প্রতীকী ছবি।
বাড়িতে স্ত্রী ও বছর দুয়েকের শিশুকন্যা রয়েছে। তার পরেও আসানসোলে কাজ করতে গিয়ে দ্বিতীয়বার বিয়ে করার অভিযোগে প্রথম স্ত্রী-র পরিবার এবং গ্রামের লোকজন বেধড়ক পেটালেন এক যুবককে। বোলপুর থানার নূরপুর গ্রামে মঙ্গলবার রাতের ঘটনা। খবর পেয়ে বোলপুর থানার পুলিশ গিয়ে ওই যুবককে উদ্ধার করে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করায়।
প্রশ্ন উঠছে, যে কোনও ঘটনাতেই সরাসরি আইন হাতে তুলে নিয়ে বেধড়ক মারধর করা হচ্ছে কেন? কেন শুরুতেই পুলিশকে খবর দেওয়া হচ্ছে না? জেলার একাধিক জায়গায় সাম্প্রতিক অতীতে এমন মারধরের ঘটনা সামনে এসেছে। সিউড়িতে মোবাইল চোর সন্দেহে এক যুবককে বেধড়ক মারধর করা হয়েছিল। একই ঘটনা ঘটেছে রামপুরহাটেও। পুলিশের তরফেও আর্জি, এমন কোনও ঘটনা নজরে এসে আগেই তাদের জানানো হোক। যা হওয়ার আইন মেনেই পরে। তার পরেও প্রবণতায় রাশ টানা না গেলে অন্য পথ ভাবতে হবে বলেও মনে করিয়ে দিয়েছেন পুলিশের একাংশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চার বছর আগে নূরপুর গ্রামের সন্দীপ মজুমদারের সঙ্গে ওই একই গ্রামের মেয়ে পিঙ্কি মণ্ডলের বিয়ে হয়। তাঁদের মধ্যে প্রণয়ের সম্পর্ক থাকলেও শেষ পর্যন্ত দুই পরিবারের মত নিয়েই বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই সংসারে নানা কারণে অশান্তি শুরু হয় বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি। পিঙ্কিকে মারধোরও করা হত বলে অভিযোগ। সন্দীপ প্রথমে একটি বেসরকারি সংস্থায় হোমগার্ডের চাকরি করতেন। তাঁর নামে একাধিক অভিযোগ থাকায় সেই চাকরি চলে যায়। পিঙ্কির পরিবারের অভিযোগ, তার পরেই অশান্তি চরমে ওঠে। বছরখানেক আগে অন্য চাকরির সন্ধানে আসানসোলে চলে যান সন্দীপ। সেখানে গিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন।
এই পর্যন্ত সব ঠিকই চলছিল। কিন্তু, কাল হয় দ্বিতীয় স্ত্রী-র সঙ্গে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ছবি পোস্ট করা। সেই ছবিই কোনও ভাবে পিঙ্কির পরিবারের হাতে এসে পৌঁছয়। গ্রামেও জানাজানি হয়। তার পর থেকেই সন্দীপের বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় ছিলেন গ্রামবাসী। এলাকায় ফিরেছে টের পেয়ে মঙ্গলবার তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধোলাই দেন গ্রামবাসী ও পিঙ্কির পরিবারের লোকজন। জুতোপেটাও করা হয়। দীর্ঘ সময় একটি গাছে বেঁধে রাখা হয়। খবর পেয়ে বোলপুর থানার পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে। প্রাথমিক চিকিৎসাও করানো হয়।
সন্দীপের দিদি বনি মজুমদার অবশ্য বলছেন, ‘‘মানুষ মাত্রেই ভুল হয়। তার জন্য এ ভাবে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধোলাই দেওয়ার দরকার ছিল না।’’ যদিও এ বিষয়ে কোনও পক্ষ থেকেই পুলিশকে কোনও লিখিত অভিযোগ করেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy