Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

গাছে কাঁঠাল, তবু দাম নেই

বিষ্ণুপুর ব্লকের মড়ার পঞ্চায়েতের মড়ার, কুলুপকুর, মাজুরিয়া, ধবনি, কুলাইজুড়ি, ভালুখাঁ, লাউ বাগান, এক নম্বর ক্যাম্প— এই সব গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ কাঁঠাল চাষের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন।

ভরন্ত: বিষ্ণুপুরের কুলুপুকুর গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

ভরন্ত: বিষ্ণুপুরের কুলুপুকুর গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৭ ০২:১৭
Share: Save:

অর্ধেক দাম হেঁকেও খদ্দের মিলছে না। তাই এ বার ফলন ভাল হলেও চিন্তায় বিষ্ণুপুরের কাঁঠাল চাষিরা।

বিষ্ণুপুর ব্লকের মড়ার পঞ্চায়েতের মড়ার, কুলুপকুর, মাজুরিয়া, ধবনি, কুলাইজুড়ি, ভালুখাঁ, লাউ বাগান, এক নম্বর ক্যাম্প— এই সব গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ কাঁঠাল চাষের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন। ওই এলাকায় গেলে চোখে পড়ে গাছ বেয়ে রয়েছে বহু কাঁঠাল। এত দিন হাতির উপদ্রবে কাঁঠাল চাষিরা আতঙ্কে থাকতেন। হাতিদের অন্যতম প্রিয় খাবার কাঁঠাল। সেই টানে রাতে এই সব গ্রামে ঢুকে হাতির পাল কাঁঠাল সাবার করে যেত। এ বার কিন্তু হাতিদের ঠেকিয়ে দিয়েছে বন দফতর। কিন্তু এ বার কাঁঠাল ফললেও দাম না পেয়ে হতাশ ওই সব এলাকার চাষিরা।

কুলুপুকুর গ্রামের তপন পাত্র কাঁঠাল নিয়ে বাজারে যাওয়ার সময় বলেন, ‘‘আয়তন অনুযায়ী ২০ থেকে ২০০ টাকা অবধি কাঁঠালের দাম হয়। কিন্তু এ বার অর্ধেক দামও পাচ্ছি না।’’ তাঁর আশঙ্কা, গত বছর তাঁরা কাঁঠাল বিক্রি করে যে টাকা ঘরে তুলেছিলেন, এ বার তার অর্ধেকও আসবে না।

সাধারণত অম্বুবাচী থেকে উল্টো রথ পর্যন্ত কাঁঠালের ভাল বাজার থাকে। বিষ্ণুপুর বাজার থেকে শুরু করে রামসাগর, ওন্দা, গড়বেতা, রোড চন্দ্রকোণা, মেদিনীপুর, আসানসোল, আরামবাগ, কোতুলপুরে কাঁঠাল যায়। কিন্তু এ বার এই সব বাজারেও দাম নেই।

কাঁঠাল চাষ করে তাই কুলুপুকুর গ্রামের হপন হেমব্রম, মঙ্গল সোরেন ও মড়ারের নূর ইসলাম, আক্কাস খানদের বক্তব্য, ‘‘কাঁঠালের আয়ের উপর আমাদের সারা বছরের সংসার খরচ নির্ভর করে। কিন্তু এ বার যা পরিস্থিতি তাতে কী ভাবে আগামী দিন কাটবে ভেবে পাচ্ছি না।’’

বগডোহরা গ্রাম থেকে কাঁঠাল ব্যবসায়ী খড়শেদ মল্লিক, রামসাগরের ব্যবসায়ী শ্যামল দাসরা জানান, এ বার অত্যাধিক গরম ও টানা বৃষ্টির অভাবে কৃষিকাজ ভাল হচ্ছে না। সব্জির দামও তেমন নেই। সব মিলিয়ে গ্রামীণ মানুষের হাতে টাকার অভাব রয়েছে। ক্রেতাদের অনেকের মতে। ঠিক মতো বৃষ্টি না হওয়ায় কাঁঠালের আয়তন ও স্বাদও ভাল হয়নি। বিষ্ণুপুর বাসস্ট্যান্ডে সকাল থেকে ২০টি কাঁঠাল নিয়ে বসেছিলেন ফুলমণি সোরেন। আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, ‘‘এ বার একদমই বিক্রি নেই। বড় কাঁঠাল দূরে থাক, ছোট কাঁঠালেরও দাম পাওয়া যাচ্ছে না।’’

বন দফতর জানাচ্ছে, বিদ্যুতের তারের বেড়া দিয়ে, পরিখা কেটে ওই এলাকায় হাতিদের যাওয়া অনেকটাই ঠেকিয়ে দেওয়া গিয়েছে। চাষিরা এ বার তাই কাঁঠাল বাইরে রফতানির স্থায়ী পথ খুঁজছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jackfruit Market Price down কাঁঠাল
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE