Advertisement
E-Paper

বধূ খুনে ছ’মাসেই যাবজ্জীবন

স্রেফ সন্দেহের বশে স্ত্রীকে খুন করেছিল স্বামী। বধূ হত্যার ওই মামলায় মাত্র ছ’ মাসেই রায় দিল আদালত। বৃহস্পতিবার ওই মামলায় অভিযুক্ত স্বামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন বোলপুরের অতিরিক্ত জেলা জজ সিদ্ধার্থ রায়চৌধুরী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৫ ০২:১৬

স্রেফ সন্দেহের বশে স্ত্রীকে খুন করেছিল স্বামী। বধূ হত্যার ওই মামলায় মাত্র ছ’ মাসেই রায় দিল আদালত। বৃহস্পতিবার ওই মামলায় অভিযুক্ত স্বামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন বোলপুরের অতিরিক্ত জেলা জজ সিদ্ধার্থ রায়চৌধুরী।

সরকারি আইনজীবী তপনকুমার দে বলেন, “সন্দেহের বশে স্ত্রীকে খুনের দায়ে বুধবারই বিচারক অভিযুক্ত স্বামীকে দোষী সাব্যস্ত করেন। এ দিন যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি অভিযুক্তের পাঁচ হাজার টাকার জরিমানারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।’’

সরকারি আইনজীবী জানান, বছর দশেক আগে নানুর থানার হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা অনিতা থান্দারের সঙ্গে একই থানা এলাকার রানিবাজারের বাসিন্দা পরেশ বারকুনির বিয়ে হয়েছিল। দম্পতির দুই মেয়েও রয়েছে। তপনবাবু বলেন, ‘‘বিয়ের পর থেকেই পাড়া-প্রতিবেশী কারও সঙ্গে কথা বললেই অনিতাকে সন্দেহ করত পরেশ। তা নিয়ে বহু বার কয়েক স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলাও হয়েছে। যা চূড়ান্ত আকার নেয় গত ৩১ জানুয়ারি।’’ অভিযোগ, সন্দেহের বশে ওই দিন গভীর রাতে প্রথমে স্ত্রীকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে পরেশ। এর পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে স্ত্রীর গলা টিপে শ্বাসরোধও করে। ওই ঘটনায় নিহত বধূর বাবা সপ্তম থান্দারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার হয় পরেশ। ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন) ও ৪৯৮ (বধূ নির্যাতন) ধারায় মামলা দায়ের করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর থেকে অভিযুক্ত জেল হাজতে ছিলেন।

“এলাকায় খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন, আমার মেয়ে কী রকম নিষ্পাপ ছিল। ওর কোনও দোষ ছিল না। শুধু মাত্র সন্দেহের বশে জামাই মেয়েকে খুন করে। ন্যায় বিচার মিলেছে। আদালতকে ধন্যবাদ।”

নিহত বধূর বাবা-মা

ঘটনা হল, ওই মামলায় ৯০ দিনের মধ্যেই আদালতে চার্জশিট জমা দেন নানুর থানার তদন্তকারী অফিসার। বোলপুরের এসিজেএম আদালত থেকে গত ৫ জুন ওই মামলা যায় বিচারক রায়চৌধুরীর এজলাসে। তপনবাবু বলেন, “গত ১৭ জুন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয়। গত ১৬ জুলাই থেকে মামলার শুনানি শুরু হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ ও সওয়াল-জবাব চলে ২৭ তারিখ পর্যন্ত। ঘটনার ময়না-তদন্তকারী চিকিৎসক প্রিয়তোষ ঘোষ, নিহতের বাবা সপ্তম থান্দার, মা শিলা থান্দার-সহ মোট ১২ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে আদালত।’’ তিনি জানান, অভিযুক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে সন্দেহাতীত ভাবে স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। বুধবার রায় ঘোষণার পরে এ দিনই বিচারক ওই সাজার নির্দেশ দেন। দোষী স্বামী রায়ের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে উচ্চ আদালতে আবেদন করতে পারবেন।

এ দিকে, ছ’ মাসের মধ্যেই মেয়ের খুনীর সাজা ঘোষণায় স্বাভাবিক ভাবেই খুশি অনিতাদেবীর বাবা-মা। এ দিন সাজা ঘোষণার পরে আদালত চত্বরেই তাঁরা বললেন, ‘‘এলাকায় খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন আমার মেয়ে কী রকম নিষ্পাপ ছিল। ওর কোনও দোষ ছিল না। শুধু মাত্র সন্দেহের বশে জামাই মেয়েকে খুন করে। ন্যায় বিচার মিলেছে। আদালতকে ধন্যবাদ।’’ দোষী সাব্যস্ত হওয়ার দিনই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরেশবাবু। এ দিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

Bolpur Life term imprisonment murder Tapan Kumar Dey
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy