Advertisement
E-Paper

সাড়ে ৮ টাকার পুজোই পৌঁছেছে পঁচিশ হাজারে

সাড়ে আট টাকাতেই একসময় সাঙ্গ হত পুজো। যার মধ্যে প্রতিমা তৈরির খরচই ছিল দেড় টাকা!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৬ ০১:০৪
সাঁইথিয়ার মুরাডিহির কালী প্রতিমা।

সাঁইথিয়ার মুরাডিহির কালী প্রতিমা।

সাড়ে আট টাকাতেই একসময় সাঙ্গ হত পুজো। যার মধ্যে প্রতিমা তৈরির খরচই ছিল দেড় টাকা!

সে দিন গিয়াছে। বছর ষাটেক আগের সেই পুজোর অঙ্ক আর মেলে না। সাড়ে আট টাকার পুজো এখন প্রায় পঁচিশ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। এমন ছবি প্রায় সব পুজোবাড়িতেই। তবে এ হিসাব সাঁইথিয়ার মুরাডিহি গ্রামে ভাণ্ডারীদের কালী পুজোর। পরিবারের দাবি, তিনশো বছরেরও বেশি সময় ধরে পুজো হয়ে আসছে।

কী ভাবে শুরু হল এই পুজোর?

মুরাডিহি গ্রামের ভাণ্ডারী পরিবারের অরুণ ভাণ্ডারী, বরুণ ভাণ্ডারীরা জানালেন, ঠিক কবে থেকে এই পুজো শুরু হয়েছে তার দিনক্ষণ তাঁরা জানেন না। তবে শোনা যায় বর্গী আমলে এই বামা কালীর পুজো হত এখনকার কলেজ হস্টেলের পিছনে। সেখানেই মুরাডিহি গ্রাম ছিল। বর্গীদের অত্যাচারে গ্রাম ক্রমশ দক্ষিণ দিকে সরে আসতে থাকে। পরে মুরাডিহি গ্রামে বাসতি গড়ে উঠলে সেখানেই পুজো শুরু হয়। পুজোর বয়স নয় নয় করে তিনশো বছরেরও বেশি সময়ের। লোকশ্রুতি, সেই সময় পরিবারের কোনও এক সদস্যকে মা স্বপ্নাদেশ দেন দু’ই পুকুরের মাঝখানে পঞ্চমুন্ডির আসন আছে। সেখানেই কার্তিক মাসের দীপান্বিতা অমাবস্যার দিন কালী মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করার। সেই থেকেই চলে আসছে এই পুজো।

পুজোর সেই প্রাচীন হিসেব খাতা। ছবি: অনির্বাণ সেন

বরুণবাবু বলেন, ‘‘পরিবারের সদস্যদের সম্মিলিত আর্থিক অনুদানেই এখনও পুজো হয়। এখন পর্যন্তও কোনও শরিকি ভাগ হয়নি এ পুজোর। ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত আমার বাবা সনৎ ভাণ্ডারী সরকারি অনুদান হিসাবে ১৭ টাকা করে পেয়েছেন। কিন্তু বাবা মারা যাবার পরে আমরা সরকার থেকে আর কোনও অনুদান তুলিনি।’’

একসময় এই পুজোকে কেন্দ্র করে কবিগান, আলকাপ, পঞ্চরস প্রভৃতি হতো। এ ছাড়াও খেউড় হতো গ্রামের বাইরে। প্রথা অনুযায়ী দুর্গাপুজোর পর ত্রয়োদশীর দিন থেকেই মায়ের মূর্তি তৈরির কাজ শুরু হয়। পারিবারিক রীতি অনুযায়ী বাজারের কেনা মালা মায়ের গলায় পরানো হয় যায় না। তাই পরিবারের মেয়ে বউরাই মালা সহ অনান্য সাজের জিনিস তৈরি করেন। শাক্ত মতে হওয়া এই পুজোয় এখনো বলিদান প্রথা চালু রয়েছে। ‘‘ঠিক রাত বারোটার সময় ঘট ভরে এসে পুজো শেষে সূর্যদয়ের আগে ঘট বিসর্জন করতে হয়,’’ বলছিলেন পরিবারের এই প্রজন্মের দুই বৌমা শর্মিলা ভাণ্ডারী ও পমি ভাণ্ডারীরা।

kali Puja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy