ইতিহাস: স্বাক্ষরিত। নিজস্ব চিত্র
শুধু পাঠক পরিষেবা নয়, সাহিত্যচর্চা বিকাশেও সাড়া ফেলেছে কীর্ণাহার রবীন্দ্রস্মৃতি টাউন লাইব্রেরি। শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠিত লেখকদের পাশাপাশি নবীনদের আত্মপ্রকাশের সুযোগ করে দিচ্ছে ওই গ্রন্থাগার। মাসিক সাহিত্যসভার পাশাপাশি প্রকাশিত হচ্ছে পত্রিকাও। ওই গ্রন্থাগারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে লেখক গোষ্ঠীও।
জেলা গ্রন্থাগার দফতর এবং স্থানীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, ১৯৪১ সালে কৃষ্ণগোপাল চন্দ্রের নেতৃত্বে কিছু শিক্ষানুরাগী মানুষের উদ্যোগে কীর্ণাহারে রবীন্দ্র স্মৃতি সমিতি এবং পাঠাগার নামে ওই গ্রন্থাগার স্থাপিত হয়। ১৯৫৮ সালে ওই গ্রন্থাগারটি ‘রবীন্দ্রস্মৃতি সমিতি রুরাল লাইব্রেরি’ হিসেবে সরকারি অনুমোদন লাভ করে। ১৯৮৭ সালে টাউন লাইব্রেরির স্বীকৃতি লাভ করে।
শুরু থেকে ওই গ্রন্থাগার এলাকার ১০/১২টি গ্রামের পাঠকদের বই পড়ার চাহিদা মেটাচ্ছে। গ্রন্থাগার সূত্রেই জানা গিয়েছে, গ্রন্থাগারে বইয়ের সংখ্যা ১৫৯৮২টি। রাখা হয় বিভিন্ন পত্রপত্রিকাও। নথিভুক্ত পাঠকের সংখ্যা ৯৯৫ জন। অধিকাংশই নিয়মিত বই লেনদেন করেন। শিক্ষিকা কান্তা দে, নন্দদুলাল পাত্র, দুর্গাশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়রা জানান, তাঁরা নিয়মিত গ্রন্থাগারে আসেন। ভারপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক রেখা সেনগুপ্ত জানান, মনের খোরাক পাওয়ার জন্যই নথিভুক্ত পাঠক নন, এমন অনেকেও নিয়মিত পাঠাগারে আসেন।
শুধু পাঠক পরিষেবা নয়। সাহিত্যচর্চা বিকাশেও ওই গ্রন্থাগার অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে। ১৯৪৪ সালে পাঠাগারে শুরু হয় মাসিক সাহিত্য সভার আসর। সেই আসরে যোগ দিয়েছেন সজনীকান্ত দাস, শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্নদাশঙ্কর রায়, কুমুদরঞ্জন মল্লিকের মতো প্রথিতযশা কবি-সাহিত্যেরা। ওই সাহিত্য আসরের মুখপত্র হিসেবে ভোলানাথ দত্তের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় হাতে লেখা মাসিক পত্রিকা ‘শমী’। হাতে লেখা ওই পত্রিকা থেকেই বাছাই করা লেখা নিয়ে প্রকাশিত হয় বাৎসরিক মুদ্রিত পত্রিকা।
বিভিন্ন সময় ওই সব পত্রিকায় প্রকাশিত সাহিত্য সভায় যোগ দেওয়া খ্যাতনামা সাহিত্যিকদের হাতে লেখা কবিতা গল্প কিংবা শুভেচ্ছাবার্তা আজও সযত্নে রাখা আছে। পত্রিকার বর্তমান সম্পাদক চাঁদ রায়ের কথায়, ‘‘ওগুলোই তো গ্রন্থাগারের মূল্যবান সম্পদ।’’
মাঝে নানা জটিলতায় কিছু দিন সাহিত্য সভা এবং পত্রিকা প্রকাশ বন্ধ থাকলেও বছর দশেক সেই ধারা অব্যাহত। আজও গ্রন্থাগারের সাহিত্যসভায় লোককবি গণপতি ঘোষ, কবি নাসিম-এ-আলম, শিল্পগুরু অনন্ত মালাকার, রঘুরাজ সিংহদের পাশাপাশি যোগ দেন নবীন লেখক রূপায়ণ ঘোষ, পদ্মাবতী মণ্ডল, আশা হাজরারা। তাঁরা বলছেন, ‘‘গ্রন্থগারের সাহিত্যসভায় নামী লেখকদের সঙ্গে সাহিত্য পাঠ এবং পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত হওয়ায় আমরা লেখালিখির প্রেরণা পাই।’’
গ্রন্থাগার পরিচালন সমিতির সম্পাদক দীপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য জানান, সাহিত্যসভা ছাড়াও গ্রন্থাগারের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সাহিত্য এবং সাংস্কৃতিক চর্চার সুযোগ রয়েছে। ওই সব অনুষ্ঠানেও অনেকে যোগ দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy