সারারাত পাহাড় জ্বলেছে। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে যাওয়ার পরে শুক্রবার দুপুর নাগাদ শুশুনিয়া পাহাড়ে আগুন নিভল। দুপুর ১২টা নাগাদ বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে ২ বছর পর আবার শুশুনিয়া পাহাড়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে বন দফতর। আপাতত কয়েক দিনের জন্য পাহাড়ে নজরদারি ব্যবস্থা কড়া করা হচ্ছে। মোতায়েন করা হচ্ছে বনকর্মী এবং পুলিশের যৌথ দলকে। আপৎকালীন পরিস্থিতি সামাল দিতে তৈরি রাখা হচ্ছে প্রশিক্ষিত বনকর্মীদের বিশেষ বাহিনীকেও।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা নাগাদ বাঁকুড়ার শুশুনিয়া পাহাড়ে অগ্নিকাণ্ডের খবর মেলে। স্থানীয় বাসিন্দারা দেখেন পাহাড়ের পূর্ব অংশে ঝরা পাতায় আগুন জ্বলছে। ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে পাহাড়ের ওই অংশ। তড়িঘড়ি বন দফতরে খবর দেন স্থানীয়রা। বনকর্মীরা ‘ব্লোয়ার’ নিয়ে পাহাড়ের গায়ে পড়ে থাকা ঝরা পাতার স্তুপ সরিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আগুন বাগে আসেনি। উল্টে পাহাড়ের উপরের দিকে দ্রুত ছড়িয়ে যায় আগুন। সন্ধ্যার পর থেকে পাহাড়ের উপরের অংশে হাওয়ার বেগ বেশি থাকায় তা ভয়াবহ আকার নেয়। শুধু ঝরা পাতা নয়, পাহাড়ের গায়ে থাকা বড় গাছগুলিতেও আগুন লেগে যায় এবং ধীরে ধীরে দাবানলের চেহারা নিতে শুরু করে। পরিস্থিতি কঠিন হচ্ছে বুঝতে পেরে দমকল ডাকা হয়। কিন্তু ঘটনাস্থলে গেলেও পাহাড়ের খাড়া ঢাল বেয়ে উঠতে পারেনি দমকলবাহিনী। তাই গভীর রাতে আরও ৪০ জন বনকর্মীকে ‘ব্লোয়ার’-সহ পাহাড়ে ওঠানো হয়। তাঁদের ক্রমাগত চেষ্টায় শুক্রবার সকালে দিকে আগুন ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসে।
আরও পড়ুন:
আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর কড়াকড়ি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে বন দফতর। রাজ্য বন দফতরের মুখ্য বনপাল (কেন্দ্রীয় চক্র) সিঙ্গরম কুলানডাইভেল বলেন, ‘‘শুশুনিয়া পাহাড়ে আগুন পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়েছে। কিন্তু আমাদের কাজ এখনও শেষ হয়নি। আগামিদিনে এই রকমের অগ্নিকাণ্ড ঠেকাতে আমরা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে কুড়ি জনের একটি দল গঠন করছি। ওই দলটি দিন রাত পাহাড়ে নজরদারি চালাবে। একই সঙ্গে আগামিদিনে এমন অগ্নিকাণ্ড হলে যাতে দ্রুত তা নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সে জন্য ১০০ জন বনকর্মীকে নিয়ে একটি বাহিনীও তৈরি রাখা হচ্ছে।’’