Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ছেলেকে আছড়ে খুন, ধৃত বাবা

রেল শহর আদ্রার পাশে বহড় গ্রামে এক চিলতে ঘরে স্ত্রী রুবি ও ছেলে সঞ্জয়কে নিয়ে থাকতেন রহিম। জন্ম থেকেই মূক ও বধির ছিল সঞ্জয়। কাচের শিশি বোতল ফেরি করে সংসার চলত।

ধৃত: রহিম শেখ। নিজস্ব চিত্র

ধৃত: রহিম শেখ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আদ্রা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৭ ০৩:২০
Share: Save:

বছর চারেকের মূক ও বধির ছেলেকে আছড়ে খুন করার অভিযোগ উঠল বাবার বিরুদ্ধে। স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে রহিম শেখ নামে ওই ব্যক্তিকে শুক্রবার দুপুরে গ্রেফতার করেছে আদ্রা থানার পুলিশ। আজ, শনিবার তাঁকে রঘুনাথপুর আদালতে তোলা হবে।

রেল শহর আদ্রার পাশে বহড় গ্রামে এক চিলতে ঘরে স্ত্রী রুবি ও ছেলে সঞ্জয়কে নিয়ে থাকতেন রহিম। জন্ম থেকেই মূক ও বধির ছিল সঞ্জয়। কাচের শিশি বোতল ফেরি করে সংসার চলত। আয়ের বেশির ভাগটাই নেশা করে রহিম উড়িয়ে দিতেন। অভিযোগ, মদ্যপ হয়ে তিনি প্রায়ই ছেলের উপরে অত্যাচার করতেন। গায়ে সিগারেটের ছ্যাঁকা পর্যন্ত দিতেন। স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ছেলেকে নিয়ে মাস চারেক আগে রুবি চলে গিয়েছিল ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরে, বাপের বাড়িতে। দিন দশেক আগেই স্বামীর কাছে ফিরেছিলেন তিনি।

এ দিন রঘুনাথপুর সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে রুবি বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার দুপুরে মত্ত হয়ে বাড়ি ফিরে ও ছেলের উপরে চড়াও হয়। কথা বলার জন্য বাচ্চাটাকে জোর করছিল। বাধা দিতে গেলে আমাকেও ধরে মারে। হঠাৎ দেখি ছেলেটাকে তুলে আছাড়ে ফেলল।’’ তিনি জানান, আছাড় মারার পরেও কোনও হেলদোল ছিল না রহিমের। খেয়ে দেয়ে কাশীপুরে সাপ্তাহিক হাটে চলে যান। সঞ্জয় তখন যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। পড়শিদের সাহায্যে রুবি ছেলেকে রঘুনাথপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান।

ততক্ষণে বিকেল হয়ে গিয়েছে। হাসপাতালের সুপার সোমনাথ দাস বলেন, ‘‘শিশুটিকে যখন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তখনই অবস্থা যথেষ্ঠ খারাপ ছিল। চিকিৎসক সাধ্যমত চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বাঁচানো সম্ভব হয়নি।” সন্ধ্যায় মৃত্যু হয় সঞ্জয়ের। পুলিশও জানিয়েছে, শিশুটির মুখ, গলা, গাল এবং হাতের অনেক জায়াগায় পোড়া চিহ্ন রয়েছে।

কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পুরুলিয়ার নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও সঞ্জয় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ে হেরে গেল। এ দিন দুপুরে বহড় গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, রহিমদের ঘরটি তালাবন্ধ। পড়শিরা জানান, নেশা করে ফিরে রহিম রোজই ছেলে ও স্ত্রীকে মারধর করতেন। পড়শিদের সঙ্গেও তাঁর সদ্ভাব ছিল না।

এ দিন রুবি বলেন, ‘‘বোবা কালা ছেলেটাকে চোখের সামনে মেরে ফেলল। ওর কড়া শাস্তি হোক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE