Advertisement
২২ মে ২০২৪
Success Of Chandrayan-3

চাঁদ ছোঁয়ায় ভূমিকা পিকুরও, গর্বিত পরিবার

পিকু ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘ইসরোর’ বিজ্ঞানী তথা চন্দ্রযান-৩-এর অপারেশন ডিরেক্টর (মিশন সফটঅয়্যার)। এই সফ্‌ট ল্যান্ডিং-এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল সৌম্যজিতের।

সৌম্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাবা মাও পরিজনেরা উল্লসিত।

সৌম্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাবা মাও পরিজনেরা উল্লসিত।

দয়াল সেনগুপ্ত 
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২৩ ০৫:১০
Share: Save:

বুধ-সন্ধ্যায় ভারত পৌঁছে গেল চাঁদের মাটিতে। কলকাতার নিউটাউনের আবাসনে গোটা দেশের সঙ্গে এই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় ছিলেন বীরভূমের সিউড়ি ১ ব্লকের রায়পুর গ্রামের দেবদাস ও নন্দিতা চট্টোপাধ্যায়ও। কারণ, তাঁদের সন্তান সৌম্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় ওরফে পিকু ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘ইসরোর’ বিজ্ঞানী তথা চন্দ্রযান-৩-এর অপারেশন ডিরেক্টর (মিশন সফটঅয়্যার)। এই সফ্‌ট ল্যান্ডিং-এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল সৌম্যজিতের।

এ দিন সাফল্যের খবর আসতেই পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে আনন্দে মেতেছিলেন চট্টোপাধ্যায় দম্পতি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ শেষ হতেই এল সৌম্যজিতের ফোন। ফোনের ও-পার থেকে ঝরে পড়ল ছেলের উচ্ছ্বাস, ‘‘দেখলে মা-বাবা তোমরা? খুব আনন্দ হচ্ছে। রাতে ছবি পাঠাচ্ছি।’’

মা নন্দিতা বলে উঠলেন, ‘‘হ্যাঁ পিকু দেখলাম।’’ বাবা বললেন, ‘‘দেখলাম তোকে। যখন তুই সফল অভিযানের পরে হাত মেলাচ্ছিস, তখন ছবিও তুলে রেখেছি।’’ সংক্ষিপ্ত কথোপকথন।

পরে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ওই দম্পতি বললেন, ‘‘অনুভূতি প্রকাশের ভাষা নেই। খুব আনন্দ হচ্ছে। মনে হচ্ছে জীবন সার্থক হল। চন্দ্রযানের চাঁদের মাটি ছোঁয়ার মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে পারে গোটা দেশের মানুষের সঙ্গে আমরাও গর্বিত। সেটা আরও বেশি করে আমাদের ছেলে এই মিশনের একটি গুরুত্বপূ্র্ণ ভূমিকা নিয়েছে বলে।’’

দেবদাস চট্টোপাধ্যায় এক জন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ককর্মী। নন্দিতা এক সময়ে সংবাদমাধ্যমে ছিলেন। বর্তমানে তাঁরা কলকাতায় থাকলেও গ্রামের সঙ্গে জুড়ে আছে গোটা পরিবার। সকাল থেকেই উদগ্রীব ছিলেন তাঁরা। জানালেন, মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার দুপুরেও ছেলের সঙ্গে কথা হয়। সৌম্যজিৎ জানিয়েছিল, তখনও পর্যন্ত সব নিখুঁত পরিকল্পনামাফিক চলছে। কোনও সমস্যা হবে না। সেটাই হল।

তবে শুধু চন্দ্রযান-৩ নয় বীরভূমের ভূমিপুত্র সৌম্যজিৎ জুড়ে ছিলেন চন্দ্রযান-২, চন্দ্রযান -১ এমনকি মঙ্গল অভিযানের সঙ্গেও। বাবার ব্যাঙ্কের চাকরির সুবাদে প্রথম থেকেই জেলার বাইরে থেকেছেন সৌম্যজিৎ। প্রথমে চিত্তরঞ্জন, পরে সল্টলেকের স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক করার পরে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বি-টেক করেন তিনি। পরে একটি সর্বভারতীয় পরীক্ষায় ভাল র‌্যাঙ্ক করে ২০০৭ সালে ইসরোতে যোগ দেন। একের পর এক (রিমোট সেন্সিং স্পেসক্র্যাফট মিশন) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর। এখন বেঙ্গালুরুতে থাকেন স্ত্রী সুপর্ণার সঙ্গে।

বাবা মা বলেন, ‘‘ছেলেবেলায় ময়ূরাক্ষী নদী ঘেঁষা গ্রামের রাতের আকাশে চাঁদ ও তারা দেখে মহাকাশের প্রতি ভাললাগা তৈরি হয়েছিল ওঁর। এখনও সময় পেলে ছুটে যায় গ্রামে। পড়াশোনায় তুখোড় তো ছিলই। ভালবাসে পাশ্চাত্য ও ভারতীয় রাগ সঙ্গীত।’’

দেশের গর্বের মুহূর্তের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি ভাবে জুড়ে থাকা ছেলের জন্য পরিবারের পাশাপাশি গর্বিত রায়পুর গ্রামের বাসিন্দারাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ISRO Suri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE