ফাগুনের আঁচে পুড়ছে জঙ্গল। রোদের দাপট একটু বাড়তেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল বান্দোয়ানের একাধিক জঙ্গলে। বুধবার বান্দোয়ান ২ বনাঞ্চলের পচাপানী, বান্দোয়ানের ১ বনাঞ্চলের কাঁটাপাহাড়া, বুড়িগোড়া, শিরিষগোড়ার শঙ্করডুংরি, বাঁধুডাবু ও যমুনা বনাঞ্চলের গোলকাটা, লটঝরনা-সহ মানবাজার ২ বনাঞ্চলের কালাঝর্নার জঙ্গলে আগুন লাগে।পচাপানী গ্রামে আগুন ছড়িয়ে পড়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন বান্দোয়ান ২ বনাঞ্চলের কর্মীরা। ‘ফায়ার ব্লোয়ার’ দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা চলে। আগুন ছড়িয়ে পড়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয় বনকর্মীদের। স্থানীয়রা জানান, কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভানো গেলেও ততক্ষণে পুড়ে গিয়েছে কয়েক হেক্টর জঙ্গলের গাছ। একই ভাবে কাঁটা পাহাড়-সহ অন্য জঙ্গলগুলিতেও এ দিন ‘ফায়ার ব্লোয়ার’ দিয়ে আগুন নেভানো হয়। জেলা বন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “আগুন খবর পেয়েই পদক্ষেপ করা হচ্ছে। যৌথ বন পরিচালন কমিটির সদস্যদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।”
পুড়েছে হুড়া থানার ফুফুন্দির পলাশ জঙ্গলের বিস্তীর্ণ এলাকা। স্থানীয়দের দাবি, কিছু মানুষের উদাসীনতায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। এই মরসুমে ওই এলাকায় প্রচুর পর্যটক আসেন। তাঁদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বন দফতরের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
এ দিন সকালে আগুন লাগে সারেঙ্গার তাঁতিডাঙ্গা জঙ্গলেও। স্থানীয় এক শিক্ষক আশিস
লোহার জানান, তিনি স্কুলে যাওয়ার পথে প্রথম জঙ্গলে আগুন দেখতে পেয়ে এলাকার পরিবেশপ্রেমী সংগঠনকে খবর দেন।
তাঁরা প্রাথমিক ভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ওই সংগঠন জানিয়েছে, প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
সম্প্রতি ওই এলাকার খামানী, শালডহরা, কাড়ভাঙার জঙ্গলেও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এই পরিস্থিতিতে আগুন নেভানোর কাজে বন দফতরের তৎপরতার অভাবের অভিযোগ তুলছেন স্থানীয়দের একাংশ। বেড়োবাইদ
গ্রামের বাসিন্দা তথা বন সুরক্ষা কমিটির সদস্য
তারাশঙ্কর মহাপাত্র দাবি করেন, “আগুন নেভাতে স্থানীয় বন দফতরের তৎপরতা কম।”
যদিও অভিযোগ মানেননি সারেঙ্গা দক্ষিণ রেঞ্জের আধিকারিক আসমানা খাতুন। তিনি জানান, তাঁতিডাঙা জঙ্গল-সহ এলাকার বিভিন্ন জঙ্গলে আগুনের খবর পেয়ে এ দিন ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছে গিয়েছেন দফতরের কর্মীরা। এ বিষয়ে ধারাবাহিক সচেতনতা প্রচারও চলছে বলে দাবি তাঁর।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)