E-Paper

গ্যাসের দামে চিন্তায় গৃহস্থ, স্কুল

মূল্যবৃদ্ধিতে ‘নাভিশ্বাস ওঠা’ পরিস্থিতিতে ভরা চৈত্রে সংসারের খরচ সামলানোও দুঃসাধ্য হয়ে উঠল বলে জানাচ্ছেন জেলাবাসীর একাংশ। গৃহস্থ বাড়ির মতো চিন্তায় স্কুল কর্তৃপক্ষও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:৪৪
গ্যাসের সিলিন্ডার পিছু দাম ৫০ টাকা বাড়াল কেন্দ্র।

গ্যাসের সিলিন্ডার পিছু দাম ৫০ টাকা বাড়াল কেন্দ্র। —প্রতীকী চিত্র।

চালের দাম বেড়েছে। এখনও চড়া আনাজের দাম। মশলাপাতির দরও স্বস্তি দিচ্ছে না। এরই মাঝে কাল মধ্যরাত থেকে গ্যাসের সিলিন্ডার পিছু দাম ৫০ টাকা বাড়াল কেন্দ্র। এতে মূল্যবৃদ্ধিতে ‘নাভিশ্বাস ওঠা’ পরিস্থিতিতে ভরা চৈত্রে সংসারের খরচ সামলানোও দুঃসাধ্য হয়ে উঠল বলে জানাচ্ছেন জেলাবাসীর একাংশ। গৃহস্থ বাড়ির মতো চিন্তায় স্কুল কর্তৃপক্ষও।

জেলাবাসী জানান, গরমে আনাজের দাম এমনিতেই বেশি। তার উপরে গ্যাসের দাম বাড়ল। ফলে, গৃহস্থের খরচ বাড়তে চলেছে। পাশাপাশি, মিডডে মিল চালানোও কঠিন হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন নানা স্কুলের শিক্ষকেরা। কয়েক মাস আগেই মিডডে মিলের বরাদ্দ বৃদ্ধির ফলে যেটুকু সুরাহা মিলেছিল, গ্যাসের দাম বাড়ার পরে আগের সমস্যা আবারও ফিরে এল বলেই মনে করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

বাজারে চাল, ডাল, ভোজ্যতেলের দাম বেশ কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। দাম বেড়েছে আনাজেরও৷ সিউড়ির বাসিন্দা এক বেসরকারি সংস্থার কর্মী সৌভিক দত্ত বলেন, “গত কয়েক বছরে জিনিসপত্রের দাম ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। কিন্তু দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বেতন বৃদ্ধি হচ্ছে না। ফলে, ঘরের চাহিদা মেটানো দিন দিন কঠিন হয়ে যাচ্ছে। চাল, তেল, ডিম ইত্যাদি তো ছিলই, এ বার দাম বাড়ল গ্যাসেরও। এ ভাবে চলতে থাকলে কী করব, বুঝতে পারছি না।” আবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরিহারাদের একাংশ মনে করেছেন, এক দিকে, আয়ের অনিশ্চয়তা, অন্য দিকে, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি চাপ বাড়িয়ে দিল। প্রধানমন্ত্রীর উজ্জ্বলা যোজনায় জেলায় অনেকেই গ্যাস নিয়েছিলেন। এ বার সে গ্যাসের দামও বেড়ে যাওয়ায় অনেকে আবার কাঠ ও অন্য জ্বালানি ব্যবহারে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবছেন।

জেলার স্কুলগুলি সূত্রে জানা গিয়েছে, এত দিন মিডডে মিলের বরাদ্দ টাকায় কোনওরকমে ছাত্রছাত্রীদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতেন তাঁরা। গ্যাসের দাম বাড়ার পরে সে তালিকায়ও কাটছাঁট করতে হবে তাঁদের। জেলার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, মিডডে মিলে কোনও দিন কী খাবার দেওয়া হবে তার একটি নির্দিষ্ট তালিকা সরকারের তরফ থেকে স্কুলগুলিকে আগেই দিয়ে দেওয়া হয়। সেই তালিকায় সপ্তাহে এক দিন ডিম এবং বাকি দিনগুলিতে মরসুমি আনাজ ও ডাল দিয়ে পড়ুয়াদের ভাত খাওয়ানোর কথা বলা হয়েছে।

স্কুল সূত্রে খবর, এত দিন এ বাবদ প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের মাথাপিছু ৬ টাকা ১৯ পয়সা এবং ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য মাথাপিছু ৯ টাকা ২৯ পয়সা বরাদ্দ করত সরকার। তবে কয়েক মাস আগে দু’স্তরে বরাদ্দ যথাক্রমে ৭৪ পয়সা ও ১ টাকা ২ পয়সা বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছিল। বরাদ্দ বাড়ায় কিছুটা খুশি হয়েছিলেন শিক্ষকেরা। কিন্তু গ্যাসের দাম বাড়া নিয়ে ফের চিন্তায় তাঁরা।

শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এখনই রান্নার গ্যাসের যা দাম তাতে মাথাপিছু গ্যাসের পিছনেই প্রায় দেড় টাকা চলে যায়। দাম আরও বেড়ে গেলে সেই প্রভাবটা পড়বে খাবারের পুষ্টিগুণ ও পরিমাণের উপরেই।

সিউড়ি ১ ব্লকের কড়িধ্যা যদুরায় মেমোরিয়াল অ্যান্ড পাবলিক ইনস্টিটিউশনের মিডডে মিলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক শুভেন্দু আচার্য বলেন, “মিডডে মিলের বরাদ্দ বৃদ্ধির ফলে খুব বেশি সুরাহা হয়নি। জিনিসের দাম যা বেড়েছে, সেই অনুযায়ী একটা নূন্যতম পরিমাণ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। তবুও টাকা বাড়াতে একটু শান্তি পেয়েছিলাম। কিন্তু গ্যাসের দাম বাড়ার পরে পরিস্থিতি আবারও একই হয়ে গেল। গ্যাসের দাম অনুপাতে বরাদ্দ না বাড়ালে সমস্যা হবেই।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Schools gas Fuel

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy