তিনি ‘ডক্টর’ নন, ‘মিস্টার’। প্রেসক্রিপশন বলছে, ‘ওয়েলনেস অ্যান্ড হেল্থ কোচ’! ভেলোরের ‘চিকিৎসক’ পরিচয়ে স্বাস্থ্যশিবির বসিয়ে রোগী দেখছিলেন বীরভূমের এক গ্রামে। গ্রামবাসীর সন্দেহ হতে খবর যায় পুলিশে। আপাতত সেই চিকিৎসক ও তাঁর দুই সঙ্গীকে
আটক করেছে পুলিশ। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটে ময়ূরেশ্বরের গোয়ালা গ্রামে।
ভেকধারী ভুয়ো চিকিৎসক নিয়ে রাজ্য এখন সরগরম। উত্তরবঙ্গ তো বটেই, খাস কলকাতা থেকেও গ্রেফতার হয়েছে ভুয়ো চিকিৎসক। অন্যের রেজিস্ট্রেশন নম্বর হাতিয়ে চুটিয়ে প্র্যাকটিস করছেন, এমন ঘটনাও নজরে এসেছে সিআইডি-র। সেই আবহে সংযোজন বীরভূমের এই ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত চিকিৎসকের বাড়ি হুগলির রাজহাটে। মল্লারপুর ফাঁড়িতে রেখে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তাঁর দুই সঙ্গীর এক জনের বাড়ি রামপুরহাটের হাঁসনে, অন্য জনের হুগলিতেই।
গোয়ালা গ্রামের শিশির মণ্ডল, অনুপম দাস, টুটুল বাদ্যকররা জানাচ্ছেন, তিন-চার দিন ধরে দুই যুবক ভেলোরের চিকিৎসককে দিয়ে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো হবে বলে আশপাশের বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার চালায়। ৩০ টাকার বিনিময়ে শতাধিক লোকের নামও নথিভুক্ত করে। শিশিরবাবুর কথায়, ‘‘শিবিরে গিয়ে আরও ১২০ টাকা দিলে গ্রামে বসেই বছরভর সপরিবার স্বাস্থ্য পরীক্ষার সুযোগ, ন্যায্যমূল্যের ওষুধ দেবে বলেও জানানো হয়েছিল।’’
সেই মতো রবিবার গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে স্বাস্থ্যশিবির শুরু হয়। ওই গ্রামের অব্যয় দাস, ডালিম সিংহরা বলেন, ‘‘গিয়ে দেখি লাইনে একশোর উপরে লোক দাঁড়িয়ে। প্রত্যন্ত গ্রামে ভেলোরের ডাক্তারের আসার কথা শুনে সন্দেহ হয়।
শিবিরে গিয়ে ডাক্তারের নাম, পরিচয় জানতে চাই।’’
তাঁদের দাবি, একটু চেপে ধরতেই ‘ডাক্তার’ অস্বস্তিতে পড়ে যান। আমতা আমতা করে জানান, হাইকোর্টের নির্দেশে এসেছেন। কখনও আবার জানান, তাঁরা বিদেশি কোম্পানির লোক। তখনই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ গিয়ে তিন জনকে আটক করে। বাজেয়াপ্ত করা হয় ল্যাপটপ, টেথোস্কোপ, ওজন মাপার-যন্ত্র সহ কিছু ওষুধও।
ময়ূরেশ্বরের ওই গ্রাম থেকে দু’কিলোমিটার দূরেই রয়েছে মল্লারপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। মেরেকেটে দশ কিলোমিটার গেলেই রামপুরহাট জেলা হাসপাতাল। সেখানে গেলেন না কেন? শিবিরে চিকিৎসা করাতে যাওয়া রোগীরা বলছেন, ‘‘গ্রামেই শিবির। তার উপরে কম পয়সায় ভেলোরের ডাক্তার। তাই সেখানেই দেখানোর সিদ্ধান্ত নিই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy