Advertisement
E-Paper

লোকারণ্য তারাপীঠ

শনিবার সন্ধ্যা ছ’টা। রামধনু রংয়ের ছটায় রঙিন তারাপীঠ মন্দির। মন্দির থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে জাতীয় সড়কের ধারে মনসুবা মোড়ে আলোকসজ্জায় ফুটে উঠেছে মন্দিরের আদলে গড়ে তোলা সুউচ্চ গেট।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:১৩
ভিড়ে ঠাসা মন্দিরের প্রবেশপথ

ভিড়ে ঠাসা মন্দিরের প্রবেশপথ

দিন না রাত, বোঝাই দায়

শনিবার সন্ধ্যা ছ’টা। রামধনু রংয়ের ছটায় রঙিন তারাপীঠ মন্দির। মন্দির থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে জাতীয় সড়কের ধারে মনসুবা মোড়ে আলোকসজ্জায় ফুটে উঠেছে মন্দিরের আদলে গড়ে তোলা সুউচ্চ গেট। আর একটু দূরের চিলা কাঁদর সংলগ্ন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কংক্রিট গেটে মাতারার মুখ নীল-সাদা আলোয় ঝরে পড়ছে। মনসুবা মোড় থেকে ফুলিডাঙ্গা মোড় পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার রাস্তা এলইডির আলোয় ঝলমলে। দিন না রাত— বোঝাই দায়।

দেদার ব্যবহার প্লাস্টিকের

ঠিক হয়েছিল, কৌশিকী অমাবস্যায় প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কোথায় কি! মন্দির চত্বরেই দেখা গেল সেবাইত, দোকানদারেরা মন্দিরে পুজো দিয়ে বেরিয়ে দর্শনার্থীদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন প্লাস্টিকে মোড়া প্রসাদ। রবিবার সকাল সাড়ে আটটা। তারাপীঠ পালপাড়া। রাস্তার ডিভাইডার সহ রাস্তার ধারে এঁটো শালপাতা পর পর বিছানো। সঙ্গে প্লাস্টিকের জলের গ্লাস।

স্ত্রিনে ‘লাইভ’ আরতি

সন্ধ্যা সাতটা বাজতেই দ্বারকা সেতুতে জায়ান্ট স্ক্রিনে ফুটে উঠল আরতীর দৃশ্য। এই প্রথম মন্দির থেকে ১৫০ মিটার দূরত্বে রয়ে-বসে আরতি দেখলেন দর্শনার্থীরা। সঙ্গে চলল টুকিটাকি খাওয়া। মুড়ি হাতে চপে কামড় দিয়েই কেউ আবার সেই হাত ঠেকিয়ে নিলেন কপালেই।

অনুব্রতর প্রার্থনা

রবিবার দুপুরে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল তারাপীঠে পুজো দেন। স্ত্রী অসুস্থ। নিজেও অসুস্থ। অনুব্রত জানান, দেশ ও দশের এবং পরিবারের মঙ্গল কামনায় এই পুজো। অমাবস্যা লাগতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় মাতারার পুজো দেন। সকালে পুজো দিয়ে যান সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, দুবরাজপুরের বিধায়ক নরেশ বাউড়ি।

ভিড় নাকি ছয় লক্ষ

কেউ বলছেন ছয় লক্ষ। কারও মতে তিন লক্ষ না হয়ে যায় না। রবিবার বিকেল পর্যন্ত কৌশিকী অমাবস্যায় প্রায় ৬ লক্ষ দর্শনার্থীর সমাগম ঘটেছে তারাপীঠে। এমনটাই দাবি বীরভূম জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের। মন্ত্রী তথা তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় একই তথ্য দেন।

বিনি পয়সায় খিচুড়ি

রাত সাড়ে আটটা। দ্বারকা সেতু ঢোকার মুখে রাস্তার ধার। সেখানেই দেখা গেল লম্বা লাইন। কলকাতার এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দর্শনার্থীদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে খিচুড়ির থালা। মাতারার দর্শনে এসে বিনা পয়সার ভোজে তাই ভিড়।

লজের খোঁজে হন্যে

কৌশিকী অমাবস্যা লাগতে তখনও সাড়ে চার ঘণ্টা দেরি। রাত যত বাড়ছে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভিড়। তারাপীঠ ঢোকার মুখে আটলা মোড় থেকে দ্বারকা সেতু হয়ে থানা, তারাপীঠ-রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের অফিস পেরিয়ে পাল পাড়া পর্যন্ত রাস্তার ডিভাইডারে হাজারে হাজারে দর্শনার্থী বসে। মহিলা, শিশুরাও কংক্রিটের ডিভাইডারে বসে আছেন। কেউ এসেছেন বেহালা থেকে কেউ তারকেশ্বর, কেউবা ঝাড়খণ্ড থেকে। তাদের মধ্যে কেউ লজ পাবার আশায় আছেন। বারবার খোঁজ নিচ্ছেন। কেউ হতোদ্যম হয়ে ঠিক করলেন খোলা আকাশের নীচেই রাত কাটিয়ে দেবেন।

Pilgrims Tarapith
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy