শিক্ষকের ভূমিকায় গ্রামের যুবকেরাই। নিজস্ব চিত্র
শিক্ষকের অভাবে ক্লাস করানোই দায় হচ্ছিল মহম্মদবাজারের পুরাতনগ্রাম পঞ্চায়েতের হেরুকা হাজী সোলেমান উচ্চ বিদ্যালয়ে। স্কুলের শিক্ষক ও পরিচালন সমিতির পক্ষ থেকে এলাকারই কিছু শিক্ষিত যুবকদের ক্লাস করানোর অনুরোধ জানানো হলে বিনা পারিশ্রমিকেই গ্রামের ছেলেমেয়েদের পড়াতে এগিয়ে এলেন স্থানীয় বেশ কয়েকজন যুবক। তাঁরা নিজেদের ফাঁকা সময়ে গ্রামের বিদ্যালয়ে এসে ক্লাস নিচ্ছেন পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত দু'বছর ধরে শিক্ষকের অভাবে বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। উচ্চ-মাধ্যমিক স্তরের অনুমোদন পাওয়ার পরেও শিক্ষকের অভাবে এ বছর চালু করা যায়নি একাদশ শ্রেণির পঠনপাঠন। এই মুহূর্তে বিদ্যালয়ে মাত্র চার জন শিক্ষক। সে কারণে স্কুল চালানোই খুব কষ্টকর হয়ে উঠেছে বলে জানান কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষকও। এই পরিস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রজতশুভ্র মজুমদার ও পরিচালন সমিতির সভাপতি আব্দুল হালিমের অনুরোধে এলাকার যুবককেরাই গ্রামের ছেলেমেয়েদের পাশে দাঁড়াতে বিনা পারিশ্রমিকে বিদ্যালয়ে এসে ক্লাস নিচ্ছেন। স্থানীয় যুবকদের মধ্যে থেকে সেখ জার্মান ও মইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘গ্রামের ছেলেমেয়েদের তাঁদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই পরিচলন সমিতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অনুরোধে আমরা গ্রামের বেশ কয়েকজন মিলে বিদ্যালয়ে গিয়ে ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
পড়ুয়া জাবেদুল ইসলাম, মনিকা দলুই, স্নেহা সুলতানা ও নবী উনেসা খাতুনরা বলছে, ‘‘বহুদিন ধরে আমাদের বিদ্যালয়ে সমস্ত বিষয়ের শিক্ষক না থাকায় ঠিকঠাক ক্লাস হয় না। দু’মাস থেকে গ্রামেরই কয়েকজন দাদা বিদ্যালয়ে এসে আমাদের ক্লাস করাচ্ছে। এতে আমাদেরও খুব ভাল হচ্ছে। আমরা ঠিক করে পড়াশোনা করতে পারছি। আমরাও দাদাদের ধন্যবাদ জানাই।’’ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রজতশুভ্র মজুমদার বললেন, ‘‘সভাপতি সহ পরিচালন সমিতির সদস্যরা গ্রামের শিক্ষিত যোগ্য যুবকদের মাঝে মাঝে ক্লাস নিতে অনুরোধ করেছিলেন। তাঁদের ডাকে সাড়া দিয়ে কিছু শিক্ষিত যুবক এগিয়ে এসেছেন। তাঁদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy