তিন মাস বেতন না পাওয়ার অভিযোগে উপাচার্যের গাড়ি আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখালেন বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী এবং স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। বিক্ষোভের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরেই দীর্ঘক্ষণ আটকে রইলেন উপাচার্য থেকে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রী এবং জাতীয় বিজ্ঞান দিবস আলোচনা চক্রে যোগ দিতে আসা বিজ্ঞানীরা। এই ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য করলেন উপাচার্য।
২০২০ সাল থেকে বোলপুরের শিবপুর মৌজায় বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয় পথ চলা শুরু করে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক দিলীপ কুমার মাইতিকে নিয়োগ করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, তিন মাস ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মী, নিরাপত্তারক্ষী, শিক্ষাকর্মীদের বেতন দেওয়া হচ্ছে না। স্থানীয়দের বাদ দিয়ে বাইরের লোকজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন পদে নিয়োগ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। তাতে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় রায়পুর-সুপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান নিখিল বাছারকে।তাঁদের সঙ্গে বিশ্ববাংলার কয়েক জন অস্থায়ী কর্মীও যোগ দেন। সেই সময় বিক্ষোভে মুখে আটকে পড়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্যের গাড়ি। তাঁর সঙ্গেই ছিলেন জাতীয় বিজ্ঞান দিবসের আলোচনা চক্রে যোগ দিতে আসা বেশ কয়েক জন বিজ্ঞানী। তাঁদের গাড়ি আটকেও দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখানো হয়। এই ভাবে ঘণ্টা দুয়েক চলার পরে উপাচার্যের আশ্বাসে বিক্ষোভ ওঠে।
উপপ্রধান বলেন, ‘‘যাঁরা এখানে কাজ করছেন, তাঁরা তিন মাস ধরে বেতন পাচ্ছে না। উপাচার্য স্থানীয় লোকদের বাদ দিয়ে বাইরে থেকে লোক নিয়ে নিয়োগ করছেন। সেই কারণেই আমাদের এই আন্দোলন।” যদিও উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। অস্থায়ী কর্মী শুকুর আনসারি বলেন, “তিন মাস ধরে আমাদের বেতন হয়নি। বারবার আমরা উপাচার্যকে জানিয়েছি। তিনি কিছু করেননি। তাই আজ আন্দোলন নামতে আমরা বাধ্য হয়েছি।”
ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দাবি, উচ্চ শিক্ষা দফতর থেকে টাকা আসেনি বলে তাঁদের বেতন আটকে গিয়েছিল। তিনি কর্মীদের আশ্বস্ত করেছিলেন, সপ্তখানেকের ভিতর বেতন দিয়ে দেওয়া হবে। তার পরেও এই আন্দোলন ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মনে করেন তিনি। উপাচার্য বলেন, ‘‘বিষয়টি আমি মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহকে জানাই। উনি একাধিক বার আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা লোকজনকে ফোন করা সত্ত্বেও তাঁরা ফোন ধরেননি।’’ এ বিষয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে সব জানাবেন বলেও উপাচার্য জানান।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)