Advertisement
E-Paper

এখানে পড়তে এসে এমন হবে ভাবিনি

প্রিয়াদের আদত বাড়ি ইঁদপুরে। বাবা প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায় ব্যবসায়ী। কয়েক মাস আগে বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাইস্কুলে ভর্তি হওয়ার পরে মায়ের সঙ্গে প্রিয়া চলে আসে জুনবেদিয়ায়। ওই বাড়িটি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৩৩
আতঙ্ক: মা উমা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রিয়া।  সোমবার জুনবেদিয়ায়। নিজস্ব চিত্র

আতঙ্ক: মা উমা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রিয়া। সোমবার জুনবেদিয়ায়। নিজস্ব চিত্র

নাগাড়ে বৃষ্টি হয়ে চলেছে। স্কুলে যাওয়ার জো নেই। বাড়িতে বসে জলখাবার খাচ্ছিল প্রিয়া। হঠাৎ পায়ের তলার মাটি দুলে উঠল। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল আস্ত বাড়িটা।

প্রিয়া ভেসে যাচ্ছিল। এলাকার কিছু যুবক ঝুঁকি নিয়ে উদ্ধার করেছেন তাকে। কিন্তু ঘটনার পরে কিছুতেই ধাতস্থ হতে পারছে না একাদশ শ্রেণির ছাত্রীটি। কথা বলতে বলতে ডুকরে কেঁদে উঠছে। বলছে, ‘‘শহরে পড়তে এসে এমন অভিজ্ঞতা হবে স্বপ্নেও ভাবিনি। ওই লোকগুলি না থাকলে হয়তো তলিয়েই যেতাম।’’

প্রিয়াদের আদত বাড়ি ইঁদপুরে। বাবা প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায় ব্যবসায়ী। কয়েক মাস আগে বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাইস্কুলে ভর্তি হওয়ার পরে মায়ের সঙ্গে প্রিয়া চলে আসে জুনবেদিয়ায়। ওই বাড়িটি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে।

এ দিন সকাল থেকেই জোড়ের জল উপচে বাড়ির সামনে দিয়ে বইছিল। তার মধ্যেই হঠাৎ বিপর্যয়। বাড়িতে তখন তাঁরা দু’জন ছাড়া আর কেউ ছিল না। বেলা প্রায় ১১টা। বৃষ্টি ধরে এসেছে। প্রিয়ার মা উমা বলেন, ‘‘মাথার উপরে হঠাৎ একটা চাঙড় খসে পড়ে। ধীরে ধীরে আস্ত বাড়িটা ঢলে পড়ছিল।’’ তিনি জানান, তখন ঘরের গেট বন্ধ ছিল। তড়িঘড়ি বেরোতে গিয়ে তাঁরা সেটা খুলতে পারছিলেন না। নিমেষে জলের তোড়ে লোহার গেট ভেঙে যায়। তাঁরা বেরিয়ে আসেন।

উমা বলেন, ‘‘আমি সাঁতার জানি। কিন্তু মেয়ে জানে না। সেই মুহূর্তে আমি একটা কাঠ পেয়ে আঁকড়ে ধরি। মেয়েও কিছু একটা ধরে কোনও মতে ভাসছিল।’’ কোনও ভাবে ভাসতে ভাসতে পাড়ের কাছাকাছি আসেন উমা। প্রিয়া আসতে পারছিল না। চোখের সামনে এই দৃশ্য দেখে জলে ঝাঁপিয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দা মানস বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশ্বজিৎ লাই, প্রদীপ বিশ্বাস, সমর পরামানিক, সুপ্রদীপ দাস, টেলু মালেরা। সমর বলেন, ‘‘আমি গিয়ে প্রিয়াকে ধরি। মাথার উপরে টিভির কেবল ঝুলছিল। সেটা কোনও মতে ছিঁড়ে ওকে বেঁধে সবাই মিলে উপরে তুলি।’’

ঘটনার পরে শহরেই এক আত্মীয়ের বাড়িতে মেয়েকে নিয়ে চলে গিয়েছেন উমা। বাড়ির মালিক ডেকরেটর ব্যবসায়ী। এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। ফোন বন্ধ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর আগে বাড়িটি তৈরি হয়েছে।

ওই এলাকায় জোড়াখালের মুখে বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ি গজিয়ে উঠেছে। এতে খালের গতিপথ রুদ্ধ হচ্ছে বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।

Girl Water Flood Bankura
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy