ছবিটা বদলাবে কবে? উত্তর খুঁজছেন এলাকার মানুষ।
রেলকেন্দ্রিক বাজার শহর লোহাপুরে যত্রতত্র বড় বড় বাড়ি তৈরি হওয়ার জন্য নিকাশি ব্যবস্থার হাল খুবই খারাপ। নিকাশি নালা যেখানে যেটুকু ছিল, সেটুকুও ক্রমশ দখল হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে রাস্তার উপর জল দাঁড়িয়ে বেহাল দশায় পরিণত হচ্ছে। অন্য দিকে, রেল কর্তৃপক্ষ তার রাস্তা সংস্কার করছেও না। আবার কাউকে করতেও দিচ্ছে না। এর ফলে লোহাপুর রেল স্টেশনের পিছনের রাস্তা, যে রাস্তায় এলাকার মানুষ লোহাপুর হাইস্কুল, নলহাটি ২ ব্লক অফিস, নলহাটি ২ ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, পুলিশ ফাঁড়ি যাতায়াত করেন, সেই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বর্ষাকালে জলমগ্ন হয়ে থাকে। গ্রীষ্মকালে খানাখন্দে যাতায়াত করা যায় না। ওই রাস্তা শীঘ্রই সংস্কারের প্রয়োজন আছে। এ ছাড়াও রেল স্টেশনের পিছনে পোস্ট অফিসের গলির রাস্তা সংস্কারের সঙ্গে রেললাইন থেকে ঝুঁকির বাজার উঠিয়ে দেওয়ার দাবি রাখছি। স্টেশন যাওয়ার রাস্তায় যন্ত্রচালিত ভ্যান গাড়ির দৌরাত্ম্যে সাধারণ বাসিন্দারা বিব্রত। ভ্যানচালকদের দৌরাত্ম্য কমানোর জন্য পুলিশ-প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো উচিত।
মৃণ্ময় মজুমদার, শিক্ষক
শিক্ষার প্রসারে চাই মহিলা কলেজ
শিক্ষা প্রসারের জন্য লোহাপুরে হাইস্কুল, উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় আছে। ব্লকের ৭২টি গ্রাম এবং ৪৮টি মৌজার বাসিন্দাদের উচ্চ শিক্ষার জন্য এলাকায় অবিলম্বে একটি কলেজ দরকার। বিশেষ করে মহিলা কলেজ হলে ভাল হয়। কেননা, রামপুরহাট মহকুমার মধ্যে লোহাপুর এলাকার বাসিন্দাদের হয় রামপুরহাট, নলহাটি, মুরারই, এমনকী মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি, বহরমপুর, জঙ্গিপুর— এই সমস্ত জায়গায় উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য ভর্তি হতে হয়। সে ক্ষেত্রে দূরের কলেজে ছাত্রীদের পড়াশোনা করতে চরম অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সেই জন্য লোহাপুরে একটি কলেজ এবং বিশেষ করে গার্লস কলেজের প্রয়োজন আছে।
গোরাচাঁদ দত্ত, শিক্ষানুরাগী স্থানীয় বাসিন্দা
চাই গণদেবতা, কবিগুরুর স্টপ
নলহাটি–আজিমগঞ্জ রেললাইন সম্প্রতি ডাবল লাইনে সম্প্রসারিত হওয়ার জন্য লোহাপুর হল্ট স্টেশনের শ্রীবৃদ্ধি ঘটেছে। হয়েছে ওভারব্রিজ, প্লাটফর্মও উঁচু হয়েছে। এত কিছুর মাঝে নলহাটি ২ ব্লকের একমাত্র রেল স্টেশন লোহাপুরে গণদেবতা এক্সপ্রেস, কবিগুরু এক্সপ্রেস ট্রেনের স্টপ আজ পর্যন্ত হল না। এর ফলে নলহাটি ২ ব্লকের কয়েক হাজার মানুষকে কলকাতা যাতায়াতের জন্য নলহাটি কিংবা মোরগ্রাম স্টেশনের উপর নির্ভর করে থাকতে হয়। অথচ লোহাপুর স্টেশনে কলকাতা, হাওড়া, শিয়ালদহ যাওয়ার জন্য টিকিট বিক্রি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি, নলহাটি বা মোরগ্রাম স্টেশনের টিকিট বিক্রির প্রায় সমান। এলাকার ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, ছাত্রছাত্রী, চাকরিপ্রার্থী, চিকিৎসক, নিত্যযাত্রী থেকে সমস্ত যাত্রীদের সুবিধার জন্য লোহাপুর স্টেশনে গণদেবতা এবং কবিগুরু এক্সপ্রেসের স্টপ আবশ্যিক। এ ছাড়া লোহাপুর স্টেশন চত্বরে পানীয় জলের ব্যবস্থা, শৌচালয়ের ব্যবস্থার প্রয়োজন আছে। সেই সঙ্গে নলহাটি-আজিমগঞ্জ রেললাইনে রামপুরহাট স্টেশনে বিশ্বভারতী ফাস্ট প্যাসেঞ্জারের সংযোগকারী ট্রেনও দরকার। লাইনে আরও ট্রেন বাড়ানোর প্রয়োজন আছে।
মসিউর রহমান ববি, ব্যবসায়ী
ফাঁড়ি হোক থানা
লোহাপুর থেকে নলহাটির দূরত্ব ১৬ কিলোমিটার। নলহাটি থানা আরও ২ কিলোমিটার দূরে। নলহাটি থানা থেকে পুলিশ কর্মীদের নলহাটি শহর থেকে বেরোতে গেলে নলহাটি রেলগেটের যানজটের মধ্যে পড়তে হয়। তা না হলে ঘুরপথে জগধারী রেল সেতুর তলা দিয়ে তাঁদের আরও ২ কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে আসতে হয়। নলহাটি থানার অধীন নলহাটি ২ ব্লকের শীতলগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত গ্রাম টিঠিডাঙা কিংবা নওয়াপাড়া পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত গ্রাম নিধিয়া এলাকায় কোনও অপরাধের ঘটনা ঘটলে দূরত্বের কারণে পুলিশ সেখানে ঘটনার বহু পরে পৌঁছতে পারে। অন্য দিকে, নলহাটি থানার মধ্যে পড়ে জাতীয় সড়কের উপর বীরভূম–মুর্শিদাবাদ সীমান্তে নাকপুর চেকপোস্ট। সেখানেও জাতীয় সড়কে মোবাইল পেট্রোলিংয়ের জন্য পুলিশ কর্মীদের নলহাটি থানা থেকে ডিউটি দিতে আসতে হয়। সেখানেও দূরত্বের জন্য পুলিশ কর্মীদের কাজে পৌঁছতে অনেক সময় লাগে। এ ছাড়াও লোহাপুরে নলহাটি ২ ব্লকের প্রশাসনিক কার্যালয়, নলহাটি ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র ছাড়াও অনেক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক, অন্যান্য সরকারি অফিস গড়ে উঠেছে। সেই জন্য লোহাপুর পুলিশ ফাঁড়িকে অতি অবশ্যই পৃথক একটি থানায় পরিণত করা উচিত।
মহম্মদ গিয়াসউদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy