অজ্ঞতা বা অসর্তকতায় ‘ওটিপি’ বলে টাকা খোয়ানোর অভিযোগ অনেক। কিন্তু সময়ে পুলিশের দ্বারস্থ হলে যে সেই টাকা ফেরতও পাওয়া যায়, তা বুঝলেন বীরভূমের লোকসঙ্গীত শিল্পী তথা গীতিকার নারায়ণ কর্মকার। খয়রাশোলের লোকপুর থানা এলাকার ভাড্ডি গ্রামের বাসিন্দা ওই লোকশিল্পীকে সাত মাস পর দু’দফায় ৮৯ হাজার টাকা ফিরিয়ে দিল লোকপুর থানা। মঙ্গলবার লোকপুরের ওসি নীলোৎপল মিশ্র শিল্পীর হাতে চেক তুলে দেন।
গত বছর ৩ অগস্ট চোখে অস্ত্রোপচার করে চিকিৎসকের কাছ থেকে ফেরার সময় দুষ্কৃতীদের ফাঁদে পড়ে টাকা খুইয়েছিলেন নারায়ণবাবু। তিনি জানান, সে দিন সত্যিই তাঁর কাছে ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের ফোন এসেছিল। কেন ডাকছেন, জানতে খয়রাশোলের রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কেও গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ব্যাঙ্ক থেকে ফেরার পথে ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের নাম করে ফের অন্য একটি ফোন আসে। তবে সেটি আদতে ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের ছিল না। ছিল প্রতারকের। আর সেই ফাঁদে পড়ে এটিএম কার্ডের নম্বর ও ফোনে আসা ‘ওটিপি’ বলে দিতেই ৮৯ হাজার টাকা তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেয় দুষ্কৃতীরা। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের দ্বারস্থ হন শিল্পী। নারায়ণবাবু জানান, ওই ঘটনার কিছুদিন আগেই তাঁর চোখে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তখনও দু’চোখ কালো চশমায় ঢাকা ছিল। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ এটিএম বা পিন জানতে চায় না, তা তিনি জানতেন। কিন্তু প্রথম বার ব্যাঙ্ক ম্যানেজার ঋণ দিতে চেয়ে ফোন করেছিলেন। চোখে ভাল দেখতে না পাওয়ায় দ্বিতীয় ফোন যে ম্যানেজারের ছিল না, সেটা বুঝতে পারেননি। তাঁর কথায়, ‘‘সে দিন সব কেমন গোলমাল হয়ে গিয়েছিল।’’ তবে পুলিশ হারানো টাকা ফেরানোয় খুশি শিল্পী। পুলিশ বলছে, অসাবধানতায় টাকা হারালেও নারায়ণবাবু একটা সঠিক কাজ করেছিলেন। ঘটনার পর পরই পুলিশের কাছে সব কথা জানান। জেলার সাইবার সেলের সাহায্য ঝাড়খণ্ড থেকে ৪ প্রতারকের একটি দলকে ধরে পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকেই উদ্ধার হয়েছে টাকা।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কী ভাবে তদন্ত এগিয়েছে? পুলিশ জানায়, দুষ্কৃতীরা প্রথমে একটি অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকিয়ে সেটা ‘ওয়ালেট ট্রান্সফার’ করে অনলাইনে কেনাকাটা করত। নারায়ণবাবুর কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পরে দেখা যায়, প্রতারকেরা যে অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকিয়েছিলস সেখান থেকে তখনও ১৯ হাজার টাকা সরায়নি। সঙ্গে সঙ্গে ওই অ্যাকাউন্ট ‘সিজ’ করে দেওয়া হয়। ঘটনার দিন কয়েকের মধ্যেই ১৯ হাজার টাকা দেওয়া হয় নারায়ণবাবুকে। পরে চার জনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে বাকি টাকা আদায় করা হয়েছে। এখনও ঘটনার মূল চক্রী সিউড়ি সংশোধনাগারে বন্দি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy