অসন্তোষ: শিক্ষকদের কর্মবিরতি। হেতমপুরের কলেজে। নিজস্ব চিত্র
মিলিত ভাবে বুধবার প্রতীকী কর্মবিরতি পালন করলেন হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁদের অভিযোগ, কলেজে ভর্তির বেনিয়ম নিয়ে শিক্ষকদের একাংশ প্রতিবাদ করায় মঙ্গলবার কিছু ছাত্রের হাতে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে এক শিক্ষককে। তারই প্রতিবাদে এ দিনের কর্মবিরতি বলে দাবি শিক্ষকদের। এ দিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত তাঁরা কোনও ক্লাস নেননি। যদিও ছাত্রেরা শিক্ষককে হেনস্থার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের দাবি, কলেজে সিসিটিভি রয়েছে। ঠিক কী হয়েছে, সেই ফুটেজ খতিয়ে দেখলেই স্পষ্ট হবে।
শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, মঙ্গলবার অনার্সের ক্লাস চলাকালীন ক্লাস থেকে ডেকে বের করে এনে বাংলা শিক্ষক তপন গোস্বামীকে হেনস্থা করেন কলেজের জনা পনেরো ছাত্র। তাঁদের দাবি ছিল, ছাত্রভর্তির বেনিয়ম নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের কাছে খবর পৌঁছে দিয়ে কলেজের বদনাম করতে চেয়েছেন ওই শিক্ষক। ছুটে আসেন অন্যান্য শিক্ষকেরা। ছাত্রদের তখনকার মতো নিরস্ত করতে পারলেও ঘটনার মিলিত প্রতিবাদ প্রয়োজন সিদ্ধান্ত নেয় কলেজের টিচার্স কাউন্সিল। বুধবার কর্মবিরতি পালিত হয়। কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা এ দিন আমাকে লিখিত জানিয়েছেন, প্রায়ই ছাত্রদের হাতে তাঁদের হেনস্থা হতে হচ্ছে। এরই প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করছেন। কিন্তু, মঙ্গলবারের হেনস্থার উল্লেখ আলাদা করে নেই।’’
দিন কয়েক আগে অভিযোগ উঠেছিল, অনার্স পাওয়ার জন্য প্রকাশিত মেধা তালিকায় অপেক্ষমান প্রার্থী ও শূন্যপদ থাকা সত্ত্বেও ‘অন্যায়’ ভাবে পাস এবং অন্য অনার্স থেকে পড়ুয়াদের ভর্তি করানো হয়েছে অধ্যক্ষের একটি নোটিসের ভিত্তিতে। সেটা নিয়ে কলেজ পরিচালন সমিতির সদস্য, তপন গোস্বামী অ্যাডমিশন কমিটির আহ্বায়ককে চিঠি লিখে প্রতিবাদ জানানোয় সেই ব্যবস্থায় ছেদ পড়ে। নতুন করে তিনটি মেধা তালিকা প্রকাশিত হয়। এই নিয়ে একটি খবর সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়। তাতেই ছাত্রদের একাংশ খেপে যান বলে দাবি প্রতিবাদী শিক্ষকদের। শিক্ষকদের একটা অংশের অভিযোগ, যেহেতু তপনবাবুর নাম সংবাদ প্রতিবেদনে উল্লেখ ছিল, তাই তাঁকেই কলেজের বদনাম ছড়ানোর অভিযোগ তুলে কিছু ছাত্র মঙ্গলবার হেনস্থা করেন। তপনবাবুর দাবি, সোমবার বাড়ি ফেরার সময়ও ছাত্রদের একাংশ তাঁকে কটূ কথা বলে। এ ভাবে শিক্ষক হেনস্থার ঘটনায় এরপরই শিক্ষকেরা একত্রিত হয়ে প্রতিবাদে শামিল হলেন। কিন্তু তারপরও দোষী ছাত্রদের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেননি।
অধ্যক্ষ অবশ্য দাবি করেছেন, ভর্তি প্রক্রিয়ায় কোথাও কোনও অস্বচ্ছতা নেই। কলেজে অনার্সের সংখ্যা কম। প্রথমেই, মিলিত সিদ্ধান্ত হয়েছিল ৬টি তালিকা প্রকাশিত হবে। সেটা সম্পন্ন হতে দু-একটা ফাঁকা আসন ছিল। অ্যাডমিশন কমিটির সঙ্গে আলোচনা করেই ওই আসনগুলিতে যোগ্যতার ভিত্তিতে কলেজের পাস কোর্সের পড়ুয়াদের ভর্তি করানো হয়েছে। সেটা কলেজে সকলকে জানিয়ে, নোটিস করে। আপত্তি উঠতেই সেটা বন্ধ করে তদন্ত হয়েছে। এই এ দিনের কর্মবিরতিতে কলেজের শিক্ষাকর্মী এবং আংশিক সময়ের শিক্ষকেরা শামিল ছিলেন না বলেও তিনি জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy