Advertisement
E-Paper

রাজগ্রামে ঝাঁটা নিয়ে তাড়া জলবাহকদের

রাজগ্রাম বাজার এলাকায় মহিলারা ঝাঁটা নিয়ে তাড়া করলেন জলবাহকদের। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, সেখানকার চারটি সরকারি নলকূপ থেকে পানীয় জল পাওয়া যাচ্ছে না। দু’টি সরকারি কুয়োর জলস্তর নীচে নেমে গিয়েছে। সেই সুযোগ নিয়ে পুকুরের জলে ফটকিরি মিশিয়ে বিক্রি করছেন জলবাহকেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৮ ০১:৫৩
জলাধার: রাজগ্রামে। নিজস্ব চিত্র

জলাধার: রাজগ্রামে। নিজস্ব চিত্র

গরম পড়তেই রাজগ্রামে জলস্তর নীচে নেমে যায় প্রতি বছরই। এ বারও ব্যতিক্রম হয়নি। টাকা দিয়ে জলবাহকদের কাছ থেকে জল কিনে খেতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক দফতরকে জানিয়েও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। তা নিয়ে ক্ষোভ ছিলই। সোমবার ছড়াল উত্তেজনা।

রাজগ্রাম বাজার এলাকায় মহিলারা ঝাঁটা নিয়ে তাড়া করলেন জলবাহকদের। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, সেখানকার চারটি সরকারি নলকূপ থেকে পানীয় জল পাওয়া যাচ্ছে না। দু’টি সরকারি কুয়োর জলস্তর নীচে নেমে গিয়েছে। সেই সুযোগ নিয়ে পুকুরের জলে ফটকিরি মিশিয়ে বিক্রি করছেন জলবাহকেরা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, মাটির ৩৫০ ফুট নীচেও জল মিলছে না। এলাকায় নতুন কোনও গভীর নলকূপ বসাতে গেলে কমপক্ষে দেড় লক্ষ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। যাঁদের সামর্থ রয়েছে তাঁরা নলকূপ বসাচ্ছেন। যাঁদের তা নেই, তাঁদের গ্রামের চালু নলকূপ থেকেই অনেক কষ্টে জল জোগাড় করতে হচ্ছে।

রাজগ্রাম পূর্ববাজার, পশ্চিমবাজার, রাজগ্রাম, আম্বুয়া, গোঁড়শার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পানীয় জলের চরম সঙ্কট ছড়িয়েছে। সমস্যা পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। অভিযোগ, সেখানে পরিশ্রুত পানীয় জল সরবরাহের জন্য ১৯৮৯ সালে ৪ লক্ষ ৫৪ হাজার লিটার ক্ষমতার যে জলাধার তৈরি করা হয়েছিল, পাইপলাইনে ত্রুটির জন্য তাতে শুরু থেকেই বেশি জল উপরে উঠতে পারে না। এর ফলে এলাকায় জলের যোগানও কম থাকে। অভিযোগ, একাধিক বার জেলা প্রশাসন থেকে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর, মুরারই ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে লিখিত ভাবে সমস্যার কথা জানানো হলেও সঠিক পরিষেবা এখনও মেলেনি।

রাজগ্রামের বাসিন্দা গোবিন্দ বিশ্বাস, রাইহান রেজা জানান, পরিশ্রুত পানীয় জল প্রকল্পে কখনও কম ভোল্টেজের সমস্যা থাকে, কখনও জলের পাইপ লাইন ফুটো করে চাষের জমিতে জল নিয়ে য়াওয়া হয়। এ সবের জন্য জলাধারে খুব কম জল জমে।

জল সঙ্কট মেটাতে রাজগ্রামে দু’টি সরকারি কুয়ো তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু এলাকাবাসীর বক্তব্য, জলস্তর নীচে নেমে যাওয়ায় সেগুলি কার্যত অচল। এলাকায় অধিকাংশ সরকারি নলকূপ খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। কার্গিল পাড়ার বাসিন্দাদের কয়েক জনের বাড়িতে থাকা অগভীর নলকূপ থেকে জল সংগ্রহ করতে হচ্ছে।

এলাকার বাসিন্দারা জানান, হাইস্কুলের নলকূপ খারাপ থাকায় পড়ুয়ারাও সমস্যা পড়েছে। রাজগ্রাম এলাকায় সাংসদ উন্নয়ন তহবিলের টাকায় তিনটি জায়গায় ছোট জলাধার গড়ে কল লাগানো হয়েছিল। কিন্তু দু’বছর ধরে ওই জলাধারে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়নি। তাই সেগুলি কোনও কাজে লাগছে না।

জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের রামপুরহাট মহকুমার বিভাগীয় সহকারী বাস্তুকার প্রশান্ত সরকার জানান, রাজগ্রাম জল প্রকল্পের ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইনে ফুটো করে এলাকাবাসীর একাংশ চাষের কাজে জল ব্যবহার করছেন। তাই রাজগ্রামের জলাধারে জল পৌঁছচ্ছে না। তিনি জানান, রাজগ্রাম জল পৌঁছতে আরও একটি প্রকল্পের প্রস্তাব প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন এখনও পাওয়া যায়নি। সে জন্যই রাজগ্রামে পরিশ্রুত পানীয় জলের সমস্যা থেকে গিয়েছে।

Water Crisis Drinking Water Water Suppliers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy