বসন্ত উৎসবে সোনাঝুরি হাটে দোল খেলা নিষিদ্ধ করল বন দফতর। সূত্রের খবর, ভিড় ও পরিবেশ দূষণ এড়াতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন দফতর। এ নিয়ে প্রচারও শুরু করেছে বন দফতর। তাদের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে এলাকার পরিবেশপ্রেমী ও শান্তিনিকেতনবাসী।
শান্তিনিকেতনের অন্যতম আকর্ষণ সোনাঝুরির খোয়াইয়ের হাট। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও শিল্পীরা এ হাটে বিভিন্ন সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেন। আগে এ হাট কেবল শনিবার বসত। তার পরে প্রতি দিন বসা শুরু হয়। সম্প্রতি কিছু দিন হল এ হাট আবারও ছ’দিন বসতে শুরু করেছে।
প্রতি দিনই দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা এ হাটে ভিড় জমান। উৎসবের দিনগুলিতে তিল ধারণের জায়গা থাকে না। গত বছরে বিশ্বভারতী বসন্ত উৎসব করেনি। কিন্তু বিশ্বভারতীর আদলে বোলপুর শহরের নানা জায়গায় বসন্ত উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়েছিল বোলপুর, শান্তিনিকেতনে।
পর্যটকদের একটি বড় অংশ ভিড় জমিয়েছিলেন সোনাঝুরি খোয়াইয়ের হাটে। সেখানে দেদার রং খেলা, নাচ, গান, আড্ডায় শামিল হয়েছিলেন তাঁরা। অভিযোগ, এর ফলে, প্লাস্টিক, শালপাতার বাটি, কাগজের ঠোঙা, চিপসের প্যাকেট, জলের বোতল, আবিরের প্যাকেটের মতো আবর্জনায় ভরে উঠেছিল হাট চত্বর।
এ বারও বিশ্বভারতী জানিয়ে দিয়েছে দোলের দিন তারা বসন্ত উৎসব করবে না। ১১ মার্চ বসন্ত উৎসব করবে বিশ্বভারতী। সেখানেও বহিরাগতদের প্রবেশাধিকার থাকছে না। তাই এ বারও সোনাঝুরি হাটে পর্যটকদের ভিড় জমবে বলে আশঙ্কা করছিলেন অনেকেই। সে ভিড় এড়াতেই এ বার সোনাঝুরি হাটে দোল খেলা নিষিদ্ধ করল বন দফতর। এ মর্মে বন দফতরের তরফে নির্দেশিকা জারি করে সোনাঝুরি হাটে ব্যানার ও ফেস্টুন দেওয়া হয়েছে। বন দফতরের প্রচারে উল্লেখ করা হয়েছে, সোনাঝুরিতে রং খেলা, গাড়ি পার্কিং, ড্রোন ওড়ানো বা ভিডিয়োগ্রাফি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পর্যটকদের পলাশ িনধন না করতে বার্তা দিয়েও এ দিন শোভাযাত্রা করেন পরিবেশপ্রেমীরা। তবে এ দিনও সোনাঝুরি হাটে পলাশের মালা বিক্রি হতে দেখা গিয়েছে। পর্যটকেরাও তা দেদারে কিনেছেন।
জেলা বনাধিকারিক রাহুল কুমার বলেন, “বনাঞ্চলের মধ্যে কখনওই এ ধরনের উৎসবের অনুমতি আমরা দিতে পারি না। প্রকৃতিকে বাঁচাতে এ সিদ্ধান্ত।’’ হাট কমিটির সম্পাদক তন্ময় মিত্র বলেন , “বন দফতরের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত। দোলের দিন হাটে রং খেলা না হলেও পর্যটকদের জন্য হাট খোলা থাকছে।” পরিবেশপ্রেমী সুমিত্রা খান বলেন, “এটাকে বন্ধ করাই দরকার ছিল। তাই বন দফতর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা একদম ঠিক সিদ্ধান্ত।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)