Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Durga Puja

ডাকের সাজের ডাক পাননি শিল্পীরা

খয়রাশোলের নিচিন্তা গ্রামটি শোলা দিয়ে তৈরি ডাকের সাজের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। শোলা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত গ্রামের বেশ কয়েকটি পরিবার। তাঁদেরই অন্যতম মানিক মালাকার, হেমন্ত মালাকারেরা। বহু বছর ধরে তাঁরা এ কাজ করছেন।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

দয়াল সেনগুপ্ত
দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:৫০
Share: Save:

টানা চোখের সাবেক প্রতিমা। পরনে শোলা দিয়ে তৈরি চোখ ধাঁধানো ডাকের সাজ। দুর্গাপুজো বললেই মণ্ডপ জোড়া এমন প্রতিমার ছবি চোখে ভাসে। কিন্তু সেই সাজ তৈরির কারিগর যাঁরা, করোনা থাবা বসিয়েছে তাঁদের ভাগ্যেও। কারণ এবার দুর্গাপুজো হলেও তাতে যে সেই জাঁক থাকবে না তা সকলেই বুঝতে পারছেন। সামান্য বরাত পেলেও বড় বাজেটের একটি পুজো থেকেও প্রতিমার ডাকের সাজ গড়ার ডাক পাননি বীরভূমের খয়রাশোল, রাজনগর, দুবরাজপুর এবং বোলপুরের সুরুলের শোলা শিল্পীদের।

দুবরাজপুরের গৌতম মালাকার, সুরুলের দীনবন্ধু মালাকার, খয়রাশোলের হেমন্ত মালাকাররা বলছেন, ‘‘কৃত্রিম উপকরণের তৈরি সাজের জন্য বছর কয়েক থেকে এমনিতেই বাজার কমছে শোলার ডাকের সাজের। শোলার জোগানও কম। তা সত্ত্বেও অনেক পরিবারিক পুজো থেকে বড় বাজেটের পুজো মণ্ডপ থেকে প্রতিমাকে শোলা দিয়ে তৈরি ডাকের সাজে সাজিয়ে দেওয়ার বরাত বহু আগে থেকেই চলে আসে। তবে করোনার জেরে এ বার চূড়ান্ত ধাক্কা খাবে দুর্গাপুজোও।’’ তাঁরা জানাচ্ছেন, নমো নমো করে পুজো হলেও কোনও বড় উদ্যোক্তা বা ক্লাব কর্তৃপক্ষ বরাত দেননি তাঁদের। পারিবারিক পুজোর সাজেও অনেকেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছেন বাজেট কমানোর।

খয়রাশোলের নিচিন্তা গ্রামটি শোলা দিয়ে তৈরি ডাকের সাজের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। শোলা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত গ্রামের বেশ কয়েকটি পরিবার। তাঁদেরই অন্যতম মানিক মালাকার, হেমন্ত মালাকারেরা। বহু বছর ধরে তাঁরা এ কাজ করছেন। অন্য বছর এই সময় চূড়ান্ত ব্যস্ততা চলে। হাত লাগাতে হয় পরিবারের অন্য সদস্যদের। এ বারও কাজ শুরু করেছেন তাঁরা। কিন্তু করোনার দাপটে সেই ব্যস্ততা নেই। হেমন্ত জানাচ্ছেন, ‘‘সিউড়ি থেকে প্রতি বছর বড় বাজেটের একাধিক বরাত আসে। এক একটা ডাকের সাজের জন্য ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছি। এ বার মূলত পারিবারিক দুর্গাপুজোর জন্য যে ডাকের সাজের বরাত মিলেছে তা সাড়ে তিন থেকে পাঁচ হাজারের মধ্যেই।’’ দুবরাজপুরের গৌতম মালাকার, উত্তম মালাকাররা বলছেন, ‘‘কাজ অনেক কম। কালী পুজোয় তারের তৈরি মুকুটের চাহিদা বাড়বে ধরে নিয়ে সেই কাজাটাও এক সঙ্গে চলছে।’’ একই বক্তব্য রাজনগর মালিপাড়ার বাসিন্দা অর্জুন মালাকার, মদন মালাকাররা। তাঁদের কথায়, ‘‘এ বার মন খুব খারাপ।’’

বোলপুরের সুরুলের দুই শোলা শিল্পী দীনবন্ধু মালাকার ও প্রশান্ত মালাকার বলছেন, ‘‘দুর্গাপুজোর সময় বাজার জমত সবচেয়ে বেশি। বছরের আয়ের একটা বড় অংশই দুর্গাপুজো থেকে ওঠে। ডাকের সাজ তৈরি তো আছেই বিভিন্ন বস্ত্র বিপণিতে এই সময় শোলা দিয়ে তৈরি দুর্গামূর্তির চাহিদা থাকে। এ বার সেটাও পাইনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja Daker saaj Artist Dubrajpur Birbhum
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE