Advertisement
E-Paper

আস্থা রাখুন, বার্তা পুরনোদেরও

পুরুলিয়ায় সভাধিপতির কুর্সিতে কাকে বসানো হবে, তা নিয়ে গত ক’দিন ধরেই জল্পনার ফানুস ফুলছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সভাধিপতি পদে সুজয়বাবুকেই বেছে নিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৪৭
সভায় সুজয় ও শান্তিরাম। ছবি: সুজিত মাহাতো

সভায় সুজয় ও শান্তিরাম। ছবি: সুজিত মাহাতো

দলের পুরনো দিনের কর্মীদের সম্মান দিতে হবে— বারবার এ কথা বলেছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই কথা শুনিয়েছেন দলের যুব সভাপতি তথা তৃণমূলের পুরুলিয়ার জেলা পর্যবেক্ষক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দলের জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূল নেতা কেপি সিংহ দেওয়ের সঙ্গী সেই সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ বার জেলা প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদে বসিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সেই বার্তাই আরও জোরাল ভাবে দিল বলে মনে করছেন কর্মীদের একাংশ। জেলার রাতনীতি নিয়ে সচেতন মানুষজনের মতে, সুজয়বাবুকে সভাধিপতির পদ দিয়ে পুরনো নেতা-কর্মীদের প্রতি বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।

বুধবার সভাধিপতির দায়িত্ব নেওয়ার পরেই সুজয়বাবু বলেন, ‘‘দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বারবার বলছেন নিষ্ক্রয় হয়ে পড়া দলের পুরনো কর্মীদের দলের কাজে ফের ফিরিয়ে আনতে। আমি সভাধিপতির পাশাপাশি দলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট। নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া পুরনো কর্মীরা যাতে দলের কাজে ফের অংশগ্রহণ করেন, সেটা নিশ্চিত করার কাজে গুরুত্ব দেব।”

বস্তুত, পুরুলিয়ায় সভাধিপতির কুর্সিতে কাকে বসানো হবে, তা নিয়ে গত ক’দিন ধরেই জল্পনার ফানুস ফুলছিল। দলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর একাংশ চেয়েছিলেন, এ বার প্রথম জেলা পরিষদে জেতা এক সদস্যকে সভাধিপতি করতে, অন্যদিকে দলের একটা বড় অংশ চাইছিলেন সভাধিপতি হোক দলের কোনও ‘সিনিয়র’ পুরনো নেতা। দু’পক্ষই নিজেদের দাবি জানিয়েছিলেন রাজ্য নেতৃত্বের কাছে।

শেষ পর্যন্ত অবশ্য সভাধিপতি পদে সুজয়বাবুকেই বেছে নিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের একটি সূত্রেই জানা গিয়েছে, সুজয়বাবুর মতো দলের দীর্ঘদিনের নেতাকে সভাধিপতির পদ দিয়ে দলের পুরনো নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া কর্মীদের প্রতি বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই এই দলে আছেন সুজয়বাবু। দলের কর্মীরা জানাচ্ছেন, প্রাক্তন তৃণমূল জেলা সভাপতি কেপি সিংহদেও-র পরে দ্বিতীয় নাম ছিল সুজয়বাবুর। কিন্তু, কিন্তু কংগ্রেস থেকে আসা শান্তিরাম মাহাতোকে পুরুলিয়ার সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকেই দলে কিছুটা গুরুত্ব হারিয়েছিলেন সুজয়বাবু।

কিন্তু, পঞ্চায়েত নির্বাচনের জেলায় আংশিক বিপর্যয় হয়েছে শাসকদলের। বিপর্যয়ের কারণ হিসাবে দলীয় ময়না-তদন্তে অন্যতম কারন হিসাবে উঠে এসেছে গুরুত্ব হারিয়ে দলের পুরনো কর্মীদের বসে যাওয়ার ঘটনা। পাশাপাশি নতুনেরা দলে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেলেও পুরনো কর্মীদের ব্রাত্য করে রাখা হয়েছিল। এ সবই নির্বাচনের ফলে প্রভাব ফেলে। তারপর থেকেই দলে পুরনো নেতা-কর্মীদের যথাযথ গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টি সামনে আসে।

তাই সুজয়বাবু সভাধিপতি হওয়ার দলের পুরনো নেতা-কর্মীদের একাংশ কিন্তু যথেষ্ট খুশি। তার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে, এ দিন জেলা পরিষদে। সুজয়বাবু যখন জেলা পরিষদে ঢুকছেন, তখন বহু পুরনো নেতা-কর্মীকে তাঁকে অভিনন্দন জানাতে দেখা গিয়েছে। তবে তাঁদের দলে নতুন ও পুরনোদের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই বলে দাবি করেছেন সুজয়বাবুই। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা সকলেই তৃণমূলের সৈনিক।” কিন্তু গুরুত্ব না পেয়ে পুরানো কর্মীদের বসে যাওয়ার ঘটনা স্বীকার করে নিয়েছেন নব নির্বাচিত সভাধিপতি। তিনি বলেন, ‘‘আমার দায়িত্বটা মূলত প্রশাসনিক। সকলকে সঙ্গে নিয়ে জেলার উন্নয়নটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আর সেই কাজে অবশ্যই শামিল করা হবে দলের পুরনো দিনের বসে যাওয়া কর্মীদের।”

Purulia TMC Sabhadhipati
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy