Advertisement
২১ মে ২০২৪
Visva Bharati University

উপাচার্যের জন্য ‘ক্ষতি’ বিজেপির, রাস্তা-কাণ্ডে চিঠি

বাঙালিজাতি ও দুর্গাপুজো সম্পর্কে সাম্প্রতিক সময়ে উপাচার্যের বিতর্কিত মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘উপাচার্য সমগ্র বাঙালি জাতিকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছেন।

উপাচার্য বিদ্যুত চক্রবর্তী।

উপাচার্য বিদ্যুত চক্রবর্তী। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:৪৮
Share: Save:

আশ্রমের ভিতরের রাস্তা ফেরত চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে দু’বার চিঠি দিয়ে সাড়া না-পাওয়ায় রবিবার রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিয়েছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। এ বার পাল্টা উপাচার্যের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি সহ বিভিন্ন জনকে ই-মেল করলেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের একাংশ। চিঠিতে এ-ও দাবি করা হয়েছে, উপাচার্যের কার্যকলাপের ফলে দল হিসাবে বিজেপি-র ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। এবং লোকসভা ভোটে বাংলায় দলের উপরে এর ‘প্রভাব’ পড়বে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বিশ্বভারতীর উপাচার্যের পদে বসার পর থেকে একের পর এক ‘তুঘলকি’ সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছেন। এর ফলে বোলপুর-শান্তিনিকেতনের সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকা ‘ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়ে চলেছে। চিঠিতে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, বিশ্বভারতীকে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ঘোষণার পরে পরেই উপাসনাগৃহ থেকে কালীসায়র পর্যন্ত রাস্তাটিকে নিয়ে রাজনীতি শুরু করে দিয়েছেন। ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ ভাবে বিতর্ক তৈরি করে পর্যটক এবং টোটোর যাতায়াত বন্ধ করে দিয়ে সাধারণ মানুষের ‘পেটে লাথি’ মারার ব্যবস্থা করছেন উপাচার্য। চিঠি যাঁরা পাঠিয়েছেন, তাঁদের অন্যতম বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুনীল সিংহ, কবিগুরু হস্তশিল্প সমিতির সম্পাদক আমিনুল হুদারা বলেন, “শান্তিনিকেতনের হেরিটেজ স্বীকৃতিতে আমরা সকালেই গর্বিত। কিন্তু, উপাচার্য হেরিটেজের দোহাই দিয়ে নিজের কার্যকালের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য এখন নাটক শুরু করেছেন। একটি শান্ত পর্যটন ক্ষেত্রকে অশান্ত করে নিজের ফায়দা বা মেয়াদ বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছেন।”

বাঙালিজাতি ও দুর্গাপুজো সম্পর্কে সাম্প্রতিক সময়ে উপাচার্যের বিতর্কিত মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘উপাচার্য সমগ্র বাঙালি জাতিকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছেন। সকলে ভুল বুঝছেন যে, এই সমস্ত কিছু তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের প্ররোচনায় করে চলেছেন। উপাচার্যের এই সমস্ত কার্যকলাপের ফলে বিজেপি পার্টির নাম খারাপ হচ্ছে। অবিল তাঁর এই ধরনের কাজকর্ম বন্ধ না-হলে লোকসভা নির্বাচনে সাধারণ ভোটারেরা বিজেপিকে ভোট দিতে দ্বিধাগ্রস্ত হবেন’। এই সমস্ত বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করারও আর্জি জানানো হয়েছে চিঠিতে।

বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া, ‘‘উপাচার্য যা করার নিজেই করছেন। এতে বিজেপির কোথাও কোনও হাত নেই। বিজেপির ইন্ধনেও কিছু হচ্ছে না। ফলে ওঁর কাজে আমাদের দলের বিশেষ ক্ষতি হবে বলে আমার অন্তত মনে হয় না।’’ তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে ক’জন বিজেপিকে সমর্থন করার স্বপ্ন দেখছিলেন, তাঁরাও উপাচার্যের কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজকর্মের জন্য বিজেপি-র থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এর ফল বিজেপি আগামী লোকসভা নির্বাচনে টের পাবে।’’

স্থানীয় বাসিন্দা অরুণ পাল, চন্দন হাজরারা বলেন, “এই উপাচার্য এখানে আসার পর থেকে পৌষমেলা, বসন্ত উৎসব বন্ধ করার মতো একাধিক অনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে গিয়েছেন। এ বার উনি আশ্রমের ভিতরের রাস্তা নিয়ে পড়েছেন। যার প্রতিবাদে আমাদের এই চিঠি।” যদিও এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর কোন প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bidyut Chakraborty
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE