষ দিন (৩১ ডিসেম্বর) এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী আবাস (প্লাস) যোজনার উপভোক্তাদের নাম কেন্দ্রীয় পোর্টালে তুলে ফেলতে হবে, না-তুললে বাকি ‘কোটা’ অন্য রাজ্যে চলে যাবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সে কাজ সেরে ফেলা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি বীরভূম জেলা প্রশাসনের। তবে, মার্চের মধ্যে এক বড় সংখ্যক উপভোক্তার বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করাই এ বার চ্যালেঞ্জ প্রশাসনের।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরভূমে প্রথম তালিকায় ২ লক্ষ ২৩ হাজার প্রাপকের নাম ছিল। উপভোক্তাদের উপযুক্ততা যাচাই সমীক্ষার পরে ‘পার্মানেন্ট ওয়েটিং লিস্টে’ ১ লক্ষ ৬৫ হাজারের কিছু বেশি সংখ্যক উপভোক্তার নাম রয়েছে। তাঁদের মধ্যে চলতি অর্থবর্ষে বাড়ি পাবেন (আবাসের অগ্রাধিকার তালিকা অনুসারে) ৬২ হাজার ৬২১ জন প্রাপক। প্রশাসন সূত্রে খবর, সেই সব উপভোক্তার নাম শুধু পোর্টালে তোলার পাশাপাশি রেজিস্ট্রেশন, জিওট্যাগিং ইত্যাদি পদ্ধতিগত সব কাজ সেরে বাড়ির অনুমোদন দেওয়া হয়ে গিয়েছে। এর পরের ধাপ উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির টাকা পাঠিয়ে দ্রুত বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করা।

বাড়ির কাজ শেষ করতে হাতে সময় মাত্র তিন মাস (৩১ মার্চ পর্যন্ত)। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, যেহেতু এক সঙ্গে এত সংখ্যক বাড়ির কাজ শুরু হতে যাচ্ছে, সেই জন্য আগাম নানা ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেমন, এত সংখ্যক বাড়ির তৈরির জন্য ইট-বালি-সিমেন্ট বিপুল পরিমাণে লাগবে। সেই জোগানে যাতে ঘাটতি না হয়, সেই জন্য ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসায়ীদের নিয়ে চলতি সপ্তাহেই বৈঠক করবে প্রশাসন। বৈঠক হবে জেলায় রাজমিস্ত্রিদের সঙ্গেও। তিন মাসের মধ্যে যেহেতু বাড়ির কাজ শেষ করতে হবে, উপভোক্তাদেরও তাঁদের ভূমিকার ব্যাপারে সজাগ (ওরিয়েন্টেশন) করা হবে। কাজের অগ্রগতি তদারকি করার উদ্দেশ্যে প্রতিটি ব্লকের জন্য এক জন করে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে আবাস যোজনার কাজের তদারকির জন্য এক জন করে আধিকারিককে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রতি সপ্তাহে কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখা হবে।

প্রশ্ন হল, যে সব উপভোক্তা বাড়ির তৈরির অনুমোদন পেলেন, যদি দেখা যায় তাঁদের কেউ কেউ আদৌ বাড়ি পাওয়ার যোগ্য নন, সেক্ষেত্রে কী হবে। জেলাশাসক বিধান রায় জানাচ্ছেন, শেষ মুহূর্তেও গিয়েও যদি দেখা যায় সংশ্লিষ্ট উপভোক্তা সরকারি প্রকল্পের বাড়ি পাওয়ার অনুপযুক্ত কিংবা তিনি আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল, সে ক্ষেত্রে অনুমোদন বাতিল করা হবে। এ দিন সিউড়িতে বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, ‘‘আবাস যোজনার দুর্নীতি গোটা রাজ্যে চলছে। কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে আসছে। কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা পঞ্চায়েতের প্রধান উপপ্রধানদের কাছে গিয়েছে। গরিবরা টাকা পাননি।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কারা এই অর্থবর্ষে বাড়ি পেলেন, প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে তার তালিকা পৌঁছে গিয়েছে। অযোগ্য উপভোক্তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জেলার বিভিন্ন বিডিওদের কাছে গুচ্ছ নালিশ পৌঁছেছে। উপভোক্তাদের মধ্যে তেমন কেউ থেকে থাকলে অ্যাকাউন্টে টাকা ছাড়ার আগে সেই অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখা হবে। যদি দেখা যায় অভিযোগের সারবত্তা রয়েছে, সংশ্লিষ্ট উপভোক্তা টাকা পাবেন না। এমনকি ভূল করেও যদি সংশ্লিষ্ট উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির টাকা পৌঁছে গিয়ে থাকে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁকে সে টাকা ফেরাতে হবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। ইতিমধ্যে ব্লকে ব্লকে প্রশাসনিক বার্তা পৌঁছে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pradhan Mantri Awas Yojana Suri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE