—নিজস্ব চিত্র।
জনবসতি বেড়ে যাওয়ায় লোকালয় থেকে শ্মশান দূরে সরে গিয়েছে। কিন্তু বীরভূমের পাহাড়েশ্বরে রয়ে গিয়েছে শতাব্দী প্রাচীন শ্মশানকালীর মন্দির। তন্ত্রমতে আজও দেবীমূর্তির পুজো হয় সেখানে।
ওই মন্দিরের পুরোহিত কৃষ্ণগোপাল দাস বৈষ্ণব জানিয়েছেন, প্রাচীনকালে এই এলাকায় একটি শ্মশান ছিল। সেখান থেকেই এই কালীর নাম শ্মশানকালী হয়েছে। তাঁদের পরিবারের এক সদস্য কামাখ্যা থেকে প্রথম কালীমূর্তি নিয়ে এসেছিলেন। তার পর থেকে বংশপরম্পরায় তাঁরাই পুজোর দায়িত্বে রয়েছেন। শুরুতে মূর্তির আকার ছোট থাকলেও, স্বপ্নাদেশ পেয়ে পরে তা বড় করা হয়।
মায়ের মূর্তি তৈরি হোক বা পুজো, গোটা দায়িত্ব পালন করে বৈষ্ণব পরিবার। মূর্তি শুকনোর জন্য শ্মশানের অবশিষ্ট পোড়া কাঠের জ্বালানি ব্যবহার করা হয়। শ্মশানের সামগ্রী দিয়েই সাজানো হয় অঙ্গরাগ। প্রতিমা গড়ার সময় রীতি মেনে বিশেষ ভোগের ব্যবস্থা করা হয়। কখনও খিচুড়ি, মাছের টক, কখনও আবার ভাত এবং মাংস। প্রতিমার পাশে মায়ের দুই সঙ্গী ডাকিনী ও যোগিনীকেও রাখা হয়।
আরও পড়ুন: ১৬ হাজার ৫০০ শূন্যপদে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ ৩ মাসেই, ঘোষণা মমতার
এই পুজোয় আরও একটি লক্ষণীয় বিষয় হল, পুজোর রাতে পুরোহিতের যে আসনটি ব্যবহার করা হয়, সেটি কাঁটা দিয়ে তৈরি। এর পিছনে কী কাহিনি রয়েছে, তা স্পষ্ট ভাবে জানা না গেলেও, বংশ পরম্পরায় এই রীতি চলে আসছে বৈষ্ণব পরিবারে। কৃষ্ণগোপাল জানিয়েছেন, ভক্তদের বাইরে বের করে দিয়ে, সমস্ত আলো নিভিয়ে, অন্ধকার পরিবেশে শুধুমাত্র দু’টি প্রদীপ জ্বালিয়ে পুজো হয় শ্মশানকালীর। গোটা পুজোটাই হয় তন্ত্রমতে। তাতে যেমন পোড়া চ্যাং মাছ লাগে, তেমন বলিও হয়।
ওই মন্দিরের পাশে একটি জলের কুণ্ড রয়েছে, যাকে আবার গঙ্গাকুণ্ড বলা হয়। স্থানীয়দের দাবি, পাথুরে এলাকায় ওই কুণ্ড খুঁড়লেই জল পাওয়া যায়। কিন্তু প্রতিমা তৈরি হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুকিয়ে যায় সেই জল।
আরও পড়ুন: কোচবিহারে পুলিশের নারায়ণী ব্যাটালিয়ন, পাহাড়-জঙ্গলমহলেও নয়া বাহিনীর ঘোষণা মমতার
তবে বৈষ্ণব পরিবার পুজোর দায়িত্বে থাকলেও, বিসর্জনের দায়িত্বে থাকেন এলাকায় বসবাসকারী দাস পরিবার। বিসর্জন ঘিরে মন্দির চত্বরে একদিনের মেলাও বসে। এ বারে কোভিড পরিস্থিতির জেরে সেই মেলা বসছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy