প্রতীকী ছবি।
রাজ্য সরকারের ধার্য করে দেওয়া ভর্তি ফি না মানার প্রতিবাদে স্কুলে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে আটক হলেন এসইউসি-র ছাত্র সংগঠন ডিএসও-র সদস্যেরা। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়া মিশন গার্লস স্কুলে। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সাত জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ডিএসও-র জেলা সম্পাদক অভ্রনীল মণ্ডল, জেলা সভাপতি সাবিরুদ্দিন ভুঁইয়া, জেলা নেত্রী প্রতিমা মাহাতো।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়া চলছিল। স্কুলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির জন্য ১২৬৫ এবং কলা বিভাগের জন্য ৬৬৫ টাকা করে ফি নেওয়া হচ্ছে। সরকারি নির্দেশ মোতাবেক ল্যাব নিয়ে পড়তে গেলে ২৯৫ এবং নন-ল্যাব ছাত্রছাত্রীদের জন্য ২৫০ টাকা ভর্তি ফি নেওয়ার কথা। মিশন গার্লস স্কুলে এই নিয়ম মানা হচ্ছে না অভিযোগে ডিএসও-র নেতা-সদস্যেরা স্কুলে ঢুকে পড়ে প্রথমে প্রধান শিক্ষিকার কাছে কৈফিয়ত চান। পরে আরও বেশি সংখ্যক সদস্য-সমর্থক জড়ো হয়ে স্কুলে বিক্ষোভ জুড়ে দেন। স্কুলের অফিসঘরেও ঢুকে পড়েন তাঁরা। ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ করতে ক্যাশিয়ারের ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ।
পরিস্থিতি বুঝে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অবিজিতা চৌধুরী বাঁকুড়া সদর থানায় ফোন করেন। পুলিশ স্কুলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। অভ্রনীলের বক্তব্য, “রাজ্য সরকারের নির্দেশ না মানাটা অন্যায়। আমরা তারই প্রতিবাদ করেছি মাত্র। আমাদের উপর বলপ্রয়োগ না করে পুলিশের উচিত ওই স্কুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।’’
অবিজিতাদেবীর অবশ্য দাবি, “আমাদের স্কুল মিশনারি পরিচালিত। ফলে পরিচালন সমিতির সঙ্গে আলোচনা করেই আমরা ভর্তি ফি ধার্য করি। স্কুল পরিদর্শককে বলেছিলাম, লিখিত ভাবে আমাদের রাজ্য সরকারের ধার্য করা ভর্তি ফি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হোক। কিন্তু উনি তা দিতে পারেননি।’’ তাঁর আরও দাবি, সরকারি প্রকল্পের সুবিধা মিশন গার্লস তেমন একটা পায় না। ফলে স্কুল পরিচালনা করার জন্য যে টাকা প্রয়োজন, সেই অনুযায়ীই ছাত্রী পিছু ভর্তির ফি ধার্য করা হয়েছে। অভিভাবকেরাও এ নিয়ে কোনও আপত্তি জানাননি। কিন্তু, এ দিন প্রতিবাদের নামে কার্যত স্কুলে ঢুকে ‘গুন্ডামি’ করেছেন ডিএসও-র সদস্য-সমর্থকেরা বলে প্রধান শিক্ষিকার দাবি। অভিযোগ অস্বীকার করে এসইউসি-র জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য স্বপন নাগ বলেন, “প্রতিবাদীরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করছিলেন। অথচ পুলিশ তাঁদের সঙ্গে আসামি সুলভ আচরণ করেছে।’’
এ দিন বিকেল পর্যন্ত অবশ্য ঘটনা নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি স্কুল কর্তৃপক্ষ। জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) পঙ্কজ আচার্য বলেন, “সরকারের ধার্য করে দেওয়া ভর্তি ফি নিতে হবে বলে সব স্কুলকেই জানানো হয়েছে। তার পরেও কেন ওই স্কুল বেশি টাকা নিচ্ছে, তা নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করব।’’ মিশনারি পরিচালিত স্কুল হওয়ায় মিশন গার্লস স্কুল সরকারি নির্দেশ মানতে বাধ্য কিনা, সে বিষয়ে স্পষ্ট ভাবে কিছু জানাতে পারেননি পঙ্কজবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy