Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Lockdown

সুপার স্পেশালিটি চত্বরে বিয়ের প্রীতিভোজ

এখন বেলা ১০টার পরেই দোকানপত্র বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই দুপুরে ভাত খাওয়ার সুযোগ অনেক রোগীর আত্মীয়ের হচ্ছে না।

খাবার পরিবেশন করছেন অতনু। বিষ্ণুপুরে। নিজস্ব চিত্র।

খাবার পরিবেশন করছেন অতনু। বিষ্ণুপুরে। নিজস্ব চিত্র।

অভিজিৎ অধিকারী
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২১ ০৬:৪৪
Share: Save:

কড়াকড়িতে অল্প কয়েকজনকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানের ছাড় দিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু সে সব না করে মন্দিরে বিয়ে করে হাসপাতালে আসা রোগী ও তাঁদের পরিজনদের নিয়ে প্রীতিভোজ সারলেন বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা অতনু দত্ত। সেখানে না এলেও স্বামীর এই কাজে সমর্থন জানিয়েছেন স্ত্রী বর্ণালী দত্ত। শনিবার দুপুরে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্য নিয়ে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল চত্বরে রোগী ও পরিজনদের হাতে ভাত, ডাল, সব্জি, মাংস, চাটনি তুলে দিলেন অতনু।

এখন বেলা ১০টার পরেই দোকানপত্র বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই দুপুরে ভাত খাওয়ার সুযোগ অনেক রোগীর আত্মীয়ের হচ্ছে না। সেখানে অতনু খাবার নিয়ে এগিয়ে আসায় তাঁরা খুশি। প্রায় ৩০০ জন সেখানে মধ্যাহ্নভোজ সারেন। বিষ্ণুপুর শাঁখারিবাজার মনসাতলার বাসিন্দা অতনু ঘুরে ঘুরে দোকানে বেকারির বিস্কুট ও পাউরুটি বিক্রি করেন। আয় বিরাট কিছু না হলেও বছরের বিভিন্ন সময়ে তিনি স্বল্প উদ্যোগেও মানুষের পাশে এ ভাবেই দাঁড়ান বলে জানিয়েছেন। কখনও স্বাধীনতা দিবসে দুঃস্থ শিশুদের পোশাক কিনে দিয়েছেন, কখনও বইপত্র কিংবা ভাইঝির জন্মদিনে শিশুদের শুকনো খাবার দিয়েছেন।

তাই নিজের বিয়ের অনুষ্ঠানও অন্য ভাবে পালন করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন তিনি। অতনুর কথায়, ‘‘গত বছরের সেপ্টেম্বরে মেদিনীপুরের সিজুয়ার মেয়ে বর্ণালীকে বিয়ের কথাবার্তার সময়েই বলেছিলাম, ঘটা করে লোকজন খাওয়াব না। হাসপাতালের বাইরে থাকা রোগী ও তাঁদের পরিজনদের খাওয়াব। তাঁরা গোড়ায় আপত্তি তুললেও মেনে নিয়েছিলেন। কড়াকড়ির মধ্যে বিয়ে হওয়ায় নিজের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দেরও ডাকিনি।’’ তিনি জানান, অক্ষয় তৃতীয়ার দিন ১৪ মে মেদিনীপুরে সিজুয়ার একটি মন্দিরে বিয়ে সেরেছেন। বাড়িতে বৌভাতের কোনও অনুষ্ঠান তিনি করেননি। খরচ বাঁচিয়ে এ দিন বাইরে থেকে রান্না করিয়ে এনে হাসপাতালে খাবার বিলি করেছেন।

সংসারে এমনিতেই টানাটানি। তার উপরে কড়াকড়ির জেরে অতনুর ব্যবসা মার খাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে স্বামীর এই উদ্যোগে পাশে দাঁড়িয়েছেন বর্ণালী। তিনি বলেন, ‘‘ভাবিনি, এ ভাবে আমার বিয়ের প্রীতিভোজ হবে। তবে এই সঙ্কটের সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমরা খুশি।”

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষে সুশান্ত মাল বলেন, “শহরের অনেকেই নিজেদের বিশেষ অনুষ্ঠানের খরচ বাঁচিয়ে হাসপাতালে দুপুরে খাবারের ব্যবস্থা করছেন। আমরা তাঁদের আয়োজনে সাহায্য করছি। সবাই মিলে যেন একটা পরিবার হয়ে উঠেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bankura Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE