Advertisement
E-Paper

Durga Puja 2021: সম্বল গিয়েছে, পুজোয় বিষাদ বানভাসি গ্রামে

সোনামুখীর ডিহিপাড়ার রাঙামাটিতে গিয়ে দেখা গেল, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মণ্ডপ জোড়া দেওয়ার কাজ চলছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২১ ০৭:০৯
গড়েরডাঙা গ্রামে।

গড়েরডাঙা গ্রামে। নিজস্ব চিত্র।

শরতের আকাশে আগমনী সুর বাজলেও গ্রামগুলোর চারদিকে চাপা বিষাদের আবহ। ফি বছরে এ সময়ে মণ্ডপ-বাঁধা হাতগুলো আজ ভাঙা ঘর জোড়া দিতে ব্যস্ত। সাম্প্রতিক অতিবৃষ্টিতে ভিটে-মাটি হারানো বাঁকুড়ার পাত্রসায়র, সোনামুখী ব্লকের বানভাসি মানুষগুলোর কাছে এ যেন এক ‘অন্য পুজো’।

শালি নদীর জলে ভেসেছিল পাত্রসায়রের হামিরপুর, নারায়ণপুর, বেলুট-রসুলপুর পঞ্চায়েতের বেশ কিছু গ্রাম। জলবন্দি অবস্থায় এক কাপড়ে বাড়ি ছেড়ে শিবিরে আশ্রয় নিতে হয়েছিল অনেককেই। এখন জল নেই। তবে পড়ে আছে ভিটেবাড়ির কঙ্কাল। হামিরপুরের নেত্রখণ্ড গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, ভাঙা দেওয়ালে মাটি বুলোচ্ছেন বাসুদেব বাগদি। বললেন, “বন্যায় ঘর ভেঙেছে। সকাল থেকেই মাটি মাখা, বাঁশ কেটে আনা অনেক কাজ। এ বারে আর পুজো দেখা হবে বলে মনে হয় না।” ঘর সারাতে ব্যস্ত নারায়ণপুর পঞ্চায়েতের পাঁচপাড়া গ্রামের কার্তিক বাগদীও জানান, ফি বছরে হদল নারায়ণপুর রাজবাড়ির পুজো দেখতে যান। এ বারে তা মুশকিল মনে হচ্ছে।

বেলুট-রসুলপুর পঞ্চায়েতের গড়েরডাঙা গ্রামেও এক ছবি। বাঁশের কঞ্চি আর মাটি দিয়ে বাড়ির দেওয়াল তোলার চেষ্টা করছিলেন রবি হাজরা, ভাদু হাজরারা। জানালেন, গত বছরেও এ সময়ে বাড়ির ছেলেমেয়েরা পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে মণ্ডপ তৈরি করা দেখত। আর এ বারে চারপাশটাই পাল্টে গিয়েছে। ছেলেমেয়েদের নতুন জামা কিনে দিয়েছেন? কষ্টে হেসে বললেন, “মাথা গোঁজার ঠাঁইটা আগে হোক। তবে তো জামাকাপড়!” বেলুট গ্রামের চন্দনা সাঁতরাও জানান, ঘরের অবস্থা খুব খারাপ। অন্যের বাড়িতে রাত কাটাতে হচ্ছে। এ অবস্থায় পুজোর আনন্দটাই আর নেই।

বেলুট গ্রামের গ্রাম ষোলোআনার পুজোর আয়োজকদের অন্যতম হেমন্ত গোস্বামী বলেন, “নিয়মরক্ষার পুজো হবে। গ্রামের অনেকের শেষ সম্বলটুকুও গিয়েছে। তাই জাঁকজমক কমিয়ে অসহায়দের পাশে থাকার
চেষ্টা করছি।”

জলে ভেসেছিল সোনামুখীর দামোদর তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকাও। সোনামুখীর ডিহিপাড়ার রাঙামাটিতে গিয়ে দেখা গেল, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মণ্ডপ জোড়া দেওয়ার কাজ চলছে। গ্রামের বাসিন্দা অশোক কড়ে, শিবু সিকদারেরা বলেন, “নেহাত পুজো বন্ধ করা যাবে না। তাই করতে হচ্ছে। ফসল গিয়েছে। জিনিস গিয়েছে। বাচ্চাদের নতুন জামাকাপড়ও হয়নি। সরকারি অনুদানে কোনও রকমে পুজো করছি।”

পাত্রসায়র, সোনামুখীর বন্যা-কবলিত গ্রামগুলিতে অনেকে এখন নতুন-পুরনো জামাকাপড় বিলি করছেন। পাত্রসায়রের তেমনই এক জনের কথায়, “ওই সব গ্রামের মানুষগুলোর মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। বন্যার সময়ে এক কাপড়ে ঘর ছেড়েছেন। জামাকাপড় নেওয়ার লাইনে চোখে-মুখে স্পষ্ট যন্ত্রণার ছাপ।”

Durga Puja 2021 flood
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy