এক বধূকে পুড়িয়ে মারায় যাবজ্জীবন হল শাশুড়ি ও দুই ননদের। বেকসুর খালাস হলেন স্বামী ও শ্বশুর। বুধবার বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (৩) সুকুমার সূত্রধর এই রায় দেন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী অরুণ চট্টোপাধ্যায় জানান, ২০০১ সালের ৮ ডিসেম্বর শালতোড়ার পাবড়ার বাসিন্দা চৈতালীর (৩২) সঙ্গে বিয়ে হয় বনকাটির বাসিন্দা দীপক মিশ্রের। বিয়ের পর থেকেই চৈতালীর উপর তাঁর স্বামী, শাশুড়ি বুলা মিশ্র, ও দুই ননদ বাসন্তী মিশ্র ও নয়ন মিশ্র শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাত। এরই মাঝে জানা যায়, চৈতালীকে বিয়ের অন্তত দশ বছর আগে দীপক পুরুলিয়ার এক মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন। শ্বশুরবাড়ির অত্যাচারে ওই মহিলা স্বামীকে ছেড়ে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। চৈতালীকে অবশ্য এ সব কথা আগে জানানো হয়নি। পুরুলিয়ার ওই মহিলা দীপকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। তখনই চৈতালী আগের বিয়ের কথা জানতে পারেন।
এরপর থেকে চৈতালীর সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের অশান্তি আরও চরমে ওঠে। ২০১১ সালের ২৫ জানুয়ারি সকালে চৈতালীর গায়ে তাঁর শাশুড়ি ও দুই ননদ কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। অগ্নিদগ্ধ অবস্থাতেই চৈতালী শ্বশুরবাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। তাঁকে অমরকানন ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। এলাকার লোকেরা ফোনে চৈতালীর বাবা রবিলোচন নায়ককে ঘটনাটি জানান। তিনি সে দিনই গঙ্গাজলঘাটি থানায় জামাই, মেয়ের শাশুড়ি, শ্বশুর, ও দুই ননদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পরে বাঁকুড়া মেডিক্যালে মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে চৈতালী জানান, শাশুড়ি ও দুই ননদে তাঁর গায়ে আগুন দেয়। রাতে হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়। সব অভিযুক্ত গ্রেফতার করলেও তারা জামিনে মুক্ত ছিল।
ওই বছরই ১৪ জুলাই পুলিশ চার্জশিট জমা দেয়। অরুণবাবু জানান, চৈতালীর স্বামী ঘটনার দিন জেলে ছিল। তাঁর শ্বশুর দুর্গাদাস মিশ্রও বাড়িতে ছিলেন না। তাঁরা দু’জনেই এই খুনের ঘটনায় খালাস পান। চৈতালীর শাশুড়ি ও দুই ননদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছ’মাস জেলের নির্দেশ হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy