E-Paper

পোস্টারে নিশানা দুই নেতাকে, দ্বন্দ্বের ছায়া শাসক দলে

অঞ্চল সভাপতি মুন্সি মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলা হয়েছে তিনি মাত্র আট বছরের মধ্যে সামান্য মারুতি ভ্যানের চালক থেকে কী ভাবে বাড়ি, গাড়ি, সম্পত্তি, আমবাগান করে নিয়েছেন তা নিয়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৯
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

এক দিন আগেই দুবরাজপুর বিধানসভার খয়রাশোলে দলের নেতাদের দ্বন্দ্ব ভুলে একসঙ্গে চলার বার্তা দিয়েছিলেন জেলা সভাধিপতি তথা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখ। পরদিন, রবিবারই সেই দুবরাজপুর ব্লকের যশপুরে তৃণমূল অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পোস্টার পড়ল। অঞ্চল সভাপতি মুন্সি মোজাম্মেল হক ছাড়াও নিশানা করা হয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান পরিমল সৌকেও। পোস্টারে দলের নেতৃত্বের কাছে আবেদনও থাকায় অনুমান, এর পিছনে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বই থাকতে পারে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায় এবং কাজল শেখকে উদ্দেশ্য করে লেখা ওই পোস্টারগুলি সাঁটানো ছিল পঞ্চায়েত কার্যালয়ের কাছাকাছি এবং কৃষ্ণনগর মেলা প্রাঙ্গণে। অঞ্চল সভাপতি মুন্সি মোজাম্মেল হক ও উপপ্রধান পরিমল সৌ-এর বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি, দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ তোলা হয়েছে পোস্টারে। লেখা হয়েছে, ‘‘কোনও আলোচনা ছাড়া অঞ্চল সভাপতির রাজত্ব চলছে। এর কি কোনও তদন্ত হবে না? মাত্র দু’জন মিলে পুরো অঞ্চল চালাচ্ছে।’’ কেন পরিমল সৌ-কে ফের উপপ্রধান করা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সঙ্গে কটাক্ষ, ‘‘অন্য কাউকে দিলে যদি ভাগ বেড়ে যায়!’’

অঞ্চল সভাপতি মুন্সি মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলা হয়েছে তিনি মাত্র আট বছরের মধ্যে সামান্য মারুতি ভ্যানের চালক থেকে কী ভাবে বাড়ি, গাড়ি, সম্পত্তি, আমবাগান করে নিয়েছেন তা নিয়ে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয়ে বিপক্ষের প্রার্থীদের ভয় দেখিয়ে নাম প্রত্যাহার করিয়ে দেওয়া নেওয়ার জন্য অঞ্চল সভাপতিকে দায়ী করার পাশাপাশি ‘পকেট ভরতে ঠিকাদারদের সঙ্গে বিশেষ সখ্যের’ অভিযোগ তোলা হয়েছে পোস্টারে। দাদা, দিদি সম্বোধন করে কাজল ও শতাব্দীর প্রতি আর্জি জানানো হয়েছে, ‘‘দয়া করে নিরপেক্ষ তদন্ত করান।’’

তৃণমূলেরই একটি সূত্র মনে করছে, এ কাজ দলেরই বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর। তবে তাঁদের হেনস্থা করার জন্যই কেউ এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে পোস্টার দিয়েছেন বলে দাবি মোজাম্মেল ও পরিমলের। পরিমল বলছেন, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ। তা না হলে দল টিকিট দিত না।’’ ২০১৩ সালে প্রথমবার ওই পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় আসার পর উপপ্রধান হন পরিমল। পরের বার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য এবং ভূমি কর্মাধ্যক্ষ হন তিনি। তারপর থেকেই তিনি নাকি বিপুল সম্পত্তি করেছেন বলে চর্চা। অঞ্চল সভাপতি মোজাম্মেল ঘনিষ্ঠ পরিমলকে ফের উপপ্রধান করায় নিশানা করা হয়েছে বলে শাসক দলের একাংশের মত।

গত বছর অগস্টে এবং ডিসেম্বরেও অঞ্চল সভাপতির বিপুল সম্পত্তি নিয়ে কটাক্ষ করে পোস্টার পড়েছিল। দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে মোজাম্মেলের দাবি ছিল, সম্পত্তি তাঁর পারিবারিক সূত্রে পাওয়া। রবিবারও তিনি একই দাবি করেছেন। যদিও দলের একটি সূত্রে খবর, এমন অভিযোগ উঠায় মোজাম্মেল হকের স্ত্রী, জেলা পরিষদের প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ জয়নাব খাতুনকে এ বার জেলা পরিষদের প্রার্থী করেনি দল।

সভাধিপতি কাজল শেখ বলছেন, ‘‘যে বা যাঁরা ওই অভিযোগ করছেন তাঁদের বলব, সরাসরি কোর কমিটির কাছে অভিযোগ করুন। নাম গোপন থাকবে। অভিযোগের তদন্ত কোর কমিটি দলগতভাবে করে রাজ্যকে জানাবে। যে নির্দেশ আসবে তেমন ব্যবস্থা। এটুকু বলব দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC dubrajpur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy